Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৯ সোমবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১৫ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

তিন ফোনেই শান্ত হয় ভারত-পাকিস্তান!

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৬ মার্চ ২০১৯, ০৯:৫৯ PM
আপডেট: ০৬ মার্চ ২০১৯, ০৯:৫৯ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত ছবি


তিনটি ফোনেই দিল্লি ও ইসলামাবাদের মধ্যে উত্তেজনার পারদ নামিয়ে দিতে পেরেছিলেন মার্কিন পররাষ্ট্রসচিব মাইক পম্পেও। ভিয়েতনামের রাজধানী হ্যানয় থেকে পম্পেওর দু’টি ফোন যায় দিল্লিতে। তখন তাঁর পাশে ছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

একটি ফোন যায় ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের কাছে, অন্যটি জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের টেলিফোন নম্বরে। তার কিছুক্ষণের মধ্যেই মার্কিন পররাষ্ট্র সচিবের ফোন যায় পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশির কাছে।

মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের উপ মুখপাত্র রবার্ট পাল্লাডিনো মঙ্গলবার এক সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, ‘‘কূটনীতিকের কাজটা নিজেই দায়িত্ব নিয়ে করেছিলেন পম্পেও। তিনি তিনটা ফোন করেছিলেন ভারত ও পাকিস্তানে। আর সেটাই দু’পক্ষের মধ্যে উত্তেজনার পারদ দ্রুত নামিয়ে দেয়।’’

কোন রাখঢাক না রেখেই পাল্লাডিনো জানিয়েছেন, ওয়াশিংটন চায়, সমস্যা মেটাতে যুদ্ধ নয়, আলোচনায় বসুক দিল্লি ও ইসলামাবাদ। তাঁর কথায়, ‘‘ভিতটা তৈরি করে দিয়েছেন পম্পেও। এবার নিজেদের মধ্যে সেই আলোচনাটা চালিয়ে যাক ভারত ও পাকিস্তান। দু’টি দেশের কাছেই আমাদের এই অনুরোধ। এখন যা অবস্থা, তাতে দু’দেশের মধ্যে যুদ্ধ বাধলেই দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কটা একেবারেই শেষ হয়ে যাবে।’’

পাল্লাডিনো জানিয়েছেন, ওই সময় উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে শীর্ষ বৈঠকের জন্য প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গেই হ্যানয়ে ছিলেন মার্কিন পররাষ্ট্র সচিব।

দুই দেশের সর্বশেষ সংকটের শুরুটা হয় ১৪ ফেব্রুয়ারি। ওই দিন ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পুলওয়ামায় দেশটির আধা সামরিক সিআরপিএফের গাড়িবহরে আত্মঘাতী হামলায় ৪০ জনের বেশি জওয়ান নিহত হন। পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন জইশ-ই-মুহাম্মদ এ হামলার দায় স্বীকার করে। এ ঘটনার ১২ দিন পর ২৬ ফেব্রুয়ারি ভোরে পাকিস্তাননিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের বালাকোটে বিমান হামলা চালায় ভারত। নয়াদিল্লির দাবি, ওই হামলায় পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গি গোষ্ঠী জইশ-ই-মুহাম্মদের বড় ঘাঁটি গুঁড়িয়ে গেছে। নিহত হয়েছে ৩০০ জঙ্গি। জঙ্গি ঘাঁটিতে আকাশপথে মিরাজ-২০০০ যুদ্ধবিমান দিয়ে হামলা চালায় ভারতীয় বিমানবাহিনী।

কিন্তু ওই হামলায় এখন পর্যন্ত মাত্র একজনের আহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে বলে দাবি হামলাস্থল পাকিস্তানশাসিত কাশ্মীরের বালাকোটের বাসিন্দাদের। এরপরই প্রতিবেশী দেশ দুটির মধ্যে চরম উত্তেজনা চলছে। পাকিস্তানের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, জঙ্গিদের লাশ কই। তবে ইতালির এক সাংবাদিক দাবি করেছেন, ভারতের আঘাত হানা জায়গা থেকে কয়েকটি দেহ সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখাওয়ার বালাকোটে বিমান হামলায় ‘জঙ্গি হত্যার’ তথ্যপ্রমাণ প্রকাশ করবে না ভারত।

এদিকে সেই হামলার পরদিনই ভারতের আকাশসীমায় ঢুকে পড়ে পাকিস্তানের একাধিক যুদ্ধবিমান। তার মধ্যে ছিল এফ-১৬ যুদ্ধবিমান। পরে ভারতের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এ দেশের সৈন্য ঘাঁটিই ছিল পাকিস্তানের আক্রমণের লক্ষ্য। কিন্তু তা অস্বীকার করেছে পাকিস্তান।

ভারতীয় যুদ্ধবিমানের একজন পাইলটকে আটকের দাবি করে তাঁর ভিডিও প্রকাশ করেছে পাকিস্তান। যদিও কিছুক্ষণ পরই সেই ভিডিও মুছে ফেলা হয়েছে। সেই ভিডিওতে একজন ব্যক্তিকে চোখ বাঁধা অবস্থায় দেখা যায়। ভারতের পক্ষ থেকে একজন পাইলট নিখোঁজ হওয়ার কথা স্বীকার করা হয়েছে। ভারতের দুটি বিমান ভূপাতিত করে পাকিস্তান, আটক করে ভারতীয় পাইলট অভিনন্দন বর্তমানকে। অবশ্য গত শুক্রবার ভারতীয় পাইলট অভিনন্দনকে ছেড়ে দেওয়ার মধ্য দিয়ে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে বিরাজমান উত্তেজনা কমার লক্ষণ দেখা গেছে।

Bootstrap Image Preview