আসামের চূড়ান্ত নাগরিক তালিকা (এনআরসি) প্রকাশ করা হয়েছে।
শনিবার (৩০ আগস্ট) স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় অনলাইনে ও এনআরসি সেবাকেন্দ্রে এই তালিকা প্রকাশ করা হয়। তালিকায় নাগরিকের স্বীকৃতি পেয়েছেন ৩ কোটি ১১ লাখ ২১ হাজার ৪ জন বাসিন্দা। আর রাষ্ট্রহীন হয়েছেন ১৯ লাখ ৬ হাজার ৬৫৭ বাঙালি।
এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৯৫১ সালের পর পরিচালিত প্রথম আদমশুমারির মধ্য দিয়ে ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে প্রথম ধাপে ১ কোটি ৯০ লাখ অধিবাসীকে নাগরিক তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছিল। দ্বিতীয় দফায় ২০১৮ সালের জুনে নিবন্ধনের জন্য আবেদন করা ৩ কোটি ২৯ লাখ অধিবাসীর মধ্যে ২ কোটি ৮৯ লাখকে সংশোধিত নাগরিকত্ব তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করা হয়।
নিবন্ধন-সংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাতে সেসময় রয়টার্স জানিয়েছিল, রাজ্যের ৪০ লাখ, ৭ হাজার ৭০৭ মানুষ তালিকায় স্থান পায়নি। এদের অধিকাংশই বাংলা ভাষাভাষী কিংবা মুসলমান ও হিন্দু ধর্মাবলম্বী।
এ বছর জুনে তালিকায় আরেক দফা সংশোধনী আনা হয়। ২০১৮ সালে সংশোধিত তালিকায় স্থান পাওয়াদের মধ্যে থেকে ১ লাখেরও বেশি মানুষকে বহিষ্কার তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করা হয়। সব মিলে বাদ পড়া ৪০ লাখেরও বেশি মানুষ চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের দিনটিকে ঘিরে উদ্বিগ্ন ছিলেন।
বাদ পড়াদের মধ্যে ৩৬ লাখ মানুষ নাগরিক তালিকায় স্থান পাওয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন। আর খসড়া তালিকায় স্থান পাওয়া ২ কোটি ৮৯ লাখ মানুষের মধ্যে ২ লাখের স্থান পাওয়া নিয়ে আপত্তি উঠেছিল।
ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, চূড়ান্ত এনআরসি তালিকা থেকে বাদ পড়াদের বিদেশি ঘোষণা করা যাবে না সব আইনী প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত। বাদ পড়া ব্যক্তি ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালে আবেদন করতে পারবেন এবং আবেদনের সময়সীমা ৬০ দিন থেকে বাড়িয়ে ১২০ দিন করা হয়েছে।
গতকাল শুক্রবার আসামের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সানোয়াল জানিয়েছেন, এনআরসি’র চূড়ান্ত তালিকা থেকে বাদ পড়া বাসিন্দারা ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালে আপিল করতে পারবেন। তিনি বলেন, আসাম সরকার বাদ পড়াদের দেখভাল করবে এবং যাতে করে করে অপ্রয়োজনীয় হয়রানির শিকার হতে না হয় তা নিশ্চিত করবে।
এদিকে চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ ঘিরে রাজ্য জুড়ে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে প্রশাসন। গুয়াহাটিসহ বিভিন্ন স্পর্শকাতর স্থানে ১৪৪ ধারা জারির পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সরকারের পাঠানো আধাসামরিক বাহিনীর অতিরিক্ত ৫১ কোম্পানি সেনা মোতায়েন করেছে আসাম সরকার। মোতায়েন করা হয়েছে ৬০ হাজার পুলিশ সদস্য এবং কেন্দ্র থেকে আসামে পাঠানো হয়েছে আরও ২০ হাজার আধাসামরিক বাহিনীর সদস্য।