Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০২ বৃহস্পতিবার, মে ২০২৪ | ১৮ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

হামলার সময় বন্দুক কেড়ে নেয়ার গল্প শোনালেন সেই তরুণ আবদুল

আন্তর্জাতিক ডেস্ক-
প্রকাশিত: ১৬ মার্চ ২০১৯, ১০:১৪ PM
আপডেট: ১৬ মার্চ ২০১৯, ১০:১৪ PM

bdmorning Image Preview


নিউজিল্যান্ডের দুটি মসজিদে খ্রিষ্টান জঙ্গির বন্দুক হামলায় ৪৯ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছে আরো ৪৮ জন। হামলার ঘটনা ঘটেছে দেশটির ক্রাইস্টচার্চ শহরের দুটি মসজিদে। আল নুর মসজিদে হামলায় নিহত হয়েছেন ৪১ জন। আর লিনউডের ইসলামিক সেন্টার মসজিদে সাতজন। ইসলামিক সেন্টার মসজিদে হামলাকারীর কাছ থেকে এক তরুণ বন্দুক কেড়ে নেয়ায় সেখানে বড় রকমের কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।

লিনউড মসজিদে হামলাকারীর অস্ত্র কেড়ে নিয়ে অনেকের প্রাণ বাঁচানো সেই তরুণের নাম আবদুল আজিজ। তার বয়স ৪৮ বছর। মসজিদে হামলার সময় হামলাকারীর কাছ থেকে বন্দুক কেড়ে নিয়ে তিনি অনেকের প্রাণ বাঁচিয়েছেন। শুক্রবার তার পরিচয় জানা না গেলেও এক প্রত্যক্ষদর্শীর বরাতে তার অস্ত্র কেড়ে নেয়ার গল্প জেনে যায় বিশ্ববাসী।

শনিবার মার্কিন সংবাদমাংধ্যম স্কাই নিউজ তার একটি সাক্ষাৎকার প্রকাশ করেছে। সাক্ষাৎকারে আবদুল আজিজ বলেন, ‘শুক্রবার মসজিদে জুমার নামাজ চলার সময় আমি গোলাগুলির শব্দ শুনতে পাই। আমি ছিলাম লিনউড ইসলামিক সেন্টারে পাশেই। গুলির শব্দ শোনার পর দৌঁড়ে সেখানে যাই। গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গায় হামলাকারীর সঙ্গে দেখা হয় আমার।’

তিনি বলেন, তার চার সন্তান তাকে বাইরে যেতে দেখে বাধা দেয়। তারা চিৎকার শুরু করে ‘দয়া করে ভেতরে আসো।’ কিন্তু তিনি সন্তানদের বলেন, ‘তোমরা ভেতরে যাও আমি ঠিক আছি।’ তারপর মসজিদের কাছে যেতেই একটি শটগান কুড়িয়ে পান।

তিনি ভাবেন, হয়তো হত্যাকারী এটি ব্যবহার করার পর ফেলে দিয়েছে। এমন সময় তিনি দেখেন, হামলাকারী রাস্তায় রাখা গাড়ির দিকে যাচ্ছেন। আজিজের মনে হয়, গাড়িতে রাখা ফুল লোড বন্দুক নেয়ার জন্যই তিনি সেখানে যাচ্ছিলেন।

আজিজ বলেন, ‘আমি হামলাকারীকে দেখে চিৎকার করতে শুরু করি এদিকে আসো, আমি এখানে, আমি এখানে। এভাবে বলে তার মনযোগ আমার দিকে আকৃষ্ট করার চেষ্টা করছিলাম। আমি প্রাণপণে চেষ্টা করছিলাম যেন সে মসজিদের ভেতরে যেতে না পারে।’

আজিজ আরও বলেন, ‘আমার হাতে ছিল একটি শটগান। তারপর আমি দেখলাম সে তার হাতে থাকা বন্দুকটি নিচে রেখে দিয়ে পালানোর জন্য দৌঁড় শুরু করলো। কিন্তু আমি তাকে ধরে ফেললাম।’

কিন্তু আজিজের হাতে যে শটগানটি ছিল সেটিতে কোনো বুলেট ছিল না। আর তাই সেই সুযোগে হামলাকারী গাড়িতে গিয়ে বসে সাথে সাথে জানালা বন্ধ করে দেয়। আজিজ তার হাতে থাকা অস্ত্রটি হামলাকারীর গাড়ির দিকে ছুড়ে মারলে সেটি গিয়ে জানালায় ধাক্কা খায়।

হামলাকারী যখন গাড়ির জানালা বন্ধ করে দেয় ঠিক তখন আজিজ তার গাড়ি লক্ষ্য করে ছুড়ে মারে। তাতে হামলাকারী ভয় পেয়ে যায়। কিন্তু সামনে ট্রাফিক সিগনাল না পাওয়ায় গাড়ি সামনে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হচ্ছিল না। হামলাকারী তখন গাড়ি থেকে বের হয়ে পুনরায় দৌঁড়ে পালিয়ে যায়।

তিনি সুযোগ বুঝে বন্দুকধারীর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েন এবং অস্ত্রটি কেড়ে নেন। ওই সাহসী তরুণ বন্দুকধারীর দিকে অস্ত্রটি তাক করার চেষ্টা করেন কিন্তু তিনি ট্রিগার খুঁজে পাচ্ছিলেন না। এরপর তিনি বন্দুকধারীকে ধরার জন্য তাঁর পেছন পেছন দৌড় দেন। কিন্তু বাইরে একটি গাড়িতে কয়েকজন অপেক্ষমাণ ছিল। ওই গাড়িতে করে পালিয়ে যান হামলাকারী।

তবে শুক্রবার মাজহার উদ্দিন নামের এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ‘তিনি (আজিজ) সুযোগ বুঝে বন্দুকধারীর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে অস্ত্রটি কেড়ে নেন। তিনি বন্দুকধারীর দিকে অস্ত্রটি তাক করার চেষ্টা করেন কিন্তু ট্রিগার খুঁজে পাচ্ছিলেন না। পরে বন্দুকধারীকে ধরার জন্য তার পেছন পেছন দৌড় দেন। কিন্তু বাইরে একটি গাড়িতে কয়েকজন অপেক্ষমাণ ছিল। ওই গাড়িতে করে পালিয়ে যান হামলাকারী।’

Bootstrap Image Preview