Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৩ শুক্রবার, মে ২০২৪ | ২০ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

বিশ্বব্যাপী নারী-পুরুষ মজুরি বৈষম্য ২০ শতাংশ

নারী ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৮ এপ্রিল ২০১৯, ০৮:৪৬ PM
আপডেট: ২৮ এপ্রিল ২০১৯, ০৮:৪৬ PM

bdmorning Image Preview


কর্মক্ষেত্রে নারী-পুরুষ মজুরি বৈষম্য বাড়ছে। বিশ্বব্যাপী নারীদের গড় মজুরি পুরুষের চেয়ে ২০ শতাংশ কম। এমনকি অনেক দেশে নির্বাহী পর্যায়ে কর্মরত নারীরা তাদের পুরুষ সহকর্মীদের তুলনায় অর্ধেক মজুরি পান।

আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। এতে বিভিন্ন দেশের শ্রমিকের বেতনের হার এবং পরিবারের আয় ও ভোক্তার ক্রয় সক্ষমতার পরিবর্তনশীল চিত্র তুলে ধরা হয়। প্রতিবেদনে ৭০টি দেশের তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে দেখানো হয় যে বিশ্বব্যাপী প্রায় আশি শতাংশ কর্মীর বেতনের ক্ষেত্রে নারী ও পুরুষের মধ্যে ব্যবধান রয়ে গেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাধারণভাবে পুরুষরা নারীদের চেয়ে গড়ে কুড়ি শতাংশ বেশি মজুরি পাচ্ছেন। এই ব্যবধান সবচেয়ে বেশি উচ্চআয়ের দেশগুলোতে উচ্চ বেতনের চাকরিগুলোতে এবং নিুআয়ের দেশগুলোতে সবচেয়ে কম বেতনের চাকরিতে।

এ প্রসঙ্গে আইএলওর মহাসচিব গাই রাইডার বলেন, সামাজিক অন্যায্যতার প্রমাণ হল নারী-পুরুষের মজুরি পরিশোধের ব্যবধান। যদিও সাম্প্রতিক সময়ে এই ব্যবধান কিছুটা কমে আসছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রায় সবগুলো দেশেই মজুরি পরিশোধে লিঙ্গ বৈষম্য রয়েছে। ঘণ্টাভিত্তিকের চেয়ে এ বৈষম্য মাসিক মজুরির ক্ষেত্রে বেশি। এ প্রবণতা নারী-পুরুষের কর্মঘণ্টায় বৈষম্যের প্রতিফলন বলা হয়েছে পর্যবেক্ষণে। ৭২টি দেশের গড় হিসাবে দেখা যায় ১৪ শতাংশ নারী কর্মী এবং ৭ শতাংশ পুরুষ কর্মী খণ্ডকালীন শ্রমে নিয়োজিত থাকেন।

আইএলওর মহাপরিচালক গাই রাইডার বলেন, ১০০ বছর আগে আর্ন্তজাতিক শ্রম সংস্থা প্রতিষ্ঠার সময়েই সমমূল্যের কাজের জন্য সমমজুরির ধারণার বিষয়টি সংস্থার গঠনতন্ত্রে স্থান পেয়েছিল।

তিনি বলেন, এই সমীক্ষার তথ্য সমমূল্যের কাজের জন্য সমমজুরির নীতির একেবারে বিপরীতে। সুতরাং, সম্ভবত কর্মজগতে এটিই হচ্ছে সবচেয়ে বড় একক অবিচার। এ বিষয়ে ২০৩০ সালের মধ্যে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে বিশ্ব সম্প্রদায় অঙ্গীকারবদ্ধ এবং আমরা আশা করি এই প্রতিবেদনে বিষয়টি তুলে ধরার মাধ্যমে আমরা পরিস্থিতি বদলাতে ভূমিকা রাখতে সক্ষম হব।

এদিকে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বব্যাপী মজুরি প্রবৃদ্ধির গতি উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পেয়েছে- যা এক দশকের মধ্যে সর্বনিু অবস্থানে ঠেকেছে। এতে করে বিশ্বব্যাপী চরম বৈষম্য বৃদ্ধি ও ভোগ হ্রাসের আশঙ্কা বেড়েছে। সামগ্রিকভাবে ২০০৮ সালের বিশ্ব মন্দার পর মজুরি প্রবৃদ্ধির গতি হ্রাস পেয়েছে। ২০১৭ সালে মজুরি প্রবৃদ্ধি কমে দাঁড়িয়েছে ১ দশমিক ৮ শতাংশে, যা ২০১৬ সালে ছিল ২ দশমিক ৪ শতাংশ। ২০১২ সালে এ হার ছিল ২ দশমিক ৫ শতাংশ।

মজুরি প্রবৃদ্ধি হ্রাসের এ নাটকীয় হারের পেছনে উন্নত দেশগুলোর প্রবৃদ্ধির শ্লথ গতিই অনেকাংশে দায়ী। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উদীয়মান ও জি-২০ সদস্য দেশগুলোতে ২০১৬ সালে মজুরি প্রবৃদ্ধি ছিল ৪ দশমিক ৯ শতাংশ, যা ২০১৭ সালে কমে ৪ দশমিক ৩ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। উন্নয়নশীল দেশগুলোতে গত বছরে মজুরি বেড়েছে গড়ে চার শতাংশ হারে। তবে উন্নত দেশগুলোতে এই বৃদ্ধির হার মাত্র শূন্য দশমিক ৪ শতাংশ।

১৩৬টি দেশের গত কুড়ি বছরের মজুরির তথ্য সমীক্ষার ভিত্তিতে আইএলও বলছে, উদীয়মান অর্থনীতিগুলোতে মজুরি উন্নত দেশগুলোর চেয়ে তিনগুণ পর্যন্ত বেড়েছে। এই সময়ে ধনী দেশগুলোতে মজুরি বৃদ্ধির হার ছিল প্রায় ৯ শতাংশ।

আইএলওর পরিচালক এ পরিসংখ্যানকে অত্যন্ত উদ্বেগজনক বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, উন্নত দেশগুলোতে মজুরি প্রবৃদ্ধি কমার পাশাপাশি মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি এবং কর্মসংস্থানও কমেছে। তিনি বলেন, প্রাথমিক পরিসংখ্যানের অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে চলতি বছরও মজুরি প্রবৃদ্ধিতে শ্লথ গতি বজায় থাকবে।

Bootstrap Image Preview