মধ্যপ্রাচ্যের যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ সিরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে কুর্দি গেরিলাদের বিরুদ্ধে তুর্কি সেনাদের ব্যাপক অভিযানের পর অঞ্চলটিতে এক থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। যা নিয়ে তুরস্কের এই কর্মসূচিকে আগ্রাসনের তকমা দিয়ে চলমান যুদ্ধবিরতি স্থায়ী হলেই কেবল তাদের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হবে। বুধবার (২৩ অক্টোবর) রাতে হোয়াইট হাউজে দেওয়া এক বক্তৃতায় এমনটাই দাবি করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
ব্রিটিশ গণমাধ্যম ‘বিবিসি নিউজ’ জানায়, রাশিয়া তুরস্কের সঙ্গে সিরীয় সীমান্তে যুদ্ধবিরতি কার্যকরের জন্য সৈন্য পাঠাতে সম্মত হওয়ার পরপরই নিজের এই সিদ্ধান্তের কথা জানালেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।
উপস্থিত সাংবাদিকদের সামনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেছেন, ‘তুর্কি কর্তৃপক্ষ এরই মধ্যে ওয়াশিংটনকে জানিয়েছে যে তারা খুব শিগগিরই সিরিয়ায় যুদ্ধবিরতি ‘স্থায়ী’ করতে যাচ্ছে। সেক্ষেত্রে যদি তারা অভিযান বন্ধ রেখে তাদের এই চুক্তিকে স্থায়ী করে; তাহলেই কেবল তাদের ওপর থেকে আরোপিত সব ধরনের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হবে।’
তুরস্কের এসব অভিযানকে আগ্রাসনের তকমা দিয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আরও বলেন, ‘দীর্ঘ দিনের এই রক্তমাখা বালুতে এখন অন্য কেউ যুদ্ধ করুক, তা আমরা চাই না। আমাদের স্বার্থবিরোধী এমন কিছু না ঘটালে তাদের (তুরস্ক) ওপর থেকে আরোপিত নিষেধাজ্ঞাগুলো তুলে নেওয়া হবে।’
এর আগে শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে ‘অপারেশন পিস স্প্রিং’ নামে চলমান তুর্কি সেনাদের অভিযান বন্ধে টানা পাঁচদিনের অস্ত্রবিরতির মার্কিন প্রস্তাবে সম্মত হয় তুরস্ক। যদিও এরই মধ্যে সেই সময়ও শেষ হয়ে গেছে। তবে নির্ধারিত সেই সময়ের মধ্যে মার্কিন সমর্থিত কুর্দিবাহিনীর সঙ্গে তুর্কি সেনাদের বেশ কয়েকবার বিচ্ছিন্ন সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
যদিও গত ৯ অক্টোবর অঞ্চলটিতে অবস্থানরত প্রায় হাজার খানেক মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মূলত এর পরপরই সিরিয়ায় কুর্দি নিধনের নামে অভিযান শুরু করে তুরস্ক। যদিও তখন সেসব সেনাদের নিজ দেশে ফিরিয়ে নেওয়ার আশ্বাসও দিয়েছিলেন ট্রাম্প। তবে পরবর্তী সময়ে মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো নতুন সিদ্ধান্তে সেনাদের এখন আর যুক্তরাষ্ট্রে নয়; বরং তাদের ইরাক মিশনে পাঠানো হবে বলে জানানো হয়।
জাতিসংঘের তথ্য মতে, সিরিয়ায় তুরস্কের সেনা অভিযান চালানোর পর সেখানে কয়েক ডজন বেসামরিক নিহত হয়েছে। তাছাড়া সেখানে অবস্থানরত কমপক্ষে ১ লাখ ৬০ হাজার লোক এরই মধ্যে অঞ্চলটি ছেড়ে পালিয়েছে।