লায়ন এয়ার বোয়িং ৭৩৭ বিমানটি ১৮৯ জন যাত্রী নিয়ে ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জার্কাতা থেকে উড্ডয়নের কিছুক্ষণের মধ্যে সমুদ্রে বিধ্বস্ত হয়েছে। উড্ডয়নের কিছুক্ষণের মধ্যে কন্ট্রোল রুমের সাথে বিমানটির যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। সর্বশেষ দেখা যায় বিমানটি সমুদ্রে পড়ে গেছে।
তবে বিমানটিতে থাকা কেউ বেঁচে আছে কিনা - তা জানা যায় নি। ফ্লাইট জেটি ৬১০ নিয়মিত ফ্লাইট যেটা জার্কাতা থেকে পেংকাল পিনাং যাতায়াত করে।
ইন্দোনেশিয়ার উদ্ধার ও অনুসন্ধান সংস্থা সোমবার এ কথা জানায়। উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে ঘোষণা করা হয়েছে। খবর এএফপি’র।
উদ্ধার অভিযান পরিচালক বামবাং সূর্য অজি সাংবাদিকদেও বলেন, ‘আমার ধারণা কেউ বেঁচে নেই, যেসব মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে সেগুলোর কোনোটিই অক্ষত নয়। দীর্ঘ সময় পার হওয়ার পর ১৮৯ জনের মৃত্যুর কথা জানা গেছে।
আজ সোমবার ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তার বিমানবন্দর থেকে ১৮৯ জন যাত্রী নিয়ে ওড়ার অল্প সময় পর সাগরে বিধ্বস্ত হয় উড়োজাহাজটি। কারও বেঁচে থাকার সম্ভাবনা নেই বলে মনে করা হচ্ছে। বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স ৮ মডেলের উড়োজাহাজটি একবারেই নতুন।
কী ঘটেছিল?
ফ্লাইট জেটি ৬১০ স্থানীয় সময় সোমবার সকাল ৬:২০ মিনিটে উড্ডয়ন করে। বিমানটি দেপাতি আমির বিমানবন্দরে এক ঘন্টা পর অবতরণ করার কথা ছিল।
কিন্তু ১৩ মিনিট পর কর্তৃপক্ষ বিমানটির সাথে যোগাযোগ হারিয়ে ফেলে।
কর্তৃপক্ষ একটা সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছে বিমানটিতে ১৭৮জন প্রাপ্তবয়স্ক, তিনজন শিশু, দুইজন পাইলট এবং পাঁচজন কেবিন ক্রু ছিল।
ইন্দোনেশিয়ার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার প্রধান জানিয়েছেন ঐ বিমান থেকে মানুষের ব্যবহার করা ব্যক্তিগত জিনিসপত্র সাগরে ভাসতে দেখা গেছে।
ইন্দোনেশিয়ার ন্যাশনাল সার্চ অ্যান্ড রেসকিউ এজেন্সির মুখপাত্র ইউসুফ লতিফ বিমানটি বিধ্বস্ত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। লায়ন এয়ার ইন্দোনেশিয়ায় স্বল্প বাজেটের বিমান পরিবহন সংস্থা হিসেবে পরিচিত। দুর্ঘটনাকবলিত বিমানটি বোয়িং ৭৩৭ মডেলের বলে জানা গেছে। বিমানটি ২০১৬ সাল থেকে বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এবছরের আগস্ট মাস থেকে একে লায়ন এয়ারে সংযুক্ত করা হয়।
সংস্থাটির প্রধান নির্বাহী এডওয়ার্ড সিরাইট বলেন, ‘এই মুহূর্তে কোনও মন্তব্য করতে পারছি না। আমরা যাবতীয় তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা করছি।’
এর আগে, ২০১৩ সালে লায়ন এয়ার ফ্লাইট ৯০৪ সাগরে বিধ্বস্ত হয়। এতে ১০৮ যাত্রী বেঁচে ফিরলেও ২০০৪ সালে লায়ন ফ্লাইটের ৫৩৮ বিমান বিধ্বস্ত হয়ে ২৫জন নিহত হয়।
যাত্রীদের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা কতটুকু তা বলে দিচ্ছে তাদের ব্যবহৃত এই জিনিসগুলো।
উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছে দেশটির সেনাবাহিনীসহ উদ্ধারকারী দল।
অথচ কী নির্ভার হয়েই না বিমানে ওঠেছিলেন তারা। তারা জানতো না কয়েক মিনিট পরেই কি ঘটতে যাচ্ছে তাদের সঙ্গে।
জাভা সাগরের নীল জলে ভাসছে বিধ্বস্ত বিমানটির অংশবিশেষ।
প্রায় ১২ ঘণ্টা সাগরের জলে ডুবে থাকা বিমানটির কেউ যে বেঁচে নেই সেটা সহজেই অনুমান করা যায়।প্রিয়জন হারিয়ে শোকের ভার বহন করতে পারছেন না স্বজনরা। এ কান্না, এ চোখের জল কি দিয়ে মুছবে। কোনো মা হয়ত হাত তুলে সৃষ্টিকর্তার কাছে ফরিয়াদ করছেন তার সন্তান যেন বেঁচে থাকে।
এখনও মরদেহ পাওয়া না গেলেও সাজিয়ে রাখা হচ্ছে লাশ তুলবার ব্যাগ। কারো কারো এভাবেই হয়ত প্রিয়জনের হাত ধরে বহুদূর যাওয়ার কথা ছিল।