জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) প্রতিষ্ঠার একযুগ পার হলেও শিক্ষার্থীদের খাবারের কোনো সুব্যবস্থা নেই। নেই কোনো মানসম্পন্ন ক্যান্টিন। অবকাশ ভবনে নিচে বিশ্ববিদ্যালয়ের একমাত্র ক্যান্টিনের অবস্থাও খুবই নাজুক। অস্বাস্থ্যকর খাবারের আয়োজন থাকলেও নেই কোনো ভাতের ব্যবস্থা । ফলে অনাহারে কাটছে শিক্ষার্থীদের জীবন।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ প্রশাসনের অবহেলার কারনে এত বছর পরও বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যান্টিনের উন্নয়ন হয়নি।
সরেজমিনে দেখা যায়, কেন্দ্রীয় ক্যান্টিনে এলোমেলোভাবে পড়ে আছে টেবিল। বসার জন্য কয়েকটা চেয়ার তার মধ্যে কয়েকটি বসার অযোগ্য। অধিকাংশ টেবিলে নেই বসার জন্য কোনো চেয়ার। নষ্ট হয়ে আছে পানির ফিল্টার। ফলে বিশুদ্ধ পানি পান করতে পারছেন না শিক্ষার্থীরা। সকালের নাস্তায় পরেটার ব্যবস্থা থাকলেও তা খাওয়ার অযোগ্য। আর দুপুরে মেলে নিম্নমানের চাল ও ডাল দিয়ে তৈরি খিচুড়ি যা দুপুরের একমাত্র খাবার। ৩৫ টাকা দামের ওই খিচুড়িতে কোনো সবজিও থাকে না।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, সকাল ৮টা থেকে বিকাল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত ক্যাম্পাসে থাকতে হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশে ভালো খাবারের হোটেল না থাকায় একমাত্র ভরসা ক্যান্টিন। এ দুর্বলতার সুযোগ নিচ্ছে ক্যান্টিন ম্যানেজার। নিম্নমানের খাবার পরিবেশন করে ইচ্ছেমতো দাম রাখছে। ফলে অনেকে বাধ্য হয়ে ফুটপাতের খাবারও খেতে হয়। এমনকি ডায়রিয়া, আমাশয়, পেটের পীড়ায়ও আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের গনযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী আল আমিন ইসলাম বলেন, ‘সকালে ৮টার আগে ক্লাস করতে ক্যাম্পাসে আসতে হয়। খুব সকালে মেসে রান্না না হওয়ায় ক্যাম্পাসেই খেতে হয়। কিন্তু আশেপাশে ভালো কোনো হোটেলের ব্যবস্থা না থাকায় এখানেই অস্বাস্থকর পরিবেশে বাধ্য হয়ে খেতে হচ্ছে। প্রশাসন যদি একটু নজর দিত তাইলে হয়তো আমাদের এরকম অবস্থার মধ্যে পড়তে হতো না। সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার আলমও একই কথা বলেন।
জবি উপাচার্য অধ্যাপক মীজানুর রহমান বলেন, ক্যান্টিন ম্যানাজারের সাথে এ বিষয়ে কথা হয়েছে। তার দাবি এখানে অনেকেই পাও খাবার খায়। পাও খাওয়া কমাতে পারলে খাবারের মান উন্নত করা যাবে।
ক্যান্টিনের ম্যানেজার আমজাদ হোসেন বলেন, আমরা চাই ভালো খাবার পরিবেশন করতে কিন্তু নানা প্রতিবন্ধকতায় সেটা হয়ে ওঠে না। বর্তমানে শিক্ষার্থীরাও খেতে কম আসে। আর ছাত্রসংগঠনের নেতারা ফ্রি খায় এটা সবাই জানে। কতজন ফ্রি খায় এবং কারা খায় সেটা বলতে তিনি রাজি হননি।