লিওনেল মেসির খুদে ভক্ত হওয়া যে অন্যায়, তা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে মুর্তজা আহমেদি। তালেবানদের হাতে খুন হওয়ার ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে সে। আফগানিস্তানের গজনিপ্রদেশের জাগুরি গ্রামে দরিদ্র কৃষক পরিবারে জন্ম মুর্তজার। তার শিশুমনে তীব্র প্রভাব ফেলে মেসির জাদুকরী খেলা।
একদিন প্রিয় ফুটবলারের জার্সি পেতে বাবার কাছে বায়না ধরে। তবে অর্থাভাবে তিনি তা কিনে দিতে পারেননি। নিরুপায় হয়ে বিকল্প পথ খুঁজে বের করে মুর্তজা। নীল-সাদা পলিথিনের ব্যাগে বাজার করে নিয়ে আসে বাবা। সেই পলিথিন ব্যাগ সংগ্রহে রাখে সে। একদিন তা দিয়েই তৈরি করে আর্জেন্টাইন সুপারস্টারের ১০ নম্বর জার্সি। এ জার্সি পরে আফগানিস্তানের যুদ্ধবিধ্বস্ত অঞ্চলে ছবি তোলে। সোশ্যাল মিডিয়ার কল্যাণে মুহূর্তেই তা ভাইরাল হয়ে যায়।
ছবিটি তোলপাড় সৃষ্টি করে বিশ্বে। বিষয়টি দৃষ্টিতে পড়ে মেসিরও। এটি ২০১৬ সালের ঘটনা। সেই বছর মুর্তজার স্বাদও পূরণ হয়। কাতারে প্রিয় তারকার সঙ্গে সাক্ষাৎ ঘটে তার। বার্সেলোনার প্রীতি ম্যাচের আগে তাকে কোলে নিয়ে ছবি তোলেন মেসি। খুদে ভক্তকে অটোগ্রাফসংবলিত জার্সি ও ফুটবল উপহার দেন। রাতারাতি বিখ্যাত হয়ে ওঠে সে। সেই খ্যাতিই কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে সাত বছরের শিশুর জন্য।
বিষয়টি চোখবন্দি হয়েছে তালেবানের। এর পর থেকেই মুর্তজাকে খুন করার জন্য হন্যে হয়ে খুঁজছে জঙ্গিগোষ্ঠীর সদস্যরা। তাদের ভাষ্যমতে-বিধর্মী মেসির সঙ্গে ছবি তুলে ইসলামবহির্ভূত কাজ করেছে সে। এটি এ ধর্মে গুরুতর অপরাধ ও অন্যায়। তার বেঁচে থাকার কোনো অধিকার নেই।
ইতিমধ্যে তালেবান সন্ত্রাসীদের কাছ থেকে অসংখ্যবার হুমকি পেয়েছে মুর্তজা। প্রাণ ভয়ে তাকে নিয়ে ঘর ছেড়েছে পরিবার। ভিটেমাটি ছেড়ে নিরুদ্দেশ তারা।