এক মহাদেশ থেকে আরেক মহাদেশে আঘাত হানতে সক্ষম নিষিদ্ধ আন্তমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্রের (আইসিবিএম) পরীক্ষা চালিয়েছে উত্তর কোরিয়া। ২০১৭ সালের পর এই প্রথম উত্তর কোরিয়া এ ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালাল বলে দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপান জানিয়েছে। খবর বিবিসি ও এএফপির।
বৃহস্পতিবার ছোড়া ওই ক্ষেপণাস্ত্র ৭১ মিনিট ধরে উড়ে এসে ১১শ কিলোমিটার দূরে জাপানের জলসীমায় পড়েছে বলে জাপানের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
২০২২ সালের প্রথম মাস না পেরুতেই পিয়ংইয়ংয়ের কয়েক দফায় ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার খবর সামনে এসেছে। চলতি বছরের শুরু থেকে প্রায় ডজনখানেক বার ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়েছে উত্তর কোরিয়া। এমনকি চলতি বছরের ৫ ও ১০ই জানুয়ারির পরীক্ষার পর পিয়ংইয়ং দাবি করেছিল যে তারা সফলভাবে হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছে।
এর আগে ২০১৭ সালের অগাস্টেও জাপানীদের ঘুম ভেঙে ছিলো সাইরেনের শব্দে। ওই সময়ও কোনো ধরণের সতর্ক বার্তা ছাড়াই উত্তর কোরিয়া জাপানের উপর দিয়ে প্রশান্ত মহাসাগরে আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুঁড়েছিল। এই বিষয়টিকে এখনো চরম ধৃষ্টতা হিসেবে বিবেচনা করে জাপানিরা।
এদিকে, উত্তর কোরিয়া দ্রুত একটি কার্যকর পারমাণবিক প্রতিরোধকের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বলেই ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের সাম্প্রতিক ঘটনাগুলো ইঙ্গিত দিচ্ছে।
এ ব্যাপারে দক্ষিণ কোরিয়ার সাবেক একজন নৌ কমান্ডার প্রফেসর কিম ডং ইয়ুপ বলেন, আমার দৃষ্টিকোণ থেকে এটাই হওয়ার কথা ছিলো। আমি অবাক হচ্ছি, কারণ আমরা উত্তর কোরিয়ার প্রযুক্তিকে ছোট করে দেখেছি। আসলে উত্তর কোরিয়া তার সামরিক সক্ষমতা আমাদের ধারণার চেয়ে বেশি গতিতে এগিয়ে নিচ্ছে।
উত্তর কোরিয়া এমন প্রযুক্তি তৈরি করছে, যা ওই অঞ্চল জুড়ে যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানের ব্যয়বহুল ও জটিল ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষাকে হারিয়ে দিতে পারে।
তবে দক্ষিণ কোরিয়া কিংবা যুক্তরাষ্ট্রের দিক থেকে হামলা হলে প্রচলিত ক্ষেপণাস্ত্র সক্ষমতাকে কার্যকর প্রতিরোধকে রূপান্তর থেকে বহু দূরেই আছে উত্তর কোরিয়া। যদিও দেশ দুটি বারবার বলেছে উত্তর কোরিয়া বর্তমান শাসকগোষ্ঠীকে উৎখাতের বা হামলার কোনো লক্ষ্য তাদের নেই।
তার পরও ছোট এই দেশটি কেন তার জিডিপির এক চতুর্থাংশ সামরিক খাতে ব্যয় করে চলেছে সেটিই মূল প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এ ব্যাপারে, বিশ্লেষক অঙ্কিত পান্ডা বলেন, যে এমনও হতে পারে যে উত্তর কোরিয়া মনে করে যে নিজেকে রক্ষার জন্য পর্যাপ্ত অস্ত্র এখনো তাদের নেই।
তিনি বলেন, কিম জং উন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। আমার মনে হয় তিনি চীন বা রাশিয়াসহ কাউকেই বিশ্বাস করেন না। সে কারণেই হয়তো মনে করছেন যে তার সক্ষমতাকে অনেক বাড়াতে হবে।