Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০২ বৃহস্পতিবার, মে ২০২৪ | ১৯ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

১০ হাজার টাকায় চুক্তি; মামলার বাদীই হত্যার অন্যতম পরিকল্পনাকারী

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৭ নভেম্বর ২০১৮, ০৮:১৯ PM
আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০১৮, ১০:২৪ PM

bdmorning Image Preview
ছবিঃ বিডিমর্নিং


ঢাকার আশুলিয়ায় বৃদ্ধ বাবা আকবর হোসেনকে (৭০) বাস থেকে ফেলে দিয়ে মেয়ে জরিনা খাতুনকে (৪৫) হত্যার ঘটনার তদন্তে চাঞ্চল্যকর সব তথ্য বেরিয়ে এসেছে। জানা গেছে পারিবারিক কলহের জের ধরেই শাশুড়ি জরিনাকে হত্যা করার অন্যতম পরিকল্পনাকারী মেয়ে জামাই নূর ইসলাম।

আজ শনিবার (১৭ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিতে পিবিআই সদর দফতরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান পুলিশের তদন্তকারী সংস্থা পিবিআইয়ের উপ মহাপরিদর্শক বনজ কুমার বনজ কুমার মজুমদার।

তিনি বলেন, জরিনা হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলার বাদী ছিলেন নূর ইসলাম। অথচ তিনি নিজেই হত্যা পরিকল্পনাকারীদের একজন। এই পরিকল্পনায় আরও জড়িত ছিলেন নুর ইসলামের মা আমেনা বেগম এবং মামা স্বপন। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ১০ হাজার টাকার চুক্তিতে টাঙ্গাইলগামী একটি মিনিবাস ও বাসের ড্রাইভার, কন্ট্রাক্টর ও দুই হেলপারকে ভাড়া করে। বাসটি আগে থেকেই আশুলিয়ার শিমুলতলী বাসস্ট্যান্ডে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। ওই বাসে জরিনা ও তার বাবাকে তুলে দেন নুর ইসলাম। পরে বাস থেকে নানা শ্বশুরকে ফেলে দিয়ে শাশুড়িকে হত্যা করে।

শুক্রবার (১৬ নভেম্বর) রাতে আশুলিয়ার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ঘটনার পরিকল্পনাকারী নূর ইসলাম (২৯) ও তার মা আমেনা বেগম (৪৮) এবং মামা স্বপন (৩৫) কে গ্রেফতার করে তদন্তকারী সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। বাসটিও জব্দ করা হয়। এই ঘটনায় আরও ৪ আসামি এখনও পলাতক রয়েছে। তাদের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে। তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

তিনি আরো জানান, ৫ বছর আগে মামা স্বপনের মধ্যস্থতায় জরিনার মেয়ে রোজিনা ও নূর ইসলামের বিয়ে হয়। এরপর থেকে তাদের মধ্যে দাম্পত্য কলহ লেগেই থাকতো। এই বিবাদ মেটাতে প্রায় জরিনা আশুলিয়ায় আসতেন। সম্প্রতি কলহ প্রকট আকার ধারণ করে। এজন্য নূর ইসলাম ও তার মা আমেনা বেগম ও মামা স্বপনের সঙ্গে বিষয়টি আলোচনা করে। তারা পরিকল্পনা করে জরিনাকে এমন শিক্ষা দিতে হবে যেন সে আর তাদের বাড়িতে না আসে। পরিকল্পনা অনুযায়ী, ঘটনার দিন দুপুরে সিরাজগঞ্জ থেকে নিজের বাড়ি থেকে মেয়ের বাড়ি আশুলিয়ায় আসেন জরিনা ও তার বাবা আকবর আলী মন্ডল। খাওয়া দাওয়া শেষ করে বিকাল ৫টার দিকে তারা বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেন। জামাই নূর ইসলাম তাদেরকে টাঙ্গাইলগামী একটি মিনিবাসে তুলে দেন। এই বাসটি ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে আগেই ঠিক করে রেখেছিলেন। এর কিছুক্ষণ পরই বাসের হেলপার ও সুপারভাইজাররা আকবর আলীকে মারধর করে বাস থেকে ফেলে দেয়। এরপর জরিনাকে তারা হত্যা করে। পরে আকবর বিষয়টি নূর ইসলাসকে জানালে সে পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থল থেকে ৫০০ গজ দূর থেকে জরিনার মরদেহ উদ্ধার করে।

বাসের ভেতরে জরিনাকে কীভাবে হত্যা করা হয়-জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন এখনও আমরা হাতে পাইনি। এছাড়া সরাসরি হত্যায় অংশ নেওয়া চারজনকে গ্রেফতার করা যায়নি। শিগগিরই বাকি চার আসামিকে গ্রেফতার করা সম্ভব হবে। তবে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে শ্বাসরোধ করে জরিনাকে হত্যা করা হয়েছে।’

উল্লেখ্য, গত ৯ নভেম্বর জরিনা খাতুন এবং তার ৭০ বছর বয়সী বাবা আকবর হোসেন সিরাজগঞ্জ যাওয়ার জন্য আশুলিয়া থেকে বাসে উঠেছিলেন। বাসে যাত্রীবেশী দুর্বৃত্তরা তাদের মারধর করে এবং বাবা আকবরকে জোর করে বাস থেকে নামিয়ে দেয়। পরবর্তীতে বৃদ্ধ বাবা বিষয়টি পুলিশকে জানালে পুলিশ রাস্তার পাশ থেকে জরিনার লাশ উদ্ধার করে।

Bootstrap Image Preview