সোমবার মোহামেডান ও আবাহনীর ফুটবল ম্যাচ দেখতে ক্রীড়াকেন্দ্র বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে ছুটে গিয়েছিলেন দেশের ক্রিকেটের উজ্জ্বল নক্ষত্র আমিনুল ইসলাম বুলবুল। বিপিএল চলছে। শেরে বাংলায় জমজমাট ক্রিকেট উৎসব। দুপুর গড়িয়ে বিকেল নামতেই ক্রিকেট অনুরাগীর কলতানে মুখর ‘হোম অফ ক্রিকেট’। অথচ দেশের ক্রিকেটের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরিয়ানের ক্রিকেটের প্রতি কোনো আগ্রহই নেই!
শুরুতে বড় তারকায় ঘাটতি থাকলেও ক্যারিবীয় তারকা আন্দ্রে রাসেলের সাথে অস্ট্রেলিয়ান অলরাউন্ডার শেন ওয়াটসনও এসে যোগ দিয়েছেন। পর পর দুই ম্যাচে দলের হয়ে কিছু করতে না পারলেও ওয়াটসনের অন্তর্ভুক্তির পর সোমবার সিলেট থান্ডারকে হারিয়ে দ্বিতীয় জয়ের মুখ দেখেছে রংপুর রেঞ্জার্স।
এদিকে খুলনা টাইগার্সের হয়ে খেলতে আজ (মঙ্গলবার) আসছেন দক্ষিণ আফ্রিকান ব্যাটসম্যান হাশিম আমলা। ৬ জানুয়ারি আসছেন ক্যারিবীয় বিধ্বংসী ওপেনার ক্রিস গেইলও।
মোদ্দা কথা, বিপিএল ধীরে ধীরে জমে উঠছে। হয়তো সামনের দিনগুলোয় ব্যাট ও বলের লড়াই আরও জমবে। এমন এক আসর হচ্ছে দেশে। অথচ এক সপ্তাহ হলো মাতৃভূমিতে ফিরলেও ক্রিকেটের অবিসংবাদিত উইলোবাজ প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরিয়ান ও ১৯৯৯ সালে বিশ্বকাপ ক্রিকেটে দেশকে প্রথম নেতৃত্ব দেয়া আমিনুল ইসলাম বুলবুল এখনো বিপিএল দেখতে মাঠে যাননি। হবেন এমন নিশ্চয়তাও নেই।
সোমবার রাতে এই প্রতিবেদকের সাথে আলাপে আমিনুল ইসলাম বুলবুল জানিয়ে দিয়েছেন শেরে বাংলা না যাবার সম্ভাবনাই বেশি। বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক বলেন, ‘দেশে এসেছি আজ (সোমবার) নিয়ে ৭ দিন। প্রথমে যশোরে শ্বশুর বাড়ি গিয়েছিলাম। সেখান থেকে ফিরেছি। কিন্তু বিপিএল দেখতে যাইনি।’ খানিক আক্ষেপ ভরা কন্ঠে পরের সংলাপ, ‘নাহ ভাই, এখন আর মন টানে না! যেতে ইচ্ছে করে না। হয়তো যাবও না এবার। ৭ জানুয়ারি ফিরে যাব।’
কেন যাবেন না? ক্রিকেটের সুপারস্টার, ফুটবলও খেলেছেন। তারপরও ক্রিকেটারই তার বড় পরিচয়। কেন তিনি বিপিএল দেখতে যাবেন না? এমন প্রশ্নের জবাবে আমিনুল ইসলাম বুলবুলের কন্ঠ ধরে আসলো। বললেন, ‘নাহ ভাই, ক্রিকেট মাঠে যেতে চাই না। দেশের ক্রিকেটের আমি কে? কেনইবা যাব? যেতে ইচ্ছে করে না। হয়তো যাবও না।’
আজ মঙ্গলবার ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে মিরপুরের দিকে না তাকালে এবার বিপিএল দেখাও হবে না বুলবুলের। কারণ, আজ ইংরেজী বছরের শেষ দিনই ঢাকা পর্বের এবারের শেষ ম্যাচ। তারপর খেলা সিলেটে, ২-৪ জানুয়ারি। আবার ঢাকায় বিপিএল যেদিন ফিরবে, সেই ৭ জানুয়ারি বুলবুল ফিরে যাবেন অস্ট্রেলিয়ায়।
বোঝাই গেল, দেশের ক্রিকেটে বরাবরের উপেক্ষা ও অবমূল্যায়নই তার মনঃকষ্টের কারণ। অস্ট্রেলিয়ায় সম্মান পাচ্ছেন আর দেশে পাচ্ছেন না, কষ্ট তো লাগারই কথা!