Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৮ শনিবার, মে ২০২৪ | ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

দেশি-বিদেশি কোচে পার্থক্য দেখেন না রাজিন

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৩ জানুয়ারী ২০২০, ১২:২৭ PM আপডেট: ০৩ জানুয়ারী ২০২০, ১২:২৭ PM

bdmorning Image Preview


পারিশ্রমিকে বিস্তর ফারাক থাকলেও কাজের ক্ষেত্রে দেশি-বিদেশি কোচের মধ্যে তেমন পার্থক্য দেখছেন না রাজিন সালেহ। জাতীয় লিগে সিলেট বিভাগের প্রধান কোচের দায়িত্ব পালন করা সাবেক এ ক্রিকেটার বিপিএলে রাজশাহী রয়্যালসের সহকারী কোচের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন। বিদেশি কোচদের সঙ্গে বেতন বৈষম্য কমিয়ে দেশি কোচদের কাজের সুযোগ বাড়ানোরকথাও তিনি জানান। 

বাংলাদেশের অনেক বড় টুর্নামেন্ট বিপিএল। এটি বাংলাদেশ ক্রিকেটকে অনেক বদলে দিয়েছে। এখানে কোচিং করানোর মাঝে একটা চাপের বিষয় আছে। শেখার অনেক বিষয় আছে। দল চাপের মধ্যে থাকলে কীভাবে খেলোয়াড়দের সামলাতে হয় এটি একটি। বড় বড় কোচ আছেন, বড় বড় খেলোয়াড় আছেন। তাদের সাথে থাকলে অনেককিছু শেখা যায়। অনেক বড় শিক্ষণীয় এবং সুযোগের জায়গা বিপিএল। এখান থেকে শিখে যেন বাংলাদেশের ক্রিকেটে কিছু কাজ করতে পারি সেটি আমার লক্ষ্য।

বাংলাদেশের স্থানীয় কোচরা যারা আছেন, অনেকেই সুযোগের অভাবে জাতীয় দলে কাজ করতে পারছেন না। তাদের অবশ্যই সে যোগ্যতাটা আছে। এখান থেকে অভিজ্ঞতা নিয়ে বাংলাদেশের যেকোনো জায়গায় ফিল্ডিং কোচ হিসেবে কাজ করতে চাই। ফিল্ডিংটা আমার কাছে সবসময় প্রিয়ই ছিল। আসলে বাংলাদেশে ব্যাটিং কোচ হিসেবে কাজ করার সুযোগ কম। কারণ বাইরে থেকে অনেক কোচ নিয়ে আসে। ফিল্ডিং কোচ হিসেবে একটা জায়গা থাকে। যদি ওখানে কাজ করার সুযোগ পাই, সেখান থেকে উন্নতি করলে ব্যাটিং কোচ হিসেবে পরে কাজ করতে পারি।

ফিল্ডিংয়ের গুরুত্ব অনেক। আমাদের দল বিপিএলে ১৪টা ক্যাচ মিস করেছে। ক্যাচিং নিয়ে বিভিন্ন ধারণা ও নিজের অভিজ্ঞতা নিয়ে তাদের সঙ্গে কাজ করছি। কীভাবে ফিল্ডিং করলে, কীভাবে বলের লাইনে গেলে একজন খেলোয়াড় ভালো ক্যাচ ধরতে পারে। আসলে এসব নিয়ে খুব ভাবি। যেমন গ্রাউন্ড ফিল্ডিংয়ে কীভাবে স্লাইড, ডাইভ দিতে হয়। কিছু টেকনিক আছে। শিক্ষণীয় কাজ। এই জায়গাটা খুব উপভোগ করি।

সে আমার সঙ্গে দলীয় সব বিষয় শেয়ার করে। আমাদের দ্বিতীয় ম্যাচের পর একদিন বলছিল, আমাকে তোমার ভাবনার কথা জানাবে। তুমি অভিজ্ঞ এবং খেলোয়াড়দের ভালো বুঝবে। ওয়াইসকে বলেছিলাম, আমি তো তোমার কাছে শিখছি। তখন বলল, আমারও তোমার থেকে শেখার অনেককিছু আছে। দুইজন মিলে কাজ করছি রাজশাহী রয়্যালসের হয়ে। সে অনেক ভালো কোচ। কিন্তু আমি বাংলাদেশি কোচ হিসেবে বিদেশি কোচের মধ্যে তেমন পার্থক্য দেখি না।

বিদেশিদের সঙ্গে পারিশ্রমিকে অনেক বেশি ব্যবধান হয়ে যায়। এটা এতটা না হওয়াই উচিত। যোগ্য অনেক কোচই আছেন, যারা কাজ করতে পারছেন না। তাদের বিপিএলে নিয়ে আসা উচিত। তারা কাজ করলে বাংলাদেশ ক্রিকেট লাভবান হবে, খেলোয়াড়রা লাভবান হবে। যখন স্থানীয় ভালো কোচ বিপিএলে আসবেন, তাদের পারিশ্রমিক অবশ্যই ভালো দিতে হবে।

মিডিওকার একটা দলকে উজ্জীবিত করে ভালো ফলাফল বের করে আনাই একজন কোচের বড় চ্যালেঞ্জ। ছোট ছোট ভুল-ত্রুটি কারণে খেলোয়াড়দের পারফরম্যান্সে বড় প্রভাব পড়ে। তাদের বুঝিয়েছি। আমার কথা তারা নিতে পেরেছে। হার-জিতের মধ্য দিয়ে আমরা এগিয়েছি। খারাপ হয়েছে আবার ভালো হয়েছে। আমার লক্ষ্য এইসব জায়গায় কাজ করার। যারা একটু নিচে আছে, পারফর্ম কেনো করতে পারছে না, সমস্যা কী, এসব নিয়ে। সুযোগ পেলে আমি শিখে আরও কিছু তাদের দিতে চাই।

এখন কোচিংয়ে যারা আসছে তারা বাংলাদেশ দলে খেলেছে। এটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। যখন আন্তর্জাতিক বা সর্বোচ্চ পর্যায়ে খেলবেন, অভিজ্ঞতা হবে ভিন্ন। এটা বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য ভালো দিক। কিন্তু এটা উন্নতি করবে তখন, যখন কিনা ক্রিকেট বোর্ড আমাদেরকে সঠিকভাবে মূল্যায়ন করবেন। রাহুল দ্রাবিড়ের একটা কথা বলতে চাই। সে যখন খেলা ছেড়ে দিলো, ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড তার সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি করে ফেলল।

অনূর্ধ্ব-১৯ দলের দায়িত্ব দেয়া হল এবং দলকে বিশ্বকাপও জেতালেন। কারণ তিনি রাহুল দ্রাবিড়, তার নিজের অভিজ্ঞতা তরুণদের সঙ্গে বিনিময় করে গেছেন। আমাদের আফতাব অনেক ভালো কোচ। তার কাছ থেকেও শিখি। আমাদেরকে জুনিয়র লেভেলে দায়িত্ব নেয়ার চ্যালেঞ্জ দেয়া উচিত। এখানেও দেখা যায় সব বিদেশি কোচ। এইচপি, ‘এ’ দল কিংবা ইমার্জিং দলে যারা সাবেক ক্রিকেটার আছে তাদের দায়িত্ব দেয়ার সময় চলে এসেছে। এমন হলে বাংলাদেশের খেলা ভালো হবে এবং কোচিং স্টাফের মান বাড়বে।

Bootstrap Image Preview