Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০২ বৃহস্পতিবার, মে ২০২৪ | ১৯ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

যে কাজে আল্লাহ দ্রুত বান্দার দিকে এগিয়ে আসেন

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০১৯, ০২:৫১ PM
আপডেট: ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০১৯, ০২:৫১ PM

bdmorning Image Preview


সমগ্র সৃষ্টি জগতের মধ্যে আল্লাহ তাআলা সবচেয়ে বেশি পছন্দ করেন মানুষকে। এ কারণেই তাঁর প্রতিনিধি হিসেবে মানুষকে পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন। যারা দুনিয়াতে তার বিধান বাস্তবায়নে প্রতিনিধিত্ব করবেন। দুনিয়ায় আল্লাহর প্রতিনিধি মানুষ আল্লাহকে যেভাবে স্মরণ করবে, আল্লাহ তাআলাও মানুষকে সেভাবেই স্মরণ করবেন। মানুষ আল্লাহকে যেমন ধারণা করবেন, আল্লাহ তাআলাও তার জন্য সেরকম হয়ে যাবেন। মানুষ যেভাবে আল্লাহর দিকে ছুটবেন, আল্লাহ বান্দার দিকে তার চেয়ে বেশি গতিতে এগিয়ে আসবেন।

আল্লাহ তাআলা ঘোষণা করেন- ‘তোমরা আমাকে স্মরণ কর, আমিও তোমাদের স্মরণ করবো। আর তোমরা আমার কৃতজ্ঞতা স্বীকার কর এবং আমার অকৃতজ্ঞ হইও না।’

হাদিসে প্রিয়নবি (সা.) ঘোষণা করেন, বান্দা আল্লাহর সঙ্গে যেরূপ ধারণা করে, কিংবা যে পরিবেশে যে অবস্থায় আল্লাহর ইবাদত-বন্দেগি কিংবা তার বিধান পালন করে, আল্লাহ সে বান্দার ইবাদত-আমল অনুযায়ী তার চেয়ে উত্তম পরিবেশে সে বান্দাকে স্মরণ করেন।

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আল্লাহা তাআলা ইরশাদ করেন- আমি আমার বান্দার সঙ্গে আমার প্রতি ধারণা অনুযায়ী ব্যবহার করি। যখন সে আমাকে স্মরণ তখন আমি তার সঙ্গে থাকি। অনন্তর যদি সে আমাকে মনে মনে স্মরণ করে আমিও তাকে মনে মনে স্মরণ করি।

- আর যদি সে কোনো মাহফিলে আমার স্মরণ করে, তবে আমি তার চেয়ে উত্তম মাহফিলে (নিষ্পাপ ফেরেশতাদের মাহফিলে) তার স্মরণ করি।

- সে যদি আমার দিকে এক বিঘৎ অগ্রসর হয়, তবে আমি তার দিকে এক হাত (দুই বিঘৎ) অগ্রসর হই।

- আর সে যদি আমার দিকে একহাত অগ্রসর হয় তবে আমি তার দিকে একগজ (দুই হাত) অগ্রসর হই।

- সে যদি আমার দিকে হেঁটে হেঁটে আসে আমি তার দিকে দৌড়ে যাই।’ (বুখারি, মুসলিম, তিরমিজি, ইবনে মাজাহ, মুসনাদে আহমদ, বায়হাকি)

উল্লেখিতে হাদিসে প্রিয়নবি (সা.) আল্লাহকে স্মরণকারী বান্দার বিষয়ে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের সুস্পষ্ট ইঙ্গিত প্রদান করেছেন-

১. আল্লাহ বান্দার সঙ্গে বান্দার ধারণা অনুযায়ী ব্যবহার করে থাকেন। সুতরাং বান্দার উচিত সব সময় আল্লাহর কাছে তার দয়া ও অনুগ্রহ পাওয়া আশা পোষণ করা। এ জন্য আল্লাহ তাআলা কুরআনে পাকে বান্দাকে সর্বাবস্থায় আশ্বস্ত করে বলেছেন-

‘(হে বান্দা!) আল্লাহর অফুরন্ত রহমত থেকে কখনো নিরাশ হবে না।’

আবার মানুষ অন্যায় কাজে লিপ্ত হওয়ার পর আল্লাহকে স্মরণ করলে কিংবা ক্ষমা প্রার্থনা করলে তিনি অপরাধীর অপরাধ ক্ষমা করে দেবেন। তবে যারা আল্লাহর সঙ্গে অন্য কাউকে শরিক করবে তাদেরকে তিনি ক্ষমা করবেন না। আল্লাহ বলেন-

‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলা তাঁর সঙ্গে অংশীদার স্থপনকারীর অপরাধ ক্ষমা করবেন না, ইহা (শিরক) ব্যতিত যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করবেন।’

সুতরাং আল্লাহর সঙ্গে শিরক তথা অংশীদার স্থপন না করে তার অবাধ্য না হয়ে তাকে স্মরণ করা কিংবা তার হুকুম আহকামগুলো যথাযথ পালন করা তথা তার সার্বিক জিকির-আজকারে নিজেকে নিয়োজিত রাখাই মুমিন মুসলমানের একান্ত কাজ।

২. বান্দা যখন আল্লাহকে স্মরণ করে, আল্লাহ তখন শুধু বান্দাকে স্মরণ করেই থেমে যান না বরং হাদিসের আলোকে বুঝা যায় যে, আল্লাহ বান্দার সঙ্গে থাকেন। অন্য হাদিসে প্রিয়নবি ঘোষণা করেন-

বান্দা যখন আমাকে স্মরণ করে, যতক্ষণ আমার স্মরণ বা জিকির বান্দার ঠোঁটে থাকে অর্থাৎ আমার স্মরণে বান্দার ঠোঁট যতক্ষণ নড়তে থাকে, আমি ততক্ষণ তার সঙ্গে থাকি।’ জিকিরকারী বান্দার প্রতি আল্লাহ তাআলার বিশেষ দৃষ্টি থাকে এবং তার ওপর রহমত বর্ণ হতে থাকে।

৩. আল্লাহ তাআলা বান্দার ব্যাপারে ফেরেশতাদের মাহফিলে আলোচনা করেন। সে বান্দাকে নিয়ে আল্লাহ তাআলা ফেরেশতাদের মাহফিলে গর্ব প্রকাশ করে মানুষ সৃষ্টিতে ফেরেশতাদের আপত্তির কথা তুলে ধরেন।

৪. বান্দা আল্লাহর বিধান পালনে কিংবা তার ইবাদত-বন্দেগিতে যত বেশি মনোযোগী হয়, আল্লাহ তাআলা সে বান্দার প্রতি তারচেয়ে বেশি মনোযোগের সঙ্গে অনুগ্রহ দান করেন। বান্দার নিকটবর্তী হওয়া কিংবা বান্দার দিকে দৌড়ে আসার মর্মও এটি।

Bootstrap Image Preview