বলিউডে এক সময়ে বহু আলোচনার বিষয় ছিল শহিদ-কারিনা কাপুরের প্রেম। একে অপরের প্রতি ভালোবাসার কথা কোনোদিনই লুকানোর চেষ্টা করেননি তার দুইজন। একে অপরের বোঝাপড়া ছিলো বেশ ভালো। এমনকি শহিদের জন্য মাছ-মাংস ছেড়ে নিরামিষাশীও হয়ে গিয়েছিলেন কারিনা কাপুর। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে শহিদ কাপুর তার প্রক্তন প্রেমিকার বিষয় মুখ খুলেছেন।
শহিদ বলেছেন, ‘আমি যদি বলি আমার কিছুই যায় আসেনি, তাহলে মিথ্যা বলা হবে। আদপে আমিও তো মানুষ। কারিনাকে সাইফের সঙ্গে দেখে বা এ ধরনের খবরে আমারও কষ্ট হয়েছিল। যদিও তখন আমার কিছু করার ছিল না। আমাকে বাস্তবের সঙ্গে মানিয়ে নিতেই হতো। এর মুখোমুখি হতেই হতো। আমি শুধুই ভালো স্মৃতিগুলোই মনে রাখতে পারি এবং ভালো থাকার চেষ্টা করতে পারি।’
অন্য এক সাক্ষাৎকারে শহিদ জানিয়েছিলেন, ‘টানা একটি মাস ভীষণ কষ্টের মধ্যে কেটেছিল। আমার কাছে মাত্র দুটো অপশন ছিল। এসব থেকে বেরিয়ে আসা আর মিডিয়ার সামনে এসব নিয়ে কোনো কথা না বলা। এ সমস্ত প্রশ্নের উত্তর দিতে আমার যে কষ্ট হতো সেটা এড়িয়ে চলার জন্য শুধুমাত্র সিনেমার (জাব উই মেট) প্রচারে মন দেওয়া। যখন এটা ঘটেছিল তার তিন সপ্তাহের মধ্যে ছবিটি মুক্তি পাওয়ার কথা ছিল।’
বিচ্ছেদের অনেক পরে গিয়ে কারিনাকে সঙ্গে ‘উড়তা পাঞ্জাব’ ছবিতে অভিনয় করা প্রসঙ্গে শহিদ বলেন, ‘সবকিছু ভুলে এই ছবিতে কাজ করা আমার প্রয়োজন ছিল বলে আমার মনে হয়েছে। কারণ ছবিতে ( উড়তা পাঞ্জাব) আমার চরিত্রটা ভীষণই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। আবারও কারিনার সঙ্গে কাজ করা ভীষণই অস্বস্তিকর ছিল। তবে অভিনয়টা আমার পেশা সেটা মেনে নিয়েই কাজ করি।’
আরও একটি সাক্ষাৎকারে শহিদ বলেন, ‘আমাদের সম্পর্ক ভাঙার বিষয়টা প্রকাশ্যে বলার কিছু নয়, এটা একান্তই দুইজন ব্যক্তির বিষয়। সকলের এটা নিয়ে অনেক প্রশ্ন থাকলেও কিছু করার নেই।’
শহিদের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়ে কারিনা এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘আমাদের সম্পর্কটা হয়ত সেই পর্যায়ে ছিল না। এটা এক্কেবারেই আমার ক্যারিয়ারের শুরু দিকের ঘটনা। একটা ছবিতে একসঙ্গে কাজ করতে গিয়ে আমরা একে অপরের প্রেমে পড়ি। আমরা বন্ধুর থেকে হয়ত একটু বেশিই এগিয়েছিলাম সেটা ঠিক। এক্কেবারেই অল্পবয়সের সম্পর্কের মতোই ছিল আমাদের সম্পর্কটা। একসঙ্গে সিনেমা দেখা, বেড়াতে যাওয়া এইরকমই। আমরা লুকিয়ে লুকিয়ে একে অপরে সঙ্গে সিনেমা দেখতে যেতাম। শহিদের সঙ্গে থাকতে আমার বেশ ভালোই লাগতো।’
শহিদের সঙ্গে সম্পর্ক ভাঙার পর কাজ করাটা কি অস্বস্তিকর ছিল? এ প্রশ্নের উত্তরে কারিনা বলেছিলেন, ‘এধরনের একটা অস্বস্তিকর মানসিক অবস্থার মধ্যে শুটিং করা সত্যিই কঠিন। তবে কাজটা কাজই, সেখানে ব্যক্তিগত জীবনের প্রভাব পড়া উচিত নয়। কাজের মধ্যে এ নিয়ে কোনো কথা কেউই বলতেন না।’
এ দুই তারকার বিচ্ছেদের পেছনে নেটিজেনদের অনেকেই দাঁড় করিয়েছেন নানা কারণ। কেউ বলেন, শহিদের সহ-অভিনেত্রী অমৃতা রাওয়ের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা মেনে নিতে পারেননি কারিনা। অন্যদিকে কারিনার অত্যাধিক ধরে-বেঁধে রাখা পছন্দ হচ্ছিল না শহিদের।
বিয়ের কথাবার্তাও চলছিল তাদের। তবে হঠাৎই সেই সম্পর্ক ভেঙে যায়। 'জব উই মেট'-এর শ্যুটিং চলাকালীনই একে অপরের জীবন থেকে সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তবে তাদের মধ্যে ঠিক কী নিয়ে সমস্যা তৈরি হয়েছিল তা নিয়ে দুজনে কোনো কথা বলেনি।
যদিও শহিদ-কারিনার সম্পর্ক ভাঙার পেছনে শোনা যায় অনেক কথাই। কেউ বলেন, সহ-অভিনেত্রী অমৃতা রাওয়ের সঙ্গে শহিদের ঘনিষ্ঠতা মেনে নিতে পারেননি কারিনা।
অন্যদিকে কারিনার অত্যাধিক ধরে-বেঁধে রাখা পছন্দ হচ্ছিল না শহিদের। শহিদ-কারিনার এই দূরত্বের ফাঁকে ঢুকে পড়েছিলেন সাইফ আলি খান। এই রকমই তাদের সম্পর্ক ভাঙার কারণ হিসেবে শোনা যায় অনেক কথাই।
সে যাই হোক সম্পর্ক ভাঙার পর ‘প্রাক্তন’ কারিনাকে সাইফের সঙ্গে দেখে কি কষ্ট পেয়েছিলেন শহিদ?
বর্তমানে শহিদ ও কারিনা দুজনেই তাদের ব্যক্তিগত জীবনে অনেক সুখী। শহিদ জমিয়ে সংসার করছেন মীরা রাজপুতের সঙ্গে ফুটফুটে দুই সন্তানকে নিয়ে। আবার কারিনা সাইফ ও তাদের একমাত্র সন্তান তৈমুরকে নিয়ে ভীষণ খুশি।