Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৯ সোমবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১৬ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

প্রধানমন্ত্রিত্ব হারিয়ে ইমরান খান এখন কোথায়?

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১০ এপ্রিল ২০২২, ১২:৫৫ PM
আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০২২, ১২:৫৫ PM

bdmorning Image Preview
ছবি সংগৃহীত


পাকিস্তানের রাজনীতিতে নানা ঘটনা ঘটছিল কয়েক দিন ধরে; নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছিল ইমরান খানের প্রধানমন্ত্রিত্ব না টেকার ব্যাপারটিও। এবার সেই ঘোষণাই এলো আনুষ্ঠানিকভাবে; আর প্রধানমন্ত্রী নন তিনি।

শনিবার মধ্যরাতে পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ জাতীয় পরিষদে বিরোধীদের উত্থাপন করা অনাস্থা ভোটে হেরে গেছেন ইমরান। পদ হারানোর ভোটাভুটি যখন হচ্ছিল; তখন সেখানে উপস্থিত ছিলেন না তারকা ক্রিকেটার থেকে রাজনীতিক বনে যাওয়া এই নেতা।

ভোটের আগে প্রতিক্রিয়া দিলেও ভোট শেষ হওয়ার পর এখনও কোনো মন্তব্য আসেনি সদ্য সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে। জনসমক্ষে তো নয়ই, কোনো মাধ্যমেই তাকে দেখা যাচ্ছে না কয়েক ঘণ্টা ধরে।

ইমরান খান তাহলে কোথায়- এ প্রশ্নের উত্তরও এখন মেলা ভার। পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যমগুলো এ নিয়ে তেমন কোনো তথ্য জানায়নি। বক্তব্য আসেনি ইমরানের দলের পক্ষ থেকেও।

ভারতের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম পিটিআইয়ের বরাতে ট্রিবিউন ইন্ডিয়া বলছে, ভোটাভুটি শুরুর কিছু সময় আগেই প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন ছেড়েছেন ইমরান খান।

ইমরানের দল তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) একজন জ্যেষ্ঠ নেতা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

পিটিআইয়ের সিনেটর ফয়সাল জাভেদ খান এক টুইট বার্তায় বলেন, সর্বশেষ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ইমরান খানকে দেখলাম। মাথানত না করে সম্মানের সঙ্গে তিনি বেরিয়ে গেলেন।

এক্সপ্রেস ট্রিবিউন জানিয়েছে, ভোটের কয়েক মিনিট আগে সরকারি কার্যালয় থেকে ইসলামাবাদে তার বাসভবন বানি গালার উদ্দেশে রওনা হন ইমরান খান।

এর পরের আরও কোনো খবর দিতে পারেনি সংবাদমাধ্যমগুলো।

বিভিন্ন নাটকীয়তার পর অবশেষে শনিবার মধ্যরাতের অনাস্থা ভোটে ৬৯ বছর বয়সী ইমরান খানের প্রধানমন্ত্রিত্বের অবসান ঘটেছে। এখন নতুন প্রধানমন্ত্রী খুঁজছে দেশটি।

স্থানীয় সময় রাত সাড়ে ১২টার দিকে ভারপ্রাপ্ত স্পিকার আয়াজ সাদিকের সভাপতিত্বে অনাস্থা প্রস্তাবের ওপর ভোটাভুটি হয়। এতে ৩৪২ আইন প্রণেতার মধ্যে অন্তত ১৭২ জনের সমর্থন প্রয়োজন ছিল বিরোধীদের। ১৭৪ ভোট পেয়ে তাদের অনাস্থা প্রস্তাব পাস হয়।

ইমরান খান প্রধানমন্ত্রী থাকবেন কি না, সে প্রশ্ন ধরে সরগরম ছিল পাকিস্তান। তার প্রধানমন্ত্রিত্ব যে টিকছে না, সেটা আগেই অনেকটা নিশ্চিত হওয়া গিয়েছিল। তবে আদালতের রায়ে সমীকরণ বদলে পাকিস্তানের রাজনীতির মোড় ঘুরতে শুরু করে অন্যদিকে।

নানা অভিযোগ এনে অনাস্থা ভোট চাইছিলেন ইমরান বিরোধীরা। গত ২৮ মার্চ বিরোধী পক্ষ জাতীয় পরিষদে এ নিয়ে অনাস্থা প্রস্তাব উত্থাপন করে। তবে তা খারিজ করে দেন ডেপুটি স্পিকার কাশিম সুরি।

এর পরই প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের পরামর্শে পাকিস্তানের পার্লামেন্ট ভেঙে দেন প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি। প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ের পক্ষ থেকে এই ঘোষণা দিয়ে বলা হয়, নিয়ম অনুযায়ী আগামী তিন মাসের মধ্যে এই দেশে নতুন করে আবার নির্বাচন হবে।

পরে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধানমন্ত্রীর নাম চেয়ে ইমরান খান ও বিরোধীদলীয় নেতাকে চিঠি পাঠান প্রেসিডেন্ট। চলতে থাকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের প্রক্রিয়াও।

এরই মধ্যে সুপ্রিম কোর্ট সরকার নিয়ে অবস্থান গ্রহণ করে। পার্লামেন্ট ভেঙে দিয়ে অন্তর্বর্তী নির্বাচনের যে আদেশ ছিল শুক্রবার তা খারিজ করে দেয় আদালত। পার্লামেন্ট চালুর পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাবের ওপর ভোটাভুটির নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। পরে শনিবার হয় নির্বাচন।

নতুন প্রধানমন্ত্রী বেছে নিতে আগামী সোমবার জাতীয় পারিষদে আবার ভোটাভুটি হবে। এ জন্য রোববার বেলা ১১টার মধ্যে প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র জমা দিতে হবে।

দুর্নীতির দায়ে নওয়াজ শরিফ অভিশংসিত হওয়ার পর ২০১৮ সালে চার দলের সমর্থন নিয়ে ক্ষমতায় আসেন ইমরান। ২২তম প্রধানমন্ত্রী হন তিনি। তার সরকারের মেয়াদ ছিল ২০২৩ সালের আগস্ট পর্যন্ত। তবে অন্য সব সরকারের মতোই মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই দেশটির ক্ষমতা ছাড়তে হলো তাকে।

Bootstrap Image Preview