নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চ শহরে দুই মসজিদে বন্দুকধারীর হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৫০ জনে দাঁড়িয়েছে। সর্বশেষ একজনের মৃতদেহ আল নুর মসজিদের মধ্যে পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন নিউজিল্যান্ড পুলিশ কমিশনার মাইক বুশ।
এখনো আরো ৩৬ জন ক্রাইস্টচার্চ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁদের মধ্যে ১২ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এর মধ্যে এক শিশুকে গুরুতর অবস্থায় অকল্যান্ডের শিশু হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এত বড় একটি ধ্বংসযজ্ঞের পর আহতদের চিকিৎসায় হাসপাতালের কর্মকর্তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ক্রাইস্টচার্চ হাসপাতালের প্রধান সার্জন গ্রেগ রবার্টসন।
এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধান সার্জন বলেন, ‘আমরা সবাই নিজের মতো করেই এ ব্যাপারটার সঙ্গে লড়ছি। এ ধরনের পরিবেশ আমাদের এখানে কখনোই প্রত্যাশিত ছিল না। গুলিতে আহত মানুষ আমরা দেখেছি, কিন্তু একদিনে ৫০ জন গুলিবিদ্ধ মানুষ আমরা কখনো দেখিনি।’
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার জুমার নামাজের সময় কালো কাপড় ও হেলমেট পরা এক বন্দুকধারী ক্রাইস্টচার্চ শহরে হ্যাগিল পার্ক এলাকায় আল নুর মসজিদে ঢুকে এলোপাতাড়ি গুলি চালাতে শুরু করে। এতে এখন পর্যন্ত প্রায় ৫০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
এ ঘটনায় অনলাইনে সরাসরি হামলার ভিডিওচিত্র সম্প্রচারকারী ওই বন্দুকধারীর নাম ব্রেন্টন ট্যারান্ট। জন্মসূত্রে সে অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক। সে দেশটির উত্তরাঞ্চলের গ্রাফটন শহরের বাসিন্দা। হামলার আগে অনলাইনে পোস্ট করা ৭৩ পৃষ্ঠার এক ইশতেহারে সে হামলার কারণ বর্ণনা করেছে।
সেখানে ব্রেন্টন নিজেকে একজন সাধারণ শ্বেতাঙ্গ হিসেবে পরিচয় দেয়। মূলত শ্বেতাঙ্গদের ভূখণ্ড কখনোই অনুপ্রবেশকারীদের হবে না, এটা বুঝিয়ে দিতেই ওই হামলা চালানো হয় বলে ইশতেহারে উল্লেখ করা হয়েছে।
এরই মধ্যে ব্রেন্টনকে রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। আদালত ব্রেন্টন ট্যারান্টের জামিনবিহীন রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এতে আগামী ৫ এপ্রিল পর্যন্ত পুলিশ ব্রেন্টনকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে। ওই দিন তাঁকে সাউথ আইল্যান্ড সিটি হাইকোর্টে তোলা হবে।
নিউজিল্যান্ডের পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এ হামলার ঘটনায় আরো দুজন তাদের হাতে আটক রয়েছে। যদিও এদের বিরুদ্ধে কোনো অপরাধের তথ্য নেই।