Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৭ শুক্রবার, মে ২০২৪ | ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

আইসিসির নতুন নিয়মে আসছে চারদিনের টেস্ট

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ৩১ ডিসেম্বর ২০১৯, ১১:০৯ AM আপডেট: ৩১ ডিসেম্বর ২০১৯, ১১:০৯ AM

bdmorning Image Preview


এবার টেস্ট ক্রিকেটে পরিবর্তন আনার কথা ভাবছে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি)। সাধারণ নিয়মে টেস্ট ক্রিকেট পাঁচ দিনের হলেও তা চার দিনে করার কথা ভাবছে বিশ্ব ক্রিকেটের নির্বাহী সংস্থাটি। সাধারণত প্রথম শ্রেণির ম্যাচ হয় চারদিনের। তবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের অভিভাবক সংস্থা ভাবছে ২০২৩ সাল থেকে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের মাঝেই টেস্ট ম্যাচ খেলা হবে চারদিনের। নতুন নিয়ম বিশ্ব ক্রিকেটের বার্ষিক সূচি প্রণয়নে বাড়তি সময় দেবে মনে করছে আইসিসি। ওয়েবসাইট ক্রিকইনফোতে প্রকাশিত এক রিপোর্টে আজ এ কথা বলা হয়েছে।

তবে প্রাথমিক সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যেই দেখা গেছে ভিন্ন মত। লংগার ভার্সনের ক্রিকেটে এমন পরিবর্তন আনলে, টেস্ট ক্রিকেটের সঙ্গে প্রথম শ্রেণির আর কোনো পার্থক্য থাকবে না বলেই মনে করছেন এ সিদ্ধান্তের বিরোধীরা।

মূলত খুবই ব্যস্ত বাৎসরিক সূচি, ক্রমবর্ধমান ঘরোয়া টি-টোয়েন্টি লিগ, দ্বিপাক্ষিক সিরিজ আয়োজনে ভারতীয় বোর্ডের বাড়তি চাহিদা এবং টেস্ট সিরিজ আয়োজনে খরচের বিষয়গুলো চিন্তা করেই নতুন নিয়মের কথা ভাবছে আইসিসি। চার দিনের টেস্ট ম্যাচ আয়োজনের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হলে ২০২৩ থেকে ২০৩১ পর্যন্ত সময়ে বেশ ভালো সময় বাঁচবে বলেই ধারণা করছে আইসিসি।
যেমন ২০১৫ থেকে ২০২৩ পর্যন্ত আট বছরে পাঁচ দিনের পরিবর্তে বাধ্যতামূলক চারদিনের টেস্ট রাখা হলে অন্তত ৩৩৫ দিন বেঁচে যেত। যা কি না অন্যান্য ইভেন্ট আয়োজনে বাড়তি সময় দিতে পারতো আইসিসিকে। এছাড়া বৃহস্পতি থেকে রোববার পর্যন্ত চারদিনের টেস্ট ম্যাচ হলে এটি বৈশ্বিকভাবেও আরও আবেদন সৃষ্টি করতে পারবে।

এছাড়া ম্যাচের দৈর্ঘ্য চারদিনে নামিয়ে আনা হলে আরও বেশি ৩ থেকে ৫ ম্যাচের টেস্ট সিরিজ দেখা যাবে। কারণ এতে করে আয়োজক বোর্ড ও ব্রডকাস্টারদের পঞ্চম দিনের বাজেট করতে হবে না। ভারতের বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়ার সাম্প্রতিক সময়ে ৪ ম্যাচের টেস্ট সিরিজের জন্যই ২০ দিন বরাদ্দ রাখতে হয়েছে। কিন্তু একই সময়ে চারদিনের টেস্ট হলে ৫টি ম্যাচ খেলা যেতো।

তবে পাঁচদিন থেকে ম্যাচের দৈর্ঘ্য চারদিনে নামানো হলে, দিনে সর্বনিম্ন ৯০ থেকে বাড়িয়ে ৯৮ ওভার করে খেলানোর কথাও ভাবা হচ্ছে। যাতে করে পাঁচদিনের ম্যাচ থেকে মাত্র ৫৮ ওভার হারাবে। গত দেড়-দুই বছরে বেশিরভাগ ম্যাচ চারদিনে শেষ হওয়ার কারণেই মূলত এমন সিদ্ধান্তের যৌক্তিকতা বাড়িয়েছে আরও। ২০১৮ সাল থেকে এখনও পর্যন্ত ৬০ শতাংশের বেশি চারদিন বা তার চেয়ে কম সময়ে শেষ হয়েছে।

অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট বোর্ডের প্রধান নির্বাহী কেভিন রবার্টসের মতে চারদিনের টেস্টের প্রস্তবটি সবার গুরুত্বের সঙ্গে নেয়া উচিত। স্থানীয় গণমাধ্যমে তিনি বলেন, ‘এটা এমন একটা বিষয় যা গুরুত্বের সহিত বিবেচনা করা উচিত। আবেগ দিয়ে চিন্তা করলে হবে না। বিষয়টি নিয়ে সঠিকভাবে চিন্তা করতে হবে। আমাদের দেখতে হবে গত ৫-১০ বছরে টেস্ট ম্যাচের গড় দৈর্ঘ্য কত ছিলো এবং কত ওভার করে খেলা হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের এ বিষয়টাকে সচেতনতার সঙ্গে দেখতে হবে। আগামী ১২ বা ১৮ মাসে আমাদের এ জিনিসটা নিশ্চিত করতে হবে যাতে ২০২৩-২০৩১ ক্রিকেট সূচিটা যথাযথ হয়। আইসিসি’র সকল সদস্য দেশের সঙ্গে বসেই এটি করতে হবে। কেউ বলছে না যে কাজটা সহজ। তবে আমরা সার্বজনীনভাবে এটি করতে চাই এবং এ ব্যাপারে আমরা দৃঢ়প্রত্যয়ী।’

তবে এ বিষয়ে ভিন্ন মত পোষন করেন অস্ট্রেলিয়ার টেস্ট অধিনায়ক টিম পাইন। নিজ মাঠে সম্প্রতি নিউজিল্যান্ডকে চারদিনের ভেতরেই ২৪৭ রানের বড় ব্যবধানে হারানোর পর পাইন বলেন, ‘যদি এমন (চারদিনের টেস্ট) হতো, তাহলে অ্যাশেজে হয়তো কোনো ম্যাচেই ফল পাওয়া যেত না। আমার মনে হয়, সব ম্যাচই পঞ্চম দিনে গিয়েছিল। এটাই টেস্ট ক্রিকেটের বিশেষত্ব। এটা মানসিকভাবে কঠিন, শারীরিকভাবেও কঠিন। চার দিনের প্রথম শ্রেণির ম্যাচের চেয়ে এখানে বেশি পরীক্ষা দিতে হয়। আশা করি, এটাই বহাল থাকবে।’

এদিকে ফেডারেশন অব ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেটার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ফিকা) প্রধান টনি আইরিশ আবার মনে করছেন, টেস্ট ম্যাচের দৈর্ঘ্য চারদিনে নামিয়ে আনা হলে খেলার অনেক সমস্যাই দূরীভূত হবে। একইসঙ্গে বৈশ্বিক সূচিতে তিন ফরম্যাটের ক্রিকেটেরই একটা সামঞ্জস্য আসবে।

তিনি বলেন, ‘চারদিনের টেস্টের ব্যাপারে দুইটি বিষয় আসতে পারে বিবেচনায়। প্রথমত মাঠের খেলা এবং পরে সূচিগত দিক। চারদিনের টেস্ট হলে সূচি করার ক্ষেত্রে চাপ কমবে। আমাদের চেষ্টা থাকবে মাঝে তৈরি হওয়া খালি সময়টায় আরও বেশি ম্যাচ ঢুকিয়ে দেয়া। যা কি না কাঠামোগতভাবে আরও দৃঢ়তা আনবে।’

এখনও বৈশ্বিকভাবে চারদিনের পটস্ট ম্যাচ আলোর মুখ না দেখলেও, স্বল্প পরিসরে ঠিকই শুরু হয়েছে এই চর্চা। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দক্ষিণ আফ্রিকা ও আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ইংল্যান্ড চারদিনের পটস্ট ম্যাচ পখলেছে। আগামী গ্রীষ্মে আফগানিস্তানের বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়ারও চারদিনের টেস্ট ম্যাচ খেলার কথা রয়েছে।

Bootstrap Image Preview