জাতীয় একাদশ নির্বাচনের সময়কার কথা। ছেলেটার বয়স মাত্র ১২। এই বয়সে একা কখনও বাসা আর স্কুল ছাড়া চিন্তাও করতাম না।ছেলেটার নামটা আমি মনে করতে পারছি না ঠিক (রাকিব হতে পারে)।
আন্টিকে (টাইগার দলের ওয়ানডে অধিনায়ক মাশরাফি মর্তুজার 'মা') জিজ্ঞেস করলাম, গতবার এসে তো ওকে দেখিনি বাড়ীতে!
জবাবে আন্টি বললেন, আর বইলোনা, ছেলেটা পুরান ঢাকা থেকে চলে এসেছে। মা-বাবার ফোন নাম্বারও জানে না যে ওর বাড়ীতে জানাবো ছেলেটা আমাদের কাছে আছে।
পরে ছেলেটার সাথে আমার খাতিরটা ভালোই জমে উঠল। কখনও নাকি মাঠে গিয়ে খেলা দেখেনি অধিনায়কের(মাশরাফির)। তবে অনেক চেষ্টা করেছে দেখা করার। সফল হয়নি।
তাই জিজ্ঞেস করলাম, কিভাবে আসছো? জবাবে ছেলেটা বলে,বাড়ী থেকে আমাকে ৩০০ টাকা দিয়েছে আসার সময়। বাসায় বলেছি, মাশরাফির বাড়ী যাবো।
দীর্ঘ ৬ ঘন্টার জার্নি শেষে নড়াইল। ফেরীতে একটা টাইগার আর একটা বিস্কুট খাওয়া ছাড়া আর কিছুই খায়নি।
রুপগঞ্জ এসে একজনকে বললাম, আমি মাশরাফি ভাইর বাড়ী যাব। পরে ভ্যানে করে বাড়ীর সামনে। রাত তখন ৮ টা। কনকনে ঠান্ডা তো আছেই সাথে না খাওয়া।
আন্টি জানলো, একটা ছেলে এসে বসে আছে বাড়ীর দরজায়। উনি এসে আমাকে নিয়ে গেলেন। খাওয়ালেন, শোয়ার জায়গা করে দিলেন।
এভাবে ছেলেটা থেকে গেল ভোট শেষ হওয়া পর্যন্ত। এর ভেতর দেখাও হলো তার মাশরাফি ভাইয়ের সাথে।
অধিনায়কও তাকে আদর করে বুকে টেনে নেন। মা-বাবাকে চিন্তায় ফেলে এমন কিছু যেন আর না করে কখনও। তাও নাকি বলে দিয়েছেন।
বিদায় বেলায় তার আর যেতে ইচ্ছে হয় না। নড়াইলের টান আর আন্টির আদর তাকে যেতে দেয় না, তবু যেতে হয়। ভালোবাসা এমনই হয় ।