Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৯ সোমবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১৫ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পরিকল্পনা ভেস্তে দিল পাকিস্তান

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৬ মার্চ ২০১৯, ০২:৪৪ PM
আপডেট: ০৬ মার্চ ২০১৯, ০২:৪৪ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত ছবি


কাশ্মীরের পুলওয়ামায় সিআরপিএফের প্রাণহানি ঘটনায় পাক-ভারত উত্তেজনা ক্রমেই বেড়ে চলেছে। ভারতীয় পাইলটকে ফেরত দেবার পরও একের পর এক হামলার পরিকল্পনা করে চলেছে ভারত-পাকিস্তান। এরই মাঝে ইসরাইলের সমর্থন নিয়ে পাকিস্তানে এক বিপজ্জনক হামলা চালানোর পরিকল্পনা নিয়েছিল ভারত। পরিকল্পনাটি করা হয়েছিল রাজস্থানের বিমানঘাঁটি থেকে। ওই পরিকল্পনার ব্যাপারে অবগত হতে পেরেছিল যথাসময়ে পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা। হামলার পরিকল্পনার গোপণ তথ্য পেয়ে পাল্টা হুমকি দিয়ে বার্তা পাঠায় পাক গোয়েন্দা সংস্থা। ফলে বিপজ্জনক পথে পা বাড়ানো আগেই পিছু হটে ভারত। খবর-ডন

সূত্রে জানা গেছে, পাকিস্তানে গোপণে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার বিষয়টি জানতে পেরে ভারতকে সময়মতো গোয়েন্দারা ও অন্যরা ম্যাসেজ দিয়ে পরিষ্কার করে যে, যদি পরিকল্পনা মতো হামলা করা হয় তাহলে তার উপযুক্ত জবাব আসবে। আর এমন হলে দেশ দু’টির সামনে পেছনে ফেরার কোনো পথ থাকবে না।

গোপন ওই হামলার জন্য ভারতের রাজস্থানের বিমানঘাঁটি থেকে পাকিস্তানের ভেতরে অন্তত ছয় থেকে সাতটি স্থানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পরিকল্পনা করেছিল নয়াদিল্লি। তবে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে পাকিস্তান সরকার যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ায় ভারতের এই পরিকল্পনা সম্পূর্ণ বিফলে চলে যায়।

এদিকে পাকিস্তানের সরকারি সূত্র বলছে, পাকিস্তান এই পরিকল্পনার ব্যাপারে ঠিক সময়েই জানতে পারে এবং দেশটির গোয়েন্দা সংস্থাগুলো ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থাকে সতর্ক করে দেয় যে, এ ধরনের যেকোনো হামলার যথাযথ প্রতিশোধ নেয়ার জন্য পাকিস্তান প্রস্তুত। পাকিস্তানি গোয়েন্দারা সেই সময় ভারতকে জানায়, ভারত যে হামলা চালাবে তার তিনগুণ বেশি হামলা চালাবে পাকিস্তান।

পাক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পাকিস্তানের বড় বড় শহর বিশেষ করে করাচি এবং বাহাওয়ালপুরে সন্ত্রাসী হামলার পরিকল্পনা করেছিল ভারত। ভারতের সম্ভাব্য এই হামলার ব্যাপারে পাওয়া তথ্য বন্ধু রাষ্ট্রগুলোর সাথে শেয়ার করা হয়েছে। সময়োচিত গোয়েন্দা তথ্য ও গোপনীয় বার্তার ফলে ভারতের কাছে এটা পরিষ্কার করা হয়েছিল যে, যদি পাকিস্তানে হামলার পরিকল্পনা করা হয়, তাহলে এর যথাযথ জবাব দেয়া হবে। ফলে পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে চলে যাবে, যেখান থেকে আর পিছু ফেরার কোনো সম্ভাবনা থাকবে না।’

ভারতীয় পাইলটকে আটকের পর মুক্তির মাধ্যমে ভারতের সাথে ইসলামাবাদ শান্তি চায় বলে বিশ্বের শক্তিধর দেশগুলোকে জানায় পাকিস্তান। শান্তি স্থাপনে পাকিস্তানের ইচ্ছা আছে বলেও জানানো হয়। গত সপ্তাহে পারমাণবিক অস্ত্রধারী প্রতিবেশী এ দুই দেশের মধ্যে যখন উত্তেজনা চরমে পৌঁছায় তখন বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা পাক-ভারতের সাথে যোগাযোগ করেন। এই উত্তেজনার সময় প্রতিবেশী এ দুই দেশের মধ্যে সরাসরি কোনো যোগাযোগ হয়নি। তবে দুই দেশের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর মধ্যে যোগাযোগ ছিল।

পাকিস্তানের ওই সূত্র জানিয়েছে, গত কয়েকদিন আগে পাক-ভারত উত্তেজনা যেরকম ছিল এখন সেরকম নেই। তবে দেশটির সরকার, সশস্ত্র বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো এখনো সতর্ক অবস্থায় রয়েছে। আটক ভারতীয় পাইলটের মুক্তির পর পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সাথে কূটনৈতিক তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে পাকিস্তান। পাক-ভারত উত্তেজনা প্রশমনে যুক্তরাষ্ট্র, তুরস্ক ও সৌদি আরব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। গত কয়েকদিনে প্রতিদ্বন্দ্বী এ দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা কমিয়ে আনতে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে চেষ্টা করেছেন।

প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরের পুলওয়ামায় দেশটির বিষেশায়িত বাহিনীর (সিআরপিএফ) গাড়ি বহরে হামলায় ৪৯ জনের বেশি জওয়ানের প্রাণহানি ঘটে। পরে আজাদ কাশ্মিরে যুদ্ধবিমান থেকে অভিযান চালায় ভারতীয় বিমানবাহিনী। এই অভিযানের একদিন পর ২৭ ফেব্রুয়ারি দুই দেশের আকাশসীমায় পাল্টাপাল্টি যুদ্ধবিমানের অনুপ্রবেশের ঘটনা ঘটে। পাকিস্তান ভারতীয় বিমানবাহিনীর দু’টি বিমান ভূপাতিত এবং একজন পাইলটকে আটকের দাবি জানায়। 

অন্য দিকে, ভারতও পাকিস্তানের একটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করার দাবি তোলে। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রথমে অস্বীকার করলেও পরে জানায়, পাকিস্তানি অনুপ্রবেশ ঠেকানোর সময় ভারতীয় একটি মিগ-২১ যুদ্ধবিমান ও অভিনন্দন বর্তমান নামে একজন পাইলট নিখোঁজ রয়েছেন।

অভিনন্দনকে আটকের খবর প্রকাশের পর পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ভারতকে আলোচনায় বসার আহ্বান জানান। পরে দেশটির পার্লামেন্টে যৌথ এক অধিবেশনে শান্তিপূর্ণ আবহ তৈরির লক্ষ্যে আটক পাইলটকে ভারতে ফেরত পাঠানোর ঘোষণা দেন ইমরান। এমন এক অবস্থায় উত্তুঙ্গ সময় পার করেছে পারমাণবিক অস্ত্রের অধিকারী দু’টি দেশ। কয়েক দশকে তাদের মধ্যে এত বেশি যুদ্ধের কাছাকাছি চলে যাওয়ার মতো অবস্থা সম্ভবত সৃষ্টি হয়নি। আর এ যুদ্ধ লেগে গেলে কী হতো পরবর্তীতে তা নিশ্চিত করে কেউ জানেন না।

Bootstrap Image Preview