Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৪ শনিবার, মে ২০২৪ | ২০ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

হলুদ বরণ সাজে সেজেছে আক্কেলপুরের বিস্তৃত এলাকা

নিশাত আনজুমান, আক্কেলপুর (জয়পুরহাট) প্রতিনিধিঃ 
প্রকাশিত: ১০ জানুয়ারী ২০১৯, ১২:৪৯ PM
আপডেট: ১০ জানুয়ারী ২০১৯, ১২:৪৯ PM

bdmorning Image Preview


জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার প্রতিটি মাঠ জুড়ে এখন সরিষা ফুলের হলুদ চাদরে ঢাকা পড়েছে বিস্তৃত প্রকৃতি। শীতের শিশির ভেজা সকালে কুয়াশার চাদরে ঘেরা উপজেলার বিস্তীর্ণ প্রতিটি মাঠজুড়ে কেবল চোখে পড়ে সরিষার হলুদ ফুলের দিগন্ত বিস্তৃত প্রকৃতি। প্রান্তর জুড়ে উঁকি দিচ্ছে শীতের শিশির ভেজা সরিষা ফুলের দোল খাওয়া গাছগুলো।

সরিষার সবুজ গাছের হলুদ ফুল শীতের সোনাঝরা রোদে ঝিকিমিকি করছে। এ এক অপরুপ সৌন্দর্য। যেন প্রকৃতি কন্যা সেজেছে 'গায়ে হলুদ বরণ সাজে'। চারপাশের মাঠ জুড়ে সরিষা ফুলের মৌ মৌ গন্ধে মুখরিত ফসলের মাঠ। 

উপজেলার প্রতিটি মাঠে এখন শুধু সরিষা ফুলের হলুদ রঙের চোখ ধাঁধানো বর্ণিল সমরাহ। মৌমাছির গুনগুন শব্দে ফুলের রেণু থেকে মধু সংগ্রহ আর  প্রজাপতির এক ফুল থেকে আরেক ফুলে পদার্পন এ অপরুপ প্রাকৃতিক দৃশ্য সত্যিই যেন মনোমুগ্ধকর এক মূহুর্ত। ভোরের বিন্দু বিন্দু শিশির আর সকালের মিষ্টি রোদ ছুঁয়ে যায় সেই ফুলগুলোকে।

গত কয়েকবছর ধরে সরিষা চাষে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হওয়ায় সরিষা চাষে ঝুঁকে পড়েছেন এ উপজেলার কৃষকেরা। চলতি মৌসুমে এ অঞ্চলে সরিষার বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।

এখন শুধু ভালো ফলনের আশায় উপজেলার কৃষকেরা রাতদিন পরিশ্রম করে যাচ্ছে। কৃষকের পাশাপাশি বসে নেই কৃষি কর্মকর্তারাও। এদিকে চলতি রবিশস্য মৌসুমে কোন প্রকার প্রাকৃতিক দূর্যোগ হানা না দেওয়ায় এবং সরিষা চাষের পরিবেশ অনুকূলে থাকায় সরিষার পাশাপাশি আলু, গম ও ভুট্টার বাম্পার ফলনের সম্ভবনা রয়েছে। গ্রামীণ জনপদের কৃষকরা এই সরিষা যথা সময়ে ঘরে তুলতে পারলে এবং বিক্রয় মূল্য ভাল পেলে বিগত দিনের লোকসান পুষিয়ে ইরি-বোরো ধান চাষে কৃষকদের আগ্রহ বৃদ্ধি পাবে বলে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের কর্মকর্তারা মনে করছেন।

জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলার ১ হাজার ৩শত ৭৫ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। শুরুতেই সরিষা ক্ষেতে পোকামাকড়ের আনাগোনা দেখা দিলেও মাঠ পর্যায়ে সরিষা চাষীদেরকে কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে যথাযথ পরামর্শ ও প্রত্যক্ষ কারিগরি সহযোগিতার কারণে সরিষা ক্ষেত অনেকটা রোগবালাই মুক্ত হওয়ায় বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষকরা।  

যথা সময়ে সরকারি পর্যায় থেকে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের মাঝে মান সম্পূর্ণ বিনামূল্যে সরিষার বীজসহ অন্যান্য কৃষি উপকরণ বিতরণ করা হলেও মাঠ পর্যায়ে বেশ কিছু জমি চাষের উপযোগী না হওয়ায় কিছু কৃষকরা ঠিক সময়ে সরিষা বপন করতে পারেনি। ফলে তারা অন্যান্য রবিশস্য চাষের দিকে ঝুকছেন। আগামী ইরি-বোরো ধান উৎপাদনের প্রস্তুতি হিসেবে প্রান্তিক চাষীরা কিছুটা বাধ্য হয়েই অন্যের জমি বর্গা নিয়ে সরিষা, আলু, গম ও ভোট্টা চাষে অতি আগ্রহী হয়ে উঠেছে। 

এব্যাপারে উপজেলার কানুপুর গ্রামের কৃষক আব্দুর রাজ্জাক জানান, চলতি মৌসুমে আমি তিন বিঘা জমিতে সরিষার আবাদ করেছি। ফলন ভালো হলে প্রতিএকর জমিতে অন্তত ১০ মণ হারে সরিষা উৎপাদন হবে।

এবিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবীদ শহীদুল ইসলাম জানান, এবার রেকর্ড পরিমাণ জমিতে সরিষার চাষ হচ্ছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার সরিষার বাম্পার ফলন হবে ও কৃষক বাড়তি মুনাফা পাবে বলেও মনে করছি। 
 

Bootstrap Image Preview