মধ্য আমেরিকা থেকে মেক্সিকো হয়ে যুক্তরাষ্ট্রের দিকে ধাবমান অভিবাসীপ্রত্যাশীদের ঠেকাতে সীমান্তে ৫ হাজার ২০০ সেনা পাঠাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। জেনারেল টারেন্স ও’শাফনেসি জানিয়েছেন, এসব সেনারা অভিবাসীপ্রত্যাশীদের বিরুদ্ধে ‘অপারেশন ফেথফুল প্যাট্রিয়ট’ পরিচালনা করবে। মূলত এ অভিযানে টেক্সাস, আ্যারিজোনা ও ক্যালিফোর্নিয়ায় জোর দেওয়া হবে।
অভিবাসীপ্রত্যাশীরা এখনো যুক্তরাষ্ট্র থেকে এক হাজার মাইল দূরে অবস্থান করছে।
তারা মেক্সিকোর ভেতর দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের দিকে এগিয়ে চলেছে- এ খবর প্রকাশের পর সীমান্তে সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সোমবার প্রশাসনটির পক্ষ থেকে এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছে।
রয়টার্স জানিয়েছে, মেক্সিকো সীমান্তে প্রত্যাশার চেয়েও বেশি সেনা মোতায়েন করতে যাচ্ছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর মাধ্যমে ৬ নভেম্বরের মধ্যবর্তী নির্বাচনের আগে অভিবাসন বিষয়ে নিজের অবস্থান আরও কঠোর করলেন তিনি।
অতিরিক্ত এ সেনা মোতায়েনের পেছনে ট্রাম্প প্রশাসনের মূল লক্ষ্য হলো বর্তমানে মেক্সিকো সীমান্ত দিয়ে যে সব অভিবাসী যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করছে তাদের ওপর নজরদারি জোরদার করা।
যুক্তরাষ্ট্রের নর্দান কমান্ডের প্রধান জেনারেল টেরেন্স ও’শনেসি জানিয়েছেন, এরই মধ্যে ৮০০ মার্কিন সেনা টেক্সাস সীমান্তের পথে রয়েছে।
তিনি আরো বলেন, কিছু সেনা সশস্ত্র অবস্থায় থাকবে। যদিও তারা কারা সে বিষয়টি নিশ্চিত নয়।
যুক্তরাষ্ট্রের কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সেনারা সীমান্ত প্রহরা দেবে না। তারা শুধু তাঁবু ও ব্যারিকেড তৈরির মতো পার্শ্ব ভূমিকা পালন করবে।
এর আগে ২০১৬ সালে নির্বাচনী প্রচারণায় ট্রাম্প অবৈধ অভিবাসনের বিরুদ্ধে প্রচারণা চালান। আর আগামী সপ্তাহের মধ্যবর্তী নির্বাচনের আগে তিনি নতুন করে প্রচারণায় অভিবাসন বিষয়ক ইস্যুকে ব্যবহার করছেন। যদি মধ্যবর্তী ওই নির্বাচনে প্রতিনিধি পরিষদ বা সিনেটের নিয়ন্ত্রণ হারায় রিপাবলিকানরা তাহলে ট্রাম্পকে তার পলিসি বাস্তবায়ন করা খুবই কঠিন হয়ে পড়বে। তার ক্ষমতার মেয়াদ এখনও দু’বছর বাকি আছে।
যদি এ সময়ে প্রতিনিধি পরিষদ বা সিনেটের নিয়ন্ত্রণ বিরোধীদের হাতে চলে যায় তাহলে তিনি সহজে কোনো বিল পাস করাতে পারবেন না। সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে এবং অক্টোবরের শুরুর দিকে পিউ রিসার্স সেন্টার দুটি আলাদা জরিপ পরিচালনা করে।
তাতে দেখা যায়, শতকরা ৭৫ ভাগ রিপাবলিকান ভোটার মনে করছেন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য বড় একটি সমস্যার কারণ অবৈধ অভিবাসী। অন্যদিকে ডেমোক্রেট ভোটারদের শতকরা মাত্র ১৯ ভাগ এমনটা মনে করেন।
সীমান্তে সেনা মোতায়েনের বিষয়টি কংগ্রেসে ট্রাম্পের সমর্থকরা প্রশংসা করলেও আমেরিকান সিভিল লিবার্টিস ইউনিয়ন একে একটি রাজনৈতিক হঠকারিতা হিসেবে আখ্যায়িত করেছে।
সিভিল লিবার্টিস ইউনিয়ন বর্ডার রাইটসের পলিসিউ পরামর্শক শ ড্রেক জানান, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই সিদ্ধান্তটি মধ্যবর্তী নির্বাচনের আগে নেয়ার কারণ হচ্ছে এর মাধ্যমে তিনি অভিবাসন বিরোধী অ্যাজেন্ডা পূরণ করতে চান।
এ বিষয়ে প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প সোমবার এক টুইট বার্তায় জানান, সেনারা অভবাসীদের আসা অপেক্ষা করছে।
অনেক অসাধু চক্রের সদস্য এবং খারাপ মানুষ দক্ষিণাঞ্চলীয় সীমান্ত দিয়ে দেশে প্রবেশ করছে। দয়া করে আপনারা ফিরে যান। আপনি আইনী প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে না আসলে যুক্তরাষ্ট্রে আপনাদের রাখা হবে না। এটা আমাদের দেশের জন্য বহিরাক্রমণের সামিল এবং আমাদের সেনারা এটা প্রতিরোধে অপেক্ষা করছে।