নরসিংদীতে কৃষকদের জন্য সরকারিভাবে বেশকিছু সেবা ও সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা থাকলেও অধিকাংশ সময়ই দেখা যায় যে, নানা ধরনের দুর্নীতি বা অনিয়মের কারণে এসব সেবা কৃষকরা ঠিকমতো পায় না। তাই এ বিষয়ে কৃষকদের মাঝে বিভিন্ন ধরনের প্রশ্ন জাগে। কৃষি কর্মকর্তা আদৌ চাষিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন কি না তা নিয়েই সংকট তৈরী হচ্ছে কৃষকদের মধ্যে।
নিম্নমানের বীজের কারণে কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হলে সে বিষয়ে ক্ষতিপূরণ পাওয়ার সরকারি ব্যবস্থা থাকলেও কতজন সুফল পাচ্ছে তারও হিসাব নেই মাঠ পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তার কাছে।
শুধু তাই নয় এই জেলায় বিগত সময় ধরে কৃষি অধিদপ্তরগুলো নানা অনিয়মকে নিয়মে পরিণত করে ও বিভিন্ন ভাউচারের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকার বাণিজ্য করছে বলে অভিযোগ কৃষকদের।
রায়পুরার পলাশতলী ইউনিয়নের কৃষক মোঃ শাহিন মিয়া অভিযোগ করে বলেন, লোক দেখানো পরামর্শ ও মোবাইল ফোনে ছবি তুলে নিয়েই দায়িত্ব শেষ হয়ে যায় মাঠ পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তাদের। কেবল তাই নয় বিনামূল্যে বীজ বিতরণের নামে ও ক্ষেতে বিশ মিশানোর মেশিনগুলো বরাদ্দের টাকা আত্মসাৎ করার কথাও বলেন কৃষকরা।
নিম্নমানের বীজের কারণে কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হলে কে নিবে এর দায়— এ নিয়ে প্রশ্ন কৃষকদের। প্রাকৃতিক দুর্যোগে ফসলের ক্ষতি হলে সরকারি কোনো দায়-দায়িত্ব আছে কি না তা নিয়ে সংকট তৈরী হচ্ছে প্রকৃত কৃষকদের মাঝে। এমনকি ভেজাল মেশানো সার ও ভেজাল কীটনাশক বিক্রেতাদের বিরুদ্ধে অভিযান না চালানোয় ক্ষোভ প্রকাষ করেন কৃষকরা।
জানা যায়, নিয়ম না থাকলেও অত্র অফিসে সাসপেনশন স্টাফ ও ফিল্ড স্টাফ দিয়ে বিভিন্ন বিল-ভাউচারে ভুয়া স্বাক্ষরের মাধ্যমে সরকারি অর্থ উত্তোলন করা হয়।
সরকারিভাবে কৃষকদের ট্রেনিং দেওয়ার কথা থাকলেও তা না করে এই অর্থের টাকা আত্মসাৎ করারও অভিযোগ উঠেছে এই জেলার কৃষি অফিসের বিরুদ্ধে। এই জেলার অধিকাংশ হতদরিদ্র কৃষক কৃষি ঋণ বরাদ্দ থাকা স্বত্বেও পাচ্ছে না ঋণ।
এ বিষয়ে জেলা কৃষি সমপ্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক এর কাছে জানতে চাইলে তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।
এ দিকে কৃষি বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, কিছু অসাধু কৃষি কর্মকর্তারা এই দফতরের সুনাম-খ্যাতি নষ্ট করে মোটা অঙ্কের বাণিজ্য করছে। তাই সরকার এখনি এই এসমস্ত কর্মকর্তাদের লাগাম টেনে ধরা উচিত বলে মনে করেন।