Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৪ শনিবার, মে ২০২৪ | ২১ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

‘যুদ্ধ নয়, শান্তি চাই’, ভারতকে পাকিস্তান

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৭ ফেব্রুয়ারী ২০১৯, ০৬:৪৪ PM
আপডেট: ২৭ ফেব্রুয়ারী ২০১৯, ০৬:৪৪ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত ছবি


পাক-ভারত তুমুল উত্তাপের মুখে আচমকা শান্তির কথা বলতে শুরু করল পাকিস্তান। পাক বাহিনীর প্রধান মুখপাত্র (ডিজি, আইএসপিআর) মেজর জেনারেল আসিফ গফুর সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে জানালেন, পাকিস্তান শান্তি চায়। ভারতকে বুঝতে হবে যে, যুদ্ধ হল নীতিগত ব্যর্থতা। খবর - আনন্দবাজার।

আজ (বুধবার) সকালে কোনও সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য ছাড়াই ভারতীয় আকাশসীমা লঙ্ঘন করেছে পাকিস্তান বিমানবাহিনী, বোমাও ফেলেছে ভারতীয় ভূখণ্ডে। পাকিস্তানের এই পদক্ষেপকে সরাসরি সামরিক পদক্ষেপ হিসাবেই দেখছেন ভারতীয় প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সশস্ত্র বাহিনীর সঙ্গে জরুরি বৈঠকও শুরু করেছেন।

তার পরই ইসলামাবাদ বলল, পাকিস্তান যুদ্ধ চায় না।

সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজারের বরাত দিয়ে জানা যায়, আজ সকালে প্রথমে পাকিস্তান সরকারের তরফে বিবৃতি জারি করে বলা হয়, সংঘাত বাড়ানোর কোনও উদ্দেশ্য নেই তাদের। বরং ভারতের সঙ্গে শান্তি স্থাপন করতেই আগ্রহী তারা। তবে ভারতের প্রত্যাঘাতের জবাবে নিজেদের শক্তি প্রমাণ করতে হত। তাই অসামরিক অভিযান চালাতে যুদ্ধবিমান পাঠানো হয় কাশ্মীরে।

আরও জানা যায়, সরকারি বিবৃতি জারির পর ইসলামাবাদে সাংবাদিক সম্মেলন করেন পাক সেনাবাহিনীর মুখপাত্র মেজর জেনারেল আসিফ গফুর।

তিনি জানান, ‘‘গতকাল নিয়ন্ত্রণরেখা লঙ্ঘন করে পাকিস্তানে প্রবেশ করেছিল ভারতীয় বিমানবাহিনী। আত্মরক্ষার তাগিদে তার জবাব দিতেই হত আমাদের। কিন্তু আমরা শান্তি চাই। তাই দায়িত্বশীল দেশ হিসাবে কোনও সেনা শিবির বা জনবসতিপূর্ণ এলাকায় যুদ্ধবিমান পাঠাইনি। বরং নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে ৬ জায়গায় অভিযান চালাই। চাইলে গুলি চালাতেই পারতাম। কিন্তু সামরিক অভিযান চালানো উদ্দেশ্য ছিল না আমাদের। শুধুমাত্র নিজেদের ক্ষমতা প্রমাণ করতে চেয়েছিলাম।’’

ভারতের বিরুদ্ধে নতুন করে নিয়ন্ত্রণরেখা লঙ্ঘনের অভিযোগও তোলেন মেজর জেনারেল গফুর।

তাঁর দাবি, বুধবার সকালে নিয়ন্ত্রণ রেখা পেরিয়ে পাকিস্তানে প্রবেশ করেছিল ভারতীয় বায়ুসেনার দু’টি যুদ্ধবিমান। কিন্তু গুলি করে সেগুলি নামানো হয়। যার মধ্যে একটি গিয়ে পড়ে পাক অধিকৃত কাশ্মীরে। ভারতের অন্তর্গত কাশ্মীরে গিয়ে পড়ে আর একটি। ভারতীয় সেনার তরফে আগেই সেই অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে।

তবে পাক সেনা মুখপাত্রের দাবি, দুই ভারতীয় পাইলটকে আটক করেছেন তাঁরা। যার মধ্যে একজন গুরুতর জখম হয়েছেন। অন্য জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তাঁদের কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্রও উদ্ধার হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।

১৪ ফেব্রুয়ারি পুলওয়ামায় হামলার পর থেকে দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধ পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে। কিন্তু যুদ্ধ কখনও সমস্যার সমাধান হতে পারে না বলে জানান মেজর জেনারেল গফুর।

তার কথায়, ‘‘প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান আগেই বলেছেন, যুদ্ধ শুরু করা সহজ, কিন্তু শেষ করা সহজ নয়। তাই যুদ্ধে যাওয়ার কোনও অভিপ্রায় নেই আমাদের। পাকিস্তান সরকার, সেনাবাহিনী এবং দেশের জনগণরা ভারতের সঙ্গে শান্তিস্থাপন করতে আগ্রহী। একমাত্র আলাপ-আলোচনার মাধ্যমেই তা সম্ভব। ভারত-পাকিস্তান দুই দেশেরই যুদ্ধ করার ক্ষমতা রয়েছে। কিন্তু তা কখনও সমাধান হতে পারে না।

শান্তিপূর্ণ উপায়েই তা খুঁজে বার করতে হবে। আগেও একাধিকবার দিল্লিকে শান্তির প্রস্তাব দিয়েছি আমার। যত তাড়াতাড়ি তা গৃহীত হয়, ততই মঙ্গল। কারণ এতে শুধুমাত্র দুটো দেশ নয়, গোটা দক্ষিণ এশিয়া উপমহাদেশের নিরাপত্তা জড়িয়ে।’’ দুই দেশের সংবাদমাধ্যমকেও সংযত হতে অনুরোধ জানান মেজর জেনারেল গফুর।

মঙ্গলবার পাকিস্তানে ঢুকে ভারত হামলা করলে উদ্বেগ প্রকাশ করে মার্কিন সরকার, চিন-সহ আন্তর্জাতিক মহল। সংঘাতে না যাওয়ার পরামর্শ দেন তাঁরা। তবে ভারতের তরফে সে রকম কোনও উদ্দেশ্য নেই বলে নিশ্চিত করেছেন বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। রাশিয়া-ভারত-চিন বিদেশমন্ত্রীদের ষোড়শতম বৈঠক উপলক্ষে এই মুহূর্তে চিনে রয়েছেন তিনি। সংঘাত বাড়ানোর কোনও উদ্দেশ্য ভারতের নেই বলে সেখানে জানিয়ে দেন তিনি। আত্মরক্ষার তাগিদেই গতকাল জঙ্গিদের নিশানা করে পাকিস্তানে অসামরিক অভিযান চালানো হয়েছিলে বলেও আরও একবার স্পষ্ট করে দেন।

Bootstrap Image Preview