Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০১ বুধবার, মে ২০২৪ | ১৮ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

নির্বাচন বাতিল করে পুনরায় ভোটগ্রহণের দাবি করেছে সাদা দলের শিক্ষকরা

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১১ মার্চ ২০১৯, ১০:৪২ PM
আপডেট: ১১ মার্চ ২০১৯, ১০:৪২ PM

bdmorning Image Preview


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনে অনিয়ম ও জালিয়াতির অভিযোগ এনে এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্বদ্যিালয়ের সাদা দল সমর্থক শিক্ষকরা। একই সঙ্গে নির্বাচন বাতিল ও পুনঃতফসিল ঘোষণার মাধ্যমে নতুন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন তারা।

সোমবার সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এই দাবি জানানো হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, ''দীর্ঘ ২৮ বছর পর আজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র-সংসদ-ডাকসু ও ১৮টি হলের সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলো। ভোটের আগের রাতে একটি সংগঠনের প্রার্থীদের পক্ষে ভোট দিয়ে বস্তা ও ব্যালট বাক্স ভর্তি করে রাখার মতো নির্লজ্জ জালিয়াতি ও নানা গুরুতর অনিয়মের মাধ্যমে ডাকসু নির্বাচনকে কলঙ্কিত করা এবং গোটা জাতি ও বিশ্বের সামনে বিশ্ববিদ্যালয়ের গৌরবময় ভূমিকাকে ভুলুণ্ঠিত করার ঘটনার আমরা তীব্র নিন্দা ও জোর প্রতিবাদ জানাচ্ছি।''

''বাংলাদেশে যখন গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা বিপন্ন, মানুষ যখন ভোট ব্যবস্থার প্রতি চরম অনাগ্রহী, ঠিক সে সময় অনুষ্ঠিত আজকের ডাকসু নির্বাচনকে কেন্দ্র করে গোট জাতি পরম আগ্রহে অপেক্ষায় ছিল। প্রত্যাশা ছিল বাংলাদেশের ভুলুণ্ঠিত গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জয়যাত্রা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই শুরু হবে। যদিও এ নির্বাচন আয়োজনের শুরু থেকে প্রশাসন ও ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠন ছাড়া ঢাকা বিশ্বদ্যিালয়ের ছাত্র-শিক্ষক ও ক্রিয়াশীল সকল দল ও সংগঠনের মধ্যে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে ব্যাপক আশঙ্কা ছিল। তফসিল ঘোষণার পূর্বে এবং পরে তারা নানাভাবে তাদের আশঙ্কার কথা প্রকাশ করে আসছিলেন। শিক্ষক সংগঠন হিসেবে সাদা দলও এ নির্বাচনী প্রক্রিয়া তাদের যুক্ত করার দাবিসহ একটি সুষ্ঠু অবাধ নির্বাচনের কথা কর্তৃপক্ষকে বলে আসছিল। সর্বশেষ গতকাল ১০ মার্চ এক সংবাদ সম্মেলন আয়োজনের মাধ্যমে এ নির্বাচন যে অবাধ ও নিরপেক্ষ হবে না, নানা কারণ ও যুক্তি দিয়ে আমাদের আশঙ্কা ও উৎকণ্ঠা বিষয়ে দেশবাসী এবং কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছিল। কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও নির্বাচন কমিশন আমাদের কোনো দাবিকেই আমলেই নেয়নি।''

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ''ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে বলা হয় গণতন্ত্রের সূতিকাগার। আমাদের প্রত্যাশা ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের এ ঐতিহ্য রক্ষার্থে ডাকসু নির্বাচনকে সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য করার ব্যাপারে কর্তৃপক্ষ যথাযথ ব্যবস্থা নিবেন। কিন্তু তা না করায় জাতীয় নির্বাচনের মতো বাংলাদেশ কুয়েত মৈত্রী হল এবং রোকেয়া হলসহ বিভিন্ন হলে রাতের বেলায় ভোট কাস্ট করে রাখার যে ন্যাক্কারজন ঘটনা জাতি প্রত্যক্ষ করলো শিক্ষক হিসেবে আমরা এতে ক্ষুব্ধ, লজ্জিত ও ভীষণভাবে মর্মাহত। যে সব শিক্ষক এ কলঙ্কময় ঘটনার সাথে জড়িত, তাদের এ অপকর্মের দায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমাজ কোনোভাবেই নেবে না। অভিযুক্তদের নিজ নিজ পদ থেকে শুধু অব্যাহতি দেয়ায়ই যথেষ্ট নয় বলে আমরা মনে করি। একটি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য তদন্তের মাধ্যমে নৈতিক স্খলনজনিত অপরাধে তাদের সর্বোচ্চ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। গ্রহণযোগ্য তদন্তের স্বার্থে তদন্ত কমিটিতে বিরোধী মতের শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।''

''জাতির যে কোনো ক্রান্তিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জাতিকে পথ দেখিয়েছে। শতবর্ষের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে এ বিশ্ববিদ্যালয় যেন নিজেই পথ হারিয়ে না বসে। সচেতন শিক্ষক হিসেবে আমরা এ দায়িত্ব কোনোভাবেই গ্রহণ করতে পারি না। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের গৌরব, মর্যাদা অক্ষুন্ন রাখার স্বার্থে কলঙ্কিত নির্বাচন বাতিল ও পুনঃতফসিল ঘোষণা করে অবিলম্বে নতুন করে ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন আয়োজনের জোর দাবি জানাচ্ছি। আমরা আমাদের নিজ নিজ অবস্থান থেকে আমাদের প্রাণের বিশ্ববিদ্যালয়কে কলঙ্কের দায় থেকে মুক্ত করার ব্যাপারে দৃঢ়ভাবে অঙ্গীকারাবদ্ধ।''

Bootstrap Image Preview