Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৭ শনিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

'যুদ্ধশিশুদের খুঁজে বের করে সঠিক মূল্যায়ন করতে হবে'

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৫ ডিসেম্বর ২০১৮, ০৫:২১ PM
আপডেট: ০৫ ডিসেম্বর ২০১৮, ০৫:২১ PM

bdmorning Image Preview


'নতুন প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের বিস্তৃত ইতিহাস জানে না। যুদ্ধের কথা বললে তারা মনে করে সৈন্য-সৈন্য যুদ্ধ, রাজায়- রাজায় যুদ্ধ। সেটা এক ধরনের যুদ্ধ কিন্তু মুক্তিযুদ্ধে জনগণের সম্পৃক্ততা থাকতে হয়। সম্পৃক্ততা নাই এমন মুক্তিযুদ্ধ আমার জানা মতে বিশ্বের ইতিহাসে নেই। শুধু সেনাবাহিনী দিয়ে দেশ স্বাধীন হয় নাই। বাংলাদেশের অসংখ্য সাধারণ মানুষের আত্মদানের ফল আমাদের আজকের বাংলাদেশ'।  

আজ বুধবার সকালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগ ও জন-ইতিহাস চর্চা কেন্দ্রের যৌথ আয়োজনে জহির রায়হান অডিটোরিয়ামে 'মুক্তিযুদ্ধের জন ইতিহাস' নামক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথাগুলো বলেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান প্রফেসর আব্দুল মান্নান। 

তিনি আরও বলেন, বিশ্বে বাংলাদেশই একমাত্র দেশ যে দেশে বিজয়ের মাস আছে। যে দেশে  ভাষা আন্দোলন আছে এবং একুশে ফেব্রুয়ারী আছে। আমাদের ছাত্ররা মনে করে বাংলা ভাষা না জানা একটা ফ্যাশন। বাংলা ভাষা সম্পর্কে তাদের পরিপক্ক জ্ঞান নেই। তাই বাংলা ভাষার ইতিহাস ও মুক্তিযুদ্ধের  অদ্ভোদয়ের ইতিহাস প্রত্যেকটি পাঠ্যসূচিতে বাধ্যতামূলক রাখা হয়েছে। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের গৌরবের ও সমৃদ্ধির সঠিক ইতিহাস সকলের জানা উচিত।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. হারুনুর রশীদ বলেন, আমাদের ইতিহাস ও ভাষা গৌরবের। যা সবার সামনে তুলে ধরতে হবে তাহলে বাংলাদেশে সঠিক পথে চলবে এবং উন্নয়ন হবে। কেননা বিশ্বের কোন দেশে ৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতার ইতিহাস নেই।

যুদ্ধশিশু গবেষক মোস্তফা চৌধুরী বলেন, যে সকল শিশু মুক্তিযুদ্ধের সময় ধর্ষণের ফলে জন্ম নিয়েছে বাংলাদেশের তাদেরকে জারজ সন্তান বলা হয়। শত্রু সন্তান মনে করা হয়। কিন্তু কানাডাতে তাদেরকে কিছু মানুষ দত্তক নিয়ে নিজেদের সন্তানের মতোই লালন পালন করছে। এখনো দেশে যেসব যুদ্ধশিশু আছে তাদের বয়স প্রায় ৪৬ বছর হয়ে গেছে তাদেরকে আমাদের খুঁজে বের করতে হবে। যদিও তারা লোকলজ্জার ভয়ে নিজেদেরকে আত্মগোপন করে রাখে। সুতরাং আমাদের তাদের খুঁজে বের করে সঠিক মূল্যায়ন করতে হবে।

সেমিনারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ও জন ইতিহাস চর্চা কেন্দ্রের সভাপতি মেজবাহ কামাল বলেন, ইতিহাস চর্চা কে আধুনিক থেকে আধুনিকতর করে জনগণের সামনে নিয়ে আসতে হবে। আজকে যারা আমাদের মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় আছেন তাদের মধ্যে ক'জন  কৃষক মুক্তিযোদ্ধা আছেন, শ্রমিক মুক্তিযোদ্ধা আছেন, নারী মুক্তিযোদ্ধা আছেন? একে একে সব মুক্তিযোদ্ধাই আমাদের ছেড়ে পরপারে পাড়ি জমাবে। কিন্তু তাদের জীবদ্দশায় আমাদের উচিত তাদের কাছ সঠিক ইতিহাস ও অনেক না জানা ইতিহাস তরুণ প্রজন্মের সামনে তুলে ধরা।

সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন,  জানা ইতিহাস চর্চা কেন্দ্রের কার্যনির্বাহী পরিচালক ড. নাজমুন নাহার লাইজু, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও   জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীবৃন্দ।

Bootstrap Image Preview