সুনামগঞ্জে হাওরাঞ্চলের আধাপাকা ধান কাটতে শুরু করেছেন কৃষকরা। একই সঙ্গে তারা ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধ পাহারাও দিচ্ছেন। এখন পর্যন্ত ৬২ হাজার ৩১৪ হেক্টর জমির ফসল কাটা হয়েছে বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ।
মঙ্গলবার পর্যন্ত জেলার ১৭টি ছোট-বড় হাওরে পানি প্রবেশ করায় ক্ষতির মুখে পড়েছেন কৃষকরা। সর্বশেষ রোববার তাহিরপুর ও ধর্মপাশার বাঁধ ভেঙে হাওরে পানি প্রবেশ করে।
কৃষি বিভাগ বলছে, এখন পর্যন্ত পাঁচ হাজার ৫১০ হেক্টর ফসল ডুবেছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ১৯ হাজার কৃষক। কিন্তু বেসরকারি হিসাবে ক্ষতির পরিমাণ বহুগুণ বেশি।
সরেজমিনে দেখা যায়, প্রতিটি হাওরেই ধান কাটা শুরু হয়েছে। তবে পাহাড়ি ঢলের ভয়ে হাওরে কৃষকরা আধাপাকা ধান কাটছেন। উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানিতে ধান তলিয়ে যায়। সে ধান কৃষকরা কোমর পানিতে নেমে কাটাচ্ছেন।
সালাম মিয়া নামে স্থানীয় এক কৃষক বলেন, পানিতে কষ্টের ফসল তলিয়ে গেছে। এখন পানিতে নেমেই ফসল কাটছি।
করচার হাওরের কৃষাণী রাণী বেগম জাগো নিউজকে বলেন, সকাল থেকে হাওরের বাঁধের পাশে মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে ধান শুকানোর কাজ করছি। বাঁধ পাহারা দিচ্ছি।
একই হাওরের কৃষক হদিস মিয়া বলেন, বাঁধ ভেঙে হাওরে পানি ঢুকছে। তলিয়ে যাচ্ছে বোরো ধান। সেজন্য উঁচু জমির পাকা ধান রেখে নিচু জমির আধাপাকা ধান আগে কাটছি।
সুনামগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিমল চন্দ্র সোম জাগো নিউজকে বলেন,
হাওরে ইতোমধ্যে ৬২ হাজার ৩১৪ হেক্টর জমির বোরো ধান কর্তন হয়েছে। আশা করি বড় কোনো দুর্যোগ না আসলে কৃষকরা ধান ঘরে তুলতে পারবেন।
সুনামগঞ্জ স্থানীয় সরকার শাখার উপ-পরিচালক জাকির হোসেন বলেন, নদীতে পানির যে চাপ সেটা কোনো বাঁধের পক্ষে সহ্য করা সম্ভব নয়। তারপরও আমরা বাঁধ রক্ষায় চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
এবার জেলার ১৫০ ছোট-বড় হাওরে দুই লাখ ২২ হাজার হেক্টর জমি চাষাবাদ করা হয়েছে। ৫৩৭ কিলোমিটার ফসলরক্ষা বাঁধের জন্য ১২১ কোটি ৪৯ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে।