মালয়েশিয়া প্রবাসী এক ব্যক্তি ১৪ বছর পর দেশে ফিরে দেখেন তার স্ত্রী বাড়িতে অন্যকে নিয়ে সংসার করছেন। বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার নয়মাইল এলাকায় ঘটনাটি ঘটে। ওই ঘটনায় প্রবাসী যুবক মাহফুজার রহমান সাবেক স্ত্রী রোজিনা খাতুন এবং তার বর্তমান স্বামী ও শ্বশুরসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে ৫ এপ্রিল প্রতারণাসহ অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে আদালতে মামলা দায়ের করেছেন।
জেলার শাজাহানপুরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যজিস্ট্রেট ও আমলি আদালতে দায়ের করা ওই মামলায় ৪২ লাখ টাকায় নির্মিত বাড়ি, নগদ টাকা এবং স্বর্ণালংকারসহ দেড় কোটি টাকার আত্মসাতের অভিযোগ করা হয়েছে।
প্রতারিত শাজাহানপুর উপজেলার শৈলধুকড়ি গ্রামের মৃহ হবিবর রহমানের ছেলে মাহফুজার রহমান জানান, ২০০০ সালে তিনি যখন উচ্চ মাধ্যমিকের ছাত্র ছিলেন তখন তার সঙ্গে পাশের ধুনট উপজেলার বেড়ের বাড়ি গ্রামের মৃত মনছুর আলীর কন্যা রোজিনা খাতুনের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ২০০৪ সালে তারা পালিয়ে বিয়ে করেন। এরপর ২০০৮ সালে তিনি স্ত্রীকে শাজাহানপুর উপজেলার নয়মাইল এলাকায় স্ত্রীর বড় ভাইয়ের বাড়ির পাশে একটি ভাড়া বাড়িতে রেখে মালয়েশিয়া চলে যান।
সেখান থেকে তিনি স্ত্রীর সঙ্গে প্রতিনিয়ত যোগাযোগ রাখতেন এবং টাকাও পাঠাতেন। ওই টাকা থেকে মাহফুজার রহমান তার স্ত্রীকে নয়মাইল এলাকায় দু’জনের নামে জায়গা কিনে বাড়ি করতে বলেন। কিন্তু রোজিনা খাতুন নয়মাইল এলাকায় তার একক নামে জায়গা কিনে ৪২ লাখ টাকায় বাড়ি নির্মাণ করেন। এছাড়া মাহফুজার রহমানের পৈতৃক মূত্রে পাওয়া ৭ বিঘা জমি লিজ প্রদানের টাকাও নিজের কাছে রাখেন।
করোনা সংক্রমণের পর ২০২১ সালের আগস্ট মাসে মাহফুজার রহমান মালয়েশিয়া পুলিশের হাতে আটক হন। প্রায় সাড়ে ৫ মাস আটক থাকার পর মালয়েশিয়া কর্তৃপক্ষ চলতি বছর ২০ জানুয়ারি তাকে দেশে পাঠিয়ে দেন। এরপর বাড়িতে এসে তিনি জানতে পারেন তার স্ত্রী রোজিনা খাতুন তাকে তালাক দিয়ে রেজাউল করিম নামে তার (রোজিনা খাতুনের) এক মামাতো ভাইকে বিয়ে করেছেন। বিয়ের পর তারা মাহফুজার রহমানের টাকায় নির্মিত বাড়িতেই স্বামী-স্ত্রী হিসেবে বসবাস করছেন।
মাহফুজার রহমান আরও জানান, যখন আমি মালয়েশিয়ায় আটক ছিলাম তখন রোজিনা খাতুন আমার পৈতৃক বাড়ির ঠিকানায় তালাকের নোটিশ পাঠায়। যা আমার জানা ছিল না। ঘর-বাড়ি ও ১৫ ভরি স্বর্ণালংকারসহ সব সম্পদ রোজিনা খাতুন আত্মসাৎ করে আমাকে পথের ফকির করেছে। আমার নিজের বাড়িতে তার সঙ্গে কথা বলতে গিয়েছিলাম কিন্তু সে দরজা খোলেনি, কথাও বলেনি।
মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট উৎপল কুমার বাগচী জানান, আদালত মামলটি তদন্তের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) নির্দেশ দিয়েছেন। আগামী ১৮ মে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।