১৯ বছর বয়সেই বাংলাদেশ দলে অভিষেক হয় নাজমুল হোসেন শান্তর। যদিও জাতীয় দলে নিয়মিত হতে পারেননি। বয়সভিত্তিক ক্রিকেট থেকেই তরুণ প্রতিভাবান ক্রিকেটার হিসেবে তাঁর ওপর অনেক প্রত্যাশা ছিল। স্বাভাবিকভাবেই প্রত্যাশার চাপ ভর করার কথা ২১ বছর বয়সী শান্তর কাঁধে। কিন্তু তিনি জানিয়েছেন, প্রত্যাশার চাপ নিয়ে একদমই ভাবেন না। নিজের সহজাত খেলা চালিয়ে যেতে চান বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান।
২০১৭ সালে নিউজিল্যান্ড সফরে টেস্ট অভিষেক হয় শান্তর। এরপর ২টি টেস্ট খেলেছেন তিনি। ব্যাট হাতে নিজেকে মেলে ধরতে না পারায় টেস্ট দলে নিয়মিত হওয়া হয়নি এই বাঁহাতির। টেস্টে ৪ ইনিংসে ব্যাট করা শান্তর রান ৪৮।
২০১৮ সালে ওয়ানডে অভিষেক হয় শান্তর। এশিয়া কাপে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে রঙিন পোশাকে খেলতে নামেন শান্ত। সামর্থ্যের প্রমাণ দিতে না পারায় এক বছর আগে ওয়ানডে অভিষেক হওয়া ব্যাটসম্যান খেলতে পেরেছেন মাত্র ৩টি ম্যাচ, যেখানে তাঁর রান ২০। চলতি বছর ঘরের মাঠে ত্রিদেশীয় সিরিজ দিয়ে টি-টোয়েন্টি দলে ডাক পান তিনি। এখানেও ব্যাট হাতে ব্যর্থ ছিলেন তিনি। দুই ম্যাচ খেলেছেন, করেছেন ১১ রান।
চলমান বঙ্গবন্ধু বিপিএলে খুলনা টাইগার্সের হয়ে খেলছেন শান্ত। ঘরোয়া ক্রিকেটের সবচেয়ে জমজমাট এই টুর্নামেন্টে প্রথম চার ম্যাচের একটিতেও দুই অংকের ঘরে যেতে পারেননি তিনি। শেষ দুই ম্যাচে অবশ্য ৩০ এবং ৪১ রান করেছেন এই বাঁহাতি। ফর্ম খুঁজে পাওয়ার আশায় আছেন শান্ত। তবে এই ব্যর্থতার পেছনে প্রত্যাশার চাপ প্রভাব ফেলছে বলে মনে করেন না তরুণ এই ক্রিকেটার।
শান্তর মতে, ‘আমার কাছে মনে হচ্ছে না চাপ কাজ করছে কিংবা অভিজ্ঞতার ঘাটতি আছে। আজ ভালো হচ্ছে, কাল খারাপ হবে; এটাই ক্রিকেটের নিয়ম। আমি এসব নিয়ে কোনো চিন্তা করছি না। আসলে প্রত্যাশা না থাকা ভালো। তবে এটা থাকবেই। এটা নিয়ে বেশি ঘাটাঘাটি না করে প্রক্রিয়া মেনে খেললেই আমার মনে হয় ভালো করা সম্ভব।’
বয়সভিত্তিক ক্রিকেটের সব পর্যায়ে বাংলাদেশের অন্যতম প্রতিভাবান ক্রিকেটার হিসেবে সকলের নজর কাড়েন শান্ত। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) রাডারে এখনও আছেন তিনি। নিজেকে প্রমাণে বারবার ব্যর্থ হলেও হাল ছাড়ছেন না বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান।
প্রত্যাশা পূরণ নয়, ভালো খেলায় চোখ তাঁর। তাই কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছেন অনুশীলনে। শান্তর বিশ্বাস, নিজেকে একদিন সম্পূর্ণরূপে মেলে ধরতে পারবেন তিনি।
মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) মিরপুরে শান্ত বলেন, ‘ভালো করলে প্রত্যাশা আপনা আপনিই পূরণ হবে। আমি মনে করি সবাই আমার ওপর বিশ্বাস রাখছে। নির্বাচক বলেন, মিডিয়া বলেন, পরিবারের মানুষ তো আছেই। এটা একটা ইতিবাচক দিক। ভালো-খারাপের মাঝে সব সময় পাশে থাকে সবাই। তাদের সেই বিশ্বাস ধরে রাখার জন্য আমারও পারফর্ম করা উচিত। অনুশীলন করছি, প্রক্রিয়া মেনে চলছি। আশা করি, আজ খারাপ হচ্ছে অবশ্যই পরে ভালো হবে।’
প্রথম শ্রেণি এবং লিস্ট ‘এ’ ক্যারিয়ার বেশ সমৃদ্ধ শান্তর ব্যাটিং। ৪০টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচে ৪০.৭৫ গড়ে ২ হাজার ৫২৭ রান করেছেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। যেখানে ৬টি সেঞ্চুরি ও ১৩টি হাফ সেঞ্চুরি রয়েছে তাঁর।
১০০টি লিস্ট ‘এ’ ম্যাচে ৩৮.২৩ গড়ে ৩ হাজার ২১২ রান করেছেন শান্ত। এই ফরম্যাটে ৬ সেঞ্চুরি এবং ১৫টি হাফ সেঞ্চুরি রয়েছে তাঁর নামের পাশে। টি-টোয়েন্টিতে অবশ্য ব্যর্থই বলা চলে বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যানকে। ৪৮ ম্যাচে ১৬.৪৬ গড়ে মাত্র ৬৭৫ রান করেছেন তিনি, যেখানে একটি হাফ সেঞ্চুরি রয়েছে তাঁর।