নওগাঁর মহাদেবপুরে অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগ এনে শিউলী বালা (২৭) নামে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর এক বিধবা নারীকে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করা হয়েছে। পা ধরে অনুনয় বিনয় ও বহু কান্নাকাটি করার পরও অমানুসিক নির্যাতন থেকে রক্ষা পায়নি ওই বিধবা নারী। গবাদি পশুর মতো হাত-পা বেঁধে সারা শরীরে নির্মম নির্যাতন চালানো হয়। যা ১৪'শ বছর আগের আরবের আইয়ামে জাহেলিয়াতকেও হার মানিয়েছে। এ ঘটনায় পুরো এলাকায় তোলপাড় চলছে।
শিউলী বালা উপজেলা সদরের বালুকাপাড়া গ্রামের মৃত অনাথের স্ত্রী। গত ২০ মার্চ সকাল ৯টায় উপজেলার বালুকাপাড়া এলাকার রাব্বী চাউলকলে এ নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। নির্যাতনের শিকার শিউলী বর্তমানে নওগাঁ সদর হাসপাতালের বিছানায় অসহনীয় যন্ত্রনায় ছটফট করছে।
জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছে আদিবাসী নেতা দিপঙ্কর লাকড়াসহ স্থানীয়রা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, স্বামীর মৃত্যুর পর একমাত্র ছেলে সন্তান নিয়ে উপজেলার বালুকাপাড়া গ্রামে বসবাস করেন শিউলী বালা। সংসার চালাতে মানুষের বাড়ি বাড়ি গরুর দুধ বিক্রি করেন। একই গ্রামের ৫৫ বছর বয়সী সায়ফুল ইসলামের সাথে অনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে- এমন অভিযোগ এনে গত ২০ মার্চ সকাল ৯টায় দুধ কেনার কথা বলে স্থানীয় প্রভাবশালী রাব্বানীর কাজের ছেলে ছায়দুল কৌশলে তাকে রাব্বানীর চাউল কল চাতালে নিয়ে যায়। সেখানে থাকা সায়ফুলের ছেলে রাজু এবং তার নিকট আত্মীয় প্রভাবশালী রাব্বানী ও নাছিমা ওই বিধবা নারীর সাড়ি খুলে হাত-পা বেঁধে সারা শরীরে অসহনীয় মাত্রায় নির্যাতন চালায়। এর এক পর্যায়ে অজ্ঞান হয়ে যায় শিউলী বালা।
মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করা হলেও প্রভাবশালী রাব্বানীর ভয়ে তাকে রক্ষা করতে কেউ এগিয়ে যায়নি এবং প্রতিবাদ করতে সাহস পায়নি। এ যেন আরেক নব্য জাহেলিয়াত।
খবর পেয়ে নির্যাতনের শিকার ওই বিধবা নারীর স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। পরে শিউলী বালার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় নওগাঁ সদর হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
মহাদেবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাজ্জাদ হোসেন বলেন, এ ব্যাপারে এখনো কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে অবশ্যই আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।