Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০২ বৃহস্পতিবার, মে ২০২৪ | ১৯ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

ট্রাম্পের ভাগ্য নির্ভর করেছে দুটি বিষয়ের উপর

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৬ নভেম্বর ২০১৮, ১২:৩০ PM
আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০১৮, ১২:৩০ PM

bdmorning Image Preview


প্রতি চার বছর পর পর যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিত হয় মার্কিন মধ্যবর্তী নির্বাচন অনুষ্টিত হয়। বাংলাদেশ সময় মঙ্গলবার রাতে শুরু হচ্ছে এই মধ্যবর্তী নির্বাচন। এই নির্বাচনকে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভবিষ্যৎ কি হবে তা বহিঃ প্রকাশের হিসেবে মনে করেছে। আর মাত্র কয়েক ঘণ্টা দূিরে থাকা এই মধ্যবর্তী নির্বাচন তাই ট্রাম্পের অগ্নিপরীক্ষাও বলতে পারে। 

ট্রাম্পের এই মধ্যবর্তী নির্বাচনের ফলাফল দুটি বিষয়ের উপর নির্ভর করছে। আর তা হলো ক্যারাভান আর কাভানা। ক্যারাভান মানে, সম্প্রতি মধ্য আমেরিকা থেকে মেক্সিকোয় আছড়ে পড়া শরণার্থীদের ঢেউ। যে ঢেউ মার্কিন সীমান্তেও পৌঁছেছে। আর কাভানা হলেন ব্রেট কাভানা। যৌন কেলেঙ্কারিতে নাম জড়ানোর পরেও যাকে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।

যদিও ভোটের আগে দু’টি ক্ষেত্রেই ব্যাপক রদ-বদল হয়েছে। কূটনীতিকদেরই একাংশ তবু মানছেন, এখনও সমান তাৎপর্যপূর্ণ ক্যারাভান ও কাভানা।

মেক্সিকো থেকে আসা শরণার্থীদের বিরুদ্ধে সম্প্রতি মার্কিন নিরাপত্তাবাহিনীকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছোড়ার অভিযোগ উঠেছিল। পাল্টা হুমকি দিয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছিলেন, ‘ওদের গুলি করে মারা উচিত।’

কিন্তু ভোট বলে কথা! যে কারণে দিন দুয়েকের মধ্যে সুর নামিয়ে ট্রাম্পকে বলতে হল, দেশে সুশাসন বজায় রাখতে উচ্ছৃঙ্খল শরণার্থীদের গ্রেপ্তার করলেই হবে। তবে ডেমোক্র্যাটরা আমেরিকার সীমান্ত তুলে দিতে চাইছে বলে রবিবারও অভিযোগ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট । এ সব বক্তব্যে তার দলের কতটা লাভ হবে, সেটা অস্পষ্টই।

এ দিকে, এফবিআই-এর ক্লিনচিট এবং সিনেটে রিপাবলিকানদের ভোটে কাভানা ইতিমধ্যেই সুপ্রিম কোর্টে পৌঁছে গিয়েছেন। ঠিক যেমন চেয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট। বিচারপতি নিয়োগের সাংবিধানিক অধিকার সিনেটের হাতে এবং সেখানে এখনও পর্যন্ত ট্রাম্পের দলেরই পাল্লা ভারি। তবে মঙ্গলবারের ভোটের পর কি হবে তা বলা মুশকিল।

আজ সিনেটের ১০০টি আসনের মধ্যে ভোট হবে ৩৫টি আসনে। আর হাউস অব রিপ্রেজ়েন্টেটিভসে ভোট ৪৩৫টি আসনের সব ক’টিতে। হাউসের দখল নিতে হলে বিরোধী পক্ষকে অন্তত ২৩টি আসনে জিততেই হবে। ৩০ অক্টোবর থেকে ৩ নভেম্বরের মধ্যে হওয়া বেশ কয়েকটি জনমত সমীক্ষা বলছে, ২২৫টি আসনে জিতে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে চলেছে ডেমোক্র্যাট দল। তবে সমীক্ষকরা এখনও ১৩টি আসন যে কারও পক্ষে যেতে পারে বলে মনে করছেন। তাই ট্রাম্পকে চাপে ফেলার মতো ‘নীল ঝড়’ উঠবেই, নিশ্চিত করতে পারছেন না অতি বড় ডেমোক্র্যাট-সমর্থকও।

মার্কিন রাজনীতির ইতিহাস বলছে, মধ্যবর্তী নির্বাচন প্রায়শই শাসক দলের বিরুদ্ধে যায়। এবারও তেমন হলে চলতি মেয়াদের বাকি দু’বছর কিন্তু ট্রাম্পের পক্ষে কঠিন হতে চলেছে বলেই মত কূটনীতিকদের। সোমবার ট্রাম্পের মন্ত্রণাদাতারা বৈঠক করে বুঝিয়েছেন, কংগ্রেস বা সিনেটে রিপাবলিকানরা হারলে তার বিভিন্ন নীতির ভবিষ্যৎ কী হতে পারে।

বাড়তে থাকা বন্দুকবাজের দৌরাত্ম্য বা ভোটের ঠিক মুখে ডেমোক্র্যাটদের ঠিকানায় পার্সেল বোমা পাঠানোর ঘটনায় রিপাবলিকানরা যথেষ্ট চাপের মুখেই বলে মনে করা হচ্ছে। মার্কিন সংবাদমাধ্যমে কাজ করা সৌদি সাংবাদিক জামাল খাশোগি খুনের তদন্তে ট্রাম্পের ‘গা-ছাড়া মনোভাব’ নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। রিপাবলিকান ন্যাশনাল কমিটির চেয়ারপার্সন রোনা ম্যাকড্যানিয়েল দেশের ‘অর্থনৈতিক উন্নয়ন’কেই তুরুপের তাস হিসেবে দেখাতে চাইছেন। তার কথায়, ‘গত দু’বছরে দেশে কী হয়েছে, সে দিকে তাকিয়েই কাল লাইনে দাঁড়াবেন নাগরিকরা। তারাই বলছেন, এখন হাতে অর্থ এসেছে। চাকরি ফিরেছে।’

দু’দলের সামনে এখন একটাই সমস্যা। যাদের জন্য এত প্রচার প্রচারণা সেই ভোটাররা কাল বুথে পৌঁছবেন তো? কেননা যুক্তরাষ্ট্রে ২০১৪-র মধ্যবর্তী নির্বাচনে মাত্র ৩৭ শতাংশ ভোট পড়েছিল। 

 

Bootstrap Image Preview