Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৮ রবিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

কাশ্মীরিদের সঙ্গে আছে সব পাকিস্তানি

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ৩১ আগস্ট ২০১৯, ০৯:৩৩ PM
আপডেট: ৩১ আগস্ট ২০১৯, ০৯:৩৩ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত


কাশ্মীরিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে একদিকে দেশব্যাপী কর্মসূচি পালন করেছে পাকিস্তান, অন্যদিকে একই সময়ে ভারতশাসিত কাশ্মীরে নতুন করে কারফিউ জারি করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। গতকাল শুক্রবার দুপুরে এসব ঘটনার মধ্য দিয়ে উত্তপ্ত সময় পার করেছে ভারত ও পাকিস্তান। এর মধ্যে কাশ্মীর ইস্যুতে নিউ ইয়র্ক টাইমসে প্রকাশিত হয়েছে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের লেখা নিবন্ধ।

ভারত সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিলের মাধ্যমে গত ৫ আগস্ট কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা খর্ব করে সেখানে কেন্দ্রের শাসন জারি করে। এর বিরুদ্ধে কাশ্মীরিদের বিক্ষোভ ঠেকাতে সেখানে বাড়তি সেনা মোতায়েন করা হয়, সব ধরনের যোগাযোগব্যবস্থা বন্ধ করে দেওয়া হয়, চলে ব্যাপক ধরপাকড়।

ভারতের এ পদক্ষেপের বিরুদ্ধে এরই মধ্যে আন্তর্জাতিক অঙ্গনের দ্বারস্থ হয়েছে ক্ষুব্ধ পাকিস্তান। তবে বিশ্বনেতাদের সবাই একবাক্যে বিষয়টিকে ভারত-পাকিস্তানের দ্বিপক্ষীয় বিষয় অ্যাখ্যা দিয়েছে এবং এ দুই প্রতিবেশীর আলোচনার মাধ্যমে সংকট সমাধানের ওপর জোর দিয়েছে।

কাশ্মীর ইস্যুতে আন্তর্জাতিক অঙ্গনের এ অবস্থানের পরিপ্রেক্ষিতে জাতীয় পর্যায়ে ভারতবিরোধী কর্মসূচি পালন করছে পাকিস্তান। এর অংশ হিসেবে গতকাল দুপুর ১২টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত ‘কাশ্মীর সময়’ পালন করেছে গোটা পাকিস্তান। এ কর্মসূচির অংশ হিসেবে পাকিস্তানের জাতীয় সংগীত সম্প্রচার করা হয়, পাশাপাশি সম্প্রচার করা হয় কাশ্মীরের জাতীয় সংগীত, বাজানো হয় সাইরেন। এ ছাড়া রাজধানী ইসলামাবাদের সব সড়কে লাল বাতি জ্বালিয়ে দিয়ে কয়েক মিনিটের জন্য বন্ধ রাখা হয় যান চলাচল। এক মিনিটের জন্য বন্ধ রাখা হয় দেশের সব ট্রেন এবং রেলওয়ের সব কর্মী কর্মসূচিতে অংশ নেন। দেশের বিভিন্ন জায়গায় মিছিল হয়েছে। ‘কাশ্মীর সময়’ কর্মসূচিতে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন সিন্ধু, বালুচিস্তান, খাইবার পাখতুনখোয়া ও পাঞ্জাব প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীরা।

‘কাশ্মীর সময়’ কর্মসূচির উল্লেখযোগ্য অংশ হিসেবে গতকাল পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সামনে সমাবেশের আয়োজন করা হয়। সেখানে দেওয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী ইমরান বলেন, ‘আজ গোটা পাকিস্তান, যেখানে যেখানে পাকিস্তানি আছে, হোক তারা শিক্ষার্থী, দোকানদার কিংবা শ্রমিক, আজ আমরা সবাই কাশ্মীরিদের সঙ্গে আছি। আমাদের কাশ্মীরিরা বিপর্যয়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। প্রায় ৮০ লাখ কাশ্মীরি চার সপ্তাহ ধরে কারফিউতে বন্দি হয়ে আছে।’ তার অভিযোগ, কট্টর হিন্দু জাতীয়তাবাদী সংগঠন রাষ্ট্রীয় সমাজসেবক সংঘের (আরএসএস) মতাদর্শ গোটা ভারতকে গ্রাস করেছে, ‘ঠিক যেমনটা নািস পার্টি জার্মানি দখল করে নিয়েছিল।’

আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রতি শুক্রবার ‘কাশ্মীর সময়’ পালন করবে পাকিস্তান। ওই সময় তিনি জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে ভাষণ দেবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। পরিষদে কাশ্মীর ইস্যু উত্থাপনের অঙ্গীকার তিনি করেছেন। 

গতকাল শুধু ভাষণে নয়, নিউ ইয়র্ক টাইমসে প্রকাশিত নিবন্ধেও কাশ্মীর ইস্যুতে পাকিস্তানের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন ইমরান। ‘দ্য ওয়ার্ল্ড কান্ট ইগনোর কাশ্মীর। উই আর ইন ডেঞ্জার’ শিরোনামের ওই নিবন্ধে তিনি লিখেছেন, ‘আলোচনা শুধু তখনই শুরু হবে, যখন ভারত কাশ্মীরকে অবৈধভাবে একীভূতকরণ থেকে সরে আসবে, কারফিউ ও নিষেধাজ্ঞা তুলে নেবে এবং সেনা সদস্যদের ব্যারাকে ফিরিয়ে নেবে।’

পাকিস্তানিরা গতকাল যখন ‘কাশ্মীর সময়’ নিয়ে ব্যস্ত, তখন ভারতশাসিত কাশ্মীরের শ্রীনগরসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় নতুন করে কারফিউ জারি করা হয়। জুমার নামাজের আগেই তা কার্যকর করা হয়। জনসমাবেশে ভাষণ দান, বাইরে ঘোরাফেরার ব্যাপারে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। ভারত সরকার যেখানে দাবি করছে, কাশ্মীরের জনজীবন স্বাভাবিক করতে সরকার কড়াকড়ি শিথিল করে নানা পদক্ষেপ নিচ্ছে, সেখানে আবার কারফিউ জারির ঘোষণায় সরকারের অভিপ্রায় নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন পর্যবেক্ষকরা। সূত্র : ডন, টাইমস অব ইন্ডিয়া, পিটিআই।

Bootstrap Image Preview