হীরার চেয়েও মূল্যবান পাথর পান্না। এর চারপাশ থেকে ঠিকরে বের হয় জ্যোতি। বিশ্বের সবচেয়ে বেশি মূল্যবান সবুজ পাথর হিসেবে পরিচিত পান্না প্রকৃতিতে সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায় দক্ষিণ আমেরিকার দেশ ব্রাজিল, কলম্বিয়ার মুজো এবং আফ্রিকার দেশ জম্বিয়ার খনিগুলোতে।
জম্বিয়ার একটি খনিতে এবার পাওয়া গেছে পাঁচ হাজার ৬৫৫ ক্যারেটের একটি ক্রিস্টাল পান্না। স্বচ্ছ এ পান্নাটির ওজন এক কেজি ১০০ গ্রাম! যদিও এটি এ যাবতকালের সবচেয়ে বড় পান্না নয়। জম্বিয়ার খনি থেকে উত্তোলন করা পান্নাটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘ইনকালামু’। জাম্বিয়ার স্থানীয় ভাষায় ইনকালামু অর্থ সিংহ।
পান্না প্রকৃতিতে ষড়ভুজাকৃতির কেলাস আকারে পাওয়া যায়। বেশির ভাগ পান্নাই ঘোলাটে বর্ণের এবং খুঁতযুক্ত। এ কারণে নিখুঁত ও সুন্দর পান্না খুবই দামি রত্ন।
পান্নার একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো এই রত্ন পাথরটি শুধু অভ্র শিলাস্তরে বা চুনাপাথরে পাওয়া যায়। এসব দিক বিবেচনায় জাম্বিয়ার খনিতে পাওয়া এই পান্নাটি সবাইকে রীতিমতো অবাক করেছে। রত্ন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই রত্নের স্বচ্ছতা অতুলনীয়, সোনালি সবুজ রঙ এ পান্নাটির।
জেমফিল্ডের রত্ন বিশেষজ্ঞ ইলেনা বাসাগলিয়া বলছেন, জাম্বিয়ার উচ্চ মানের পান্নার চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। এ কারণে জাম্বিয়ার এ পান্না ঘিরে বাড়ছে মানুষের উত্সাহ, বিশেষ করে ইউরোপের বড় বড় ব্র্যান্ডগুলোর কাছে। জাম্বিয়ার পান্নার সমৃদ্ধ রঙ এবং চমত্কার স্বচ্ছতা রয়েছে। বাসাগ্লিয়া বলেন, এই সংস্থাটির উত্তোলন করা পান্নাগুলোর মধ্যে ইনকালামু’ই সবচেয়ে বড়। এর আগে ২০১০ সালে অন্য একটি সংস্থা ‘এলিফ্যান্ট’ নামের ৬,২২৫ ক্যারেটের একটি বিশাল পান্না উত্তোলন করেছিল।
সংস্থাটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, নভেম্বরে সিঙ্গাপুরে নিয়ে টুকরো টুকরো করে নিলামে বিক্রি করা হবে ইনকালামু পান্নাটিকে। আপাতভাবে এ পান্নাটির মূল্য ধার্য করা হয়েছে বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় সাড়ে ১৭ কোটি টাকা।
পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি পান্না উত্পাদনকারী দেশ হিসেবে বিশেষ পরিচিত জাম্বিয়া। উরাল পর্বতমালার টকোভোয়ার আভ্রখনিতেও পাওয়া যায় পান্না। পান্না সাধারণত কেলাস আকারে পাওয়া যায়। বেরিলিয়াম অ্যালুমিনোসিলিকেট এর স্ফটিকের মধ্যে অতি অল্প মাত্রায় ক্রোমিয়াম বা লোহার খাদ থাকলে এ রকম রঙের কেলাস হয়। কিন্তু উরাল পর্বতমালার আভ্রখনিতে প্রাপ্ত পান্না বেরিলিয়ামের আকরিক ক্রিসোবেরিল ও ফেনাকাইটের সঙ্গে মিশ্রিত অবস্থায় থাকে।