Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৩ রবিবার, অক্টোবার ২০২৪ | ২৭ আশ্বিন ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

তরুণীর সনদ জালিয়াতি করে উচ্চ শিক্ষার জন্য লন্ডনে তরুণ

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৫ ডিসেম্বর ২০২২, ১০:৪৬ AM
আপডেট: ০৫ ডিসেম্বর ২০২২, ১০:৪৬ AM

bdmorning Image Preview


উচ্চ শিক্ষার জন্য যুক্তরাজ্যের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইন্টারভিউ দিয়েছিলেন সিলেটের জগন্নাথপুরের শিক্ষার্থী হাবিবা হক ইমা। পরবর্তীতে স্টুডেন্ট কনসালটেন্সির মাধ্যমে আইটিসি’র সনদ জালিয়াতি করে এক তরুণ উচ্চ শিক্ষার জন্য পাড়ি জমিয়েছেন যুক্তরাজ্যে। এ ঘটনায় ওই তরুণী সিলেটের সাইবার ট্রাইব্যুনালে মামলা করেছেন।

আদালতের নির্দেশে সিআইডি এ ঘটনার তদন্তে নেমেছে। জগন্নাথপুর উপজেলার ভবানিপুর গ্রামের আকিকুল হকের মেয়ে হাবিবা হক ইমা উচ্চ শিক্ষা নিতে যুক্তরাজ্য যাওয়ার জন্য ২০২১ সালের নভেম্বর অআইটিসি পরীক্ষা দেন।

এরপর যুক্তরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য সিলেট মহাগরের হাওয়াপাড়াস্থ ‘এসএমএস হায়ার এডুকেশন’ নামক প্রতিষ্ঠানে যান এবং প্রসেসিংয়ের জন্য প্রতিষ্ঠানটির ইনচার্জ বদরুল ইসলাম হামজার কাছে ই-মেইল এড্রেসসহ প্রয়োজনীয় সকল সার্টিফিকেট ও কাগজপত্র দেন। সেইসঙ্গে যে ই-মেইল থেকে অআইটিসি পরীক্ষার রেজিস্ট্রেশন করা হয়েছিল সেই ই-মেইলও হামজার কাছে দিয়ে দেন ইমা। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে ভর্তি সংক্রান্ত কোনো অগ্রগতি না হওয়ায় তিনি ‘এসএমএস হায়ার এডুকেশনে’ গিয়ে জানতে পারেন হামজা যুক্তরাজ্যে চলে গেছে। 

এ সময় প্রতিষ্ঠানের অন্য এক কর্মকর্তা হামজার সঙ্গে যোগাযোগ করে ইমার ভর্তির আবেদন ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর সেশনে রেফার্ড করা হয়েছে বলে জানান। এরপর ফের অপেক্ষা শুরু হয় ইমার। কিন্তু চলতি বছরের জুলাই মাসে নিজের ই-মেইল থেকে অআইটিসি’র ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে দেখতে পান- তার সার্টিফিকেটের নামের স্থলে ‘সৈয়দ বুরহান আহমদ’ লেখা রয়েছে।

এ সময় তার সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে বলে তার দৃঢ় সন্দেহ হয়। পরে কয়েক দফা তিনি এসএমএস হায়ার এডুকেশনে গেলেও কোনো সদুত্তর পাননি। এ ছাড়া এসএমএস হায়ার এডুকেশনের ফেসবুক পেজ ঘুরে ইমা দেখতে পান কিছুদিন আগে সৈয়দ বুরহান আহমদ নামের এক তরুণ ভিসা পেয়েছেন এবং বদরুল ইসলাম হামজা তাকে শুভেচ্ছাও জানিয়েছেন। তখনই ইমার সন্দেহ আর দৃঢ় হয় এবং নানাভাবে হামজার সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেন। কিন্তু ইমার সব প্রচেষ্টা বিফল হয়।

এ ঘটনায় এসএমএস হায়ার এডুকেশনের ইনচার্জ বদরুল ইসলাম হামজা, যুক্তরাজ্য যাওয়া যুবক সৈয়দ বুরহান আহমদ, এসএমএস হায়ার এডুকেশন গ্রুপের হেড অফ অপারেশন ইঞ্জিনিয়ার আল আমিনকে অভিযুক্ত করে ইমার বাবা আকিকুল হক সিলেটের সাইবার ট্রাইব্যুনালে নভেম্বরের শেষদিকে মামলা দায়েরের আবেদন করেন। পরে অভিযোগটি আমলে নিয়ে মামলা দায়ের এবং মামলাটি সিআইডিকে তদন্তের নির্দেশ দেন আদালত। 

এদিকে, ইমার ভাই রায়হান আহমদ বর্তমানে যুক্তরাজ্যে অবস্থান করছেন। তিনি সেখানে সৈয়দ বুরহান আহমদ নামক ওই যুবককে খুঁজে বের করে তার অআইটিসি বিষয়ে জানতে চান। তখন বুরহান আহমদ জানান, তিনি টাকার বিনিময়ে এসএমএস হায়ার এডুকেশন থেকে সার্টিফিকেট কিনে যুক্তরাজ্যে গিয়েছেন। বুরহানের সঙ্গে কথোপকথনের সময় সেগুলো মুঠোফোনে রেকর্ডও করেন ইমার ভাই রায়হান।

এ ব্যাপারে ওই কনসালটেন্সি ফার্মের কর্মকর্তারা মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে- ইমার আইনজীবী মো. সলমান উদ্দিন মানবজমিনকে জানিয়েছেন, ইমা বিশ্বাস করে তার ই-মেইল আইডি ও পাসওয়ার্ড ওই কনসালটেন্সি ফার্মে দিয়েছিলেন। পরে তারাই জালিয়াতি করে বুরহানকে ইমার অআইটিসি সনদ দিয়ে যুক্তরাজ্যে পাঠিয়ে দিয়েছে। এটি জঘন্য ধরনের একটি সাইবার ক্রাইম। এ ঘটনায় দায়েরকৃত মামলাটি আদালতের নির্দেশে সিআইডি তদন্ত করছে বলে জানান তিনি। এদিকে- ইমা ও তার পরিবার এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চেয়েছেন। এ ঘটনায় ইমার যুক্তরাজ্য যাওয়া আটকে গেল বলে জানান তারা। 

Bootstrap Image Preview