ভারতের ঝাড়খণ্ডে ইসলাম ধর্ম নিয়ে কটূক্তি করায় হিন্দু ধর্মাবলম্বী এক কলেজ ছাত্রীকে ৫টি কোরআন-শরীফ কিনে একটি ইসলামিক সংগঠনে গিয়ে তা বিলি করতে নির্দেশ দিয়েছে রাজ্যের একটি আদালত।
অভিযুক্ত কলেজ ছাত্রী রিচা প্যাটেলের একটি ফেসবুক পোস্ট মুসলিমদের ধর্মানুভূতিতে আঘাত হেনেছে -এমন অভিযোগ পেয়ে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। পরে জামিনের শর্ত হিসাবে কোরআন বিলি করার নির্দেশ দেয় আদালত।
দণ্ডপ্রাপ্ত প্যাটেল বলেছেন, একটা ফেসবুক পোস্টের জন্য অন্য ধর্মের একটি সংগঠনে গিয়ে কোরআন বিলি করার নির্দেশে আমার খুবই অস্বস্তি হচ্ছে। আদালতের নির্দেশকে সম্মান জানিয়েও বলতে বাধ্য হচ্ছি,এটা তো আমার মৌলিক অধিকার হরণ করা হচ্ছে!আমি উচ্চতর আদালতে যাওয়ার কথা ভাবছি।
তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে আরও বলেন,ফেসবুকে আমি আমার নিজের ধর্ম নিয়ে কিছু লিখতে পারব না? এ কোথাকার নিয়ম? তার জন্য আমার মতো একজন কলেজ ছাত্রীকে গ্রেফতার করা হবে?
তার দাবি, যে ফেসবুক পোস্ট শেয়ার করার জন্য পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেছিল, সেটা তিনি ‘নরেন্দ্র মোদি ফ্যানস ক্লাব’ নামের একটা গ্রুপ থেকে কপি করেছিলেন। সে পোস্টে ইসলাম-বিরোধী কোনও কথাই ছিল না বলেও তার দাবি।
মুসলমানদের সামাজিক সংগঠন ‘আঞ্জুমান ইসলামিয়া’র প্রধান মনসুর খলিফা থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিলেন।
তার অভিযোগ, রিচা প্যাটেলের ফেসবুক আর হোয়াটসঅ্যাপ পোস্টের ফলে ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের অনুভূতিতে আঘাত লেগেছে। এর ফলে সম্প্রীতির পরিবেশ নষ্ট হতে পারে বলেও তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন।
অভিযোগ পেয়ে ১২ই জুলাই সন্ধ্যায় রিচা প্যাটেলকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে পাঠায় পুলিশ। গ্রেফতারের খবর ছড়িয়ে পড়তেই হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলো ঝাড়খণ্ডের রাজধানী রাঁচি সহ নানা এলাকায় বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে।
ওদিকে আদালতে জামিনের আবেদন জানানো হয়।
রাঁচি সিভিল আদালতে জামিনের শর্ত হিসাবে বিচারক জানান যে রিচাকে ৫টি কোরআন কিনে আঞ্জুমান কমিটি আর গ্রন্থাগারে বিলি করতে হবে, আর সেই প্রাপ্তি স্বীকারের রসিদ আদালতে জমা দিতে হবে।
আঞ্জুমান ইসলামিয়ার প্রধান খলিফা জানিয়েছেন যে, আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী এখনও তিনি পাঁচটি কপি কোরান পাননি রিচার কাছ থেকে।
তবে তার কথায়, পুলিশে অভিযোগ দায়ের করার পরে রিচা প্যাটেলের পরিবার আর সমাজের মান্যগণ্যরা তাকে অনুরোধ করেন যে মেয়েটির বয়স মাত্র ১৯ বছর, তাই ওর ভবিষ্যতের কথা ভেবে যেন বিষয়টি মিটিয়ে নেন। তারপরেই রিচা প্যাটেলের জামিনের আর বিরোধিতা করেননি।