Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ৩০ মঙ্গলবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১৭ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

শর্করা বেশি খেয়ে দীর্ঘজীবন পাচ্ছেন ওকিনওয়াবাসী

আন্তর্জাতিক ডেস্ক-
প্রকাশিত: ২০ জানুয়ারী ২০১৯, ১০:২৭ AM
আপডেট: ২০ জানুয়ারী ২০১৯, ১০:২৭ AM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত ছবি


জাপানের ওকিনওয়া দ্বীপের বাসিন্দারা শর্করা খেয়েই লাভ করেছেন দীর্ঘ জীবন! এক গবেষণার ফলাফলে বলা হয়েছে, তাদের দীর্ঘজীবী হওয়ার পেছনে মুখ্য ভূমিকা রাখছে শর্করা!

পূর্ব চীনা সমুদ্রের তীরবর্তী দ্বীপ ওকিনওয়ার বাসিন্দারা পৃথিবীর অন্য যে কোনো জায়গার মানুষের থেকে বেশি দিন বাঁচে। বেশি দিন বাঁচার পাশাপাশি সেখানকার মানুষের আরেকটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো সেখানকার অধিকাংশ বাসিন্দা সুস্বাস্থ্যের অধিকারী। পৃথিবীর যে কোনো প্রান্তের মানুষের তুলনায় জাপানের বাসিন্দাদের গড় আয়ু বেশি। আর ওকিনওয়া দ্বীপে শতবর্ষীর সংখ্যা জাপানের অন্যান্য প্রান্তের মানুষের তুলনায় গড়ে ৪০ শতাংশ বেশি। ওকিনওয়া দ্বীপে শতবর্ষী মানুষের সংখ্যা এক হাজারের বেশি। ৯৭ বছর বয়সীদের দুই তৃতীয়াংশ-ই অন্য কারো সাহায্য ছাড়াই সুস্থ স্বাভাবিক জীবনযাপন করেন।

ওকিনওয়া দ্বীপবাসীর এই বেশিদিন বাঁচার রহস্য জানতে দীর্ঘদিন ধরে গবেষণা করছেন বিজ্ঞানীরা। প্রাথমিক গবেষণার তথ্য থেকে তারা ধারণা করছেন, বিশেষ কিছু জিন বৈশিষ্ট্যের জন্যই সেখানকার মানুষের গড় আয়ু বেশি। সেখানকার মানুষের জীন বৈশিষ্ট্য জানার পাশাপাশি তাদের জীবনধারা নিয়েও বিস্তর গবেষণা করেছেন তারা। ওকিনওয়া দ্বীপবাসীর জীবনধারা গবেষণা করে তারা দেখতে পেয়েছেন, সেখানকার মানুষের খাদ্য তালিকায় উচ্চ মাত্রার শর্করা থাকে। আর এই শর্করা জাতীয় খাবারের মধ্যে উল্লেখযোগ্য খাবার মিষ্টি আলু।

গবেষণা দলের অন্যতম সদস্য সামান্থা সোলোন-বিয়েট বলেন, বর্তমান বিশ্বের জনপ্রিয় খাদ্যাভ্যাস বলতে উচ্চ প্রোটিন এবং নিম্ন শর্করা তত্ত্ব প্রচলিত থাকলেও ওকিনওয়ায় সম্পূর্ণ বিপরীত চিত্র। ওকিনওয়ায় দ্বীপের মানুষ মূলত শর্করার ওপর বেশি নির্ভরশীল। ইউনিভার্সিটি অব সিডনিতে বেশকিছু অঞ্চলের দীর্ঘজীবী মানুষের খাদ্যাভ্যাস নিয়ে গবেষণা করেছেন এই বিজ্ঞানীরা।

ওকিনওয়া দ্বীপবাসীর খাদ্যাভ্যাসে শর্করা এবং প্রোটিনের গড় অনুপাত ১০:১। যদিও তারা এশিয়ার অন্য অঞ্চলের বাসিন্দাদের মতো ভাত জাতীয় শর্করা খায় না। তারা মূলত মিষ্টি আলু জাতীয় শর্করা গ্রহণ করে। এর বাইরে তারা সবুজ এবং হলুদ সবজি, তেতো তরমুজ এবং বিভিন্ন ধরনের সয়া জাতীয় খাবার গ্রহণ করে। প্রোটিন হিসেবে তারা মাছ, মাংস খেলেও এর পরিমাণ খুবই নগণ্য।

চিকিত্সকরা যেখানে সুস্বাস্থ্যের জন্য শর্করা কম খাওয়ার পরামর্শ দেন সেখানে ওকিনওয়ার এই বিপরীত চিত্র অবাক করেছে গবেষকদের। তাদের গবেষণার প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, উচ্চ শর্করার এই খাদ্যাভ্যাসের ফলে ক্যান্সার, হূদরোগ এবং স্মৃতিভ্রমের মতো বেশ কিছু রোগ থেকে মুক্ত থাকা যায়। তবে প্রাপ্ত এসব পর্যালোচনার ওপর ভিত্তি করে এখনই জীবনধারা পরিবর্তনের সময় আসেনি। তাদের মতে, এর জন্য আরো বিস্তর গবেষণার দরকার রয়েছে।

Bootstrap Image Preview