পাকিস্তান থেকে দেশের মাটিকে পা রাখার পরই ভারতীয় বিমানবাহিনীর পাইলট অভিনন্দন বলেছিলেন, ‘ভাল লাগছে।’ ব্যস ওইটুকুই। তার পরই নিরাপত্তার ঘেরাটোপে উইং কমান্ডারকে সোজা নিয়ে যাওয়া হয় অমৃতসর বিমানবন্দরে। রাত তখন প্রায় সাড়ে ১০টা। সেখান থেকে বিশেষ বিমানে করে দিল্লির পালম এয়ারবেসে নিয়ে যাওয়া হয় অভিনন্দনকে। ঘড়ির কাঁটা তখন রাত সাড়ে ১১টা। সীমান্ত থেকে দিল্লি—দীর্ঘ এই সফরে অভিনন্দনের সঙ্গী ছিলেন শুধুমাত্র কয়েক জন সেনা অফিসার।
এর পর পালম এয়ারবেস থেকে অভিনন্দনকে নিয়ে যাওয়া হয় দিল্লির সুব্রত পার্কের এয়ারফোর্স সেন্ট্রাল মেডিক্যাল এসটাব্লিশমেন্ট-এ। ওই হাসপাতালে রাতেই প্রথামিক একটা মেডিক্যাল চেকআপ হয় অভিনন্দনের। পরিবারের সঙ্গে এক ঝলক দেখা হয়। তবে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কোনও বাক্যবিনিময়ই হয়নি তাঁর। হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে, রাতে হালকা খাবার খেয়েছেন অভিনন্দন। একটা নাগাদ ঘুমোতেও যান।
সকালের জলখাবারের পর ফের একপ্রস্থ মেডিক্যাল চেক আপ হয় তাঁর। বায়ুসেনা সূত্রে খবর, সারা দিন ধরে নানা পরীক্ষার মুখোমুখি হতে হবে অভিনন্দনকে। এর মধ্যে রয়েছে সাইকোলজিক্যাল অ্যানালিসিস টেস্ট (পিএটি), ডিব্রিফিং এবং বাগ স্ক্যানিং।
সাইকোলজিক্যাল অ্যানালিসিস টেস্টের মাধ্যমে অভিনন্দনের বর্তমান মানসিক পরিস্থিতি খতিয়ে দেখা হবে। পাক সেনার হাতে আটক হওয়া থেকে শুরু করে পর পর যে ঘটনাগুলো তাঁর সঙ্গে ঘটেছে তাতে কতটা ট্রমায় রয়েছেন সেটাও পরীক্ষা করে দেখা হবে। পাশাপাশি, ও রকম একটি পরিস্থিতি কী ভাবে সামলেছেন, তাঁকে পাকিস্তানে কোনও মানসিক অত্যাচার করা হয়েছে কিনা সব কিছুই এই টেস্টের মধ্য দিয়ে জানার চেষ্টা করা হবে বলে বায়ুসেনা সূত্রে জানানো হয়েছে।
সাইকোলজিক্যাল অ্যানালিসিস টেস্ট হওয়ার পর পরবর্তী ধাপ ‘ডিব্রিফিং’। পাকিস্তানে তাঁর সঙ্গে কী কী করা হয়েছে সেটা সবিস্তারে শোনা হবে। শুধু তাই নয়, এখন থেকে তিনি কী ভাবে এবং কতটা কথা বলবেন সেটাও নির্দিষ্ট করে দেওয়া হবে। প্রধানমন্ত্রী হোক বা পরিবারের সদস্য, এই ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি কতটা বলবেন সেটাও নির্দিষ্ট করে দেওয়া হবে।
এর পরের ধাপ ‘বাগ স্ক্যানিং’। শরীরে কোনও চিপ আটকে দিয়েছে কি না বা কোনও গোপন ক্যামেরা, বাগ স্ক্যানিংয়ের মাধ্যমে এ সবই চিহ্নিত করা হয়।