আল্লাহ তাআলা মানুষ ও জিন জাতিকে এই পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন তার ইবাদতের জন্য। আল্লাহ্র আদেশ মেনে চলা, তার পছন্দনীয় কাজ করার নাম ইবাদত। একজন মুসলিম ব্যক্তির ইবাদত সংক্রান্ত পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থার নির্দেশনা রয়েছে সর্বশ্রেষ্ঠ কিতাব ‘আল কুরআনে’। এর পাশাপাশি রয়েছে হজরত মুহাম্মদ (সা.) এর বাণী ও জীবনাচরণ অর্থাৎ হাদিস।
কুরআন ও হাদিসের আলোকে জীবনের প্রত্যেকটি বিষয় নিয়ে সঠিক ব্যাখ্যা জানার অধিকার রয়েছে সকল মুসলিমের।
একজন মনুষকে কবর দেওয়ার পর করণীয়
মৃত্যু ব্যক্তিকে দাফন করার পর তার সম্পর্কে কী করতে হবে এব্যাপারে ব্যাপারে নবী কারীম (সা.) ও সাহাবা-তাবেয়ি থেকে সুস্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। রাসুল (সা.) এর জিয়ারত কেমন ছিল তা হজরত উসমান (রা.) বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, রাসুল (সা.) মৃত ব্যক্তিকে দাফন করার পর তার কবরের কাছে কিছুক্ষণ দাঁড়াতেন এবং সাহাবায়ে কেরামকে বলতে, তোমরা তোমাদের ভাইয়ের জন্য ক্ষমা প্রর্থনা কর এবং তার অবিচলতার দোয়া কর। কারণ তাকে এখন জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। (আবু দাউদ, হাদিস নং : ৩২১৩)
এ সম্পর্কে বুরাইদা (রা.) বলেন, যখন তারা কবর জিয়ারত করতে যেতেন রাসুল (সা.) তাদের শিখিয়ে দিতেন। তারা এভাবে বলতেন, উচ্চারণ: ‘আসসালামু আলাইকুম আহলাদ দিয়ারি মিনাল মুমিনিনা ওয়াল মুসলিমিন, ওয়া ইন্না ইনশাআল্লাহু লালা-হিকুন, আসআলুল্লাহা লানা ওয়া লাকুমুল আফিয়াহ।’
অর্থ: সব মোমিন ও মুসলিম কবরবাসীর ওপর সালাম (শান্তি) বর্ষিত হোক। আল্লাহর ইচ্ছায় আমরাও আপনাদের (মৃতব্যক্তিদের) সঙ্গে মিলিত হবো। আমরা আমাদের এবং আপনাদের ক্ষমার জন্য আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করছি। (মুসলিম, হাদিস নং : ৯৭৫)
কবরের সামনে দাঁড়িয়ে সুরায়ে ফাতেহা, সুরা বাকারার শুরু ও শেষের দিকের আয়াতগুলো পড়ার বিধান তাবেয়িদের আমল থেকে পাওয়া যায়। বিখ্যাত তাবেয়ি আলা ইবনে লাজলাজ (রহ.) বলেন, তার বাবা ইন্তেকালের আগে তাকে নসিহত করেছেন। হে আমার ছেলে! আমার ইন্তেকালের পর যখন তোমরা আমাকে কবর দিবে তখন তোমরা আমাকে লাহদ (বোগলী) কবরে রাখবে এবং ‘বিসমিল্লাহি ও আলা সুন্নাতি রাসুলিল্লাহ’ বলে সুন্দরভাবে মাটি দিবে। তারপর আমার মাথার কাছে সুরা ফাতেহা ও সুরা বাকারার শুরু ও শেষের অংশগুলো পাঠ করবে। কেননা আমি আব্দুল্লাহ ইবনে উমরকে এটা করতে শুনেছি।” (তারিখে ইবনে মাঈন ২/৩৭৯, হাদিস নং : ৫২৩৮)