চীনের এক রসুনচাষীর স্বপ্ন ছিল তিনি কোনো একদিন বিমান ওড়াবেন। কিন্তু যখন বুঝতে পারলেন যে, তার সে স্বপ্ন পূরণ হওয়ার নয়, তখন নিজেই একটি বিমান বানানোর সিদ্ধান্ত নেন। শুধু সিদ্ধান্ত নিয়েই থেমে থাকেননি ঝু উয়ে নামের ওই চাষী। তার বানানো বিমানটির নির্মাণ কাজ প্রায় শেষের পথে। খবর চ্যানেল নিউজ এশিয়ার।
গণমাধ্যমের খবরে জানা গেছে, এয়ারবাস এ৩২০ মডেলের বিমানের পুরো রেপ্লিকা নির্মাণের কাজ অল্প বাকি আছে। চীনের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে গমের জমিঘেরা একটি জায়গার ওপর তিনি এ বিমানটি তৈরি করছেন।
মাধ্যমিকের গণ্ডিও পার হতে পারেননি ঝু। এর আগেই পেঁয়াজ ও রসুনের চাষাবাদ শুরু করেন তিনি। পরে অবশ্য কাইইউয়ানের একটি শহরের কারখানায় ওয়েল্ডিংয়ের (ঝালাই) কাজ শুরু করেন। তবে গত বছর তিনি উপলব্ধি করেন, বিমান ওড়ানোর তার স্বপ্ন হয়তো কখনই পূরণ হবে না।
বার্তা সংস্থা এএফপিকে ঝু বলেন, আমি এখন মাঝবয়সী ও বুঝতে পারি আমি একটি বিমান কিনতেও পারব না কিন্তু আমি একটি বানাতে পারব।
তবে বিমান বানাতে গেলে খরচ যে কম নয় সেটিও জানতেন ঝু। তাই তিনি তার সঞ্চয়ের ২৬ লাখ ইউয়ানের বেশি (৩ কোটি ১৭ লাখ ৯০ হাজার টাকা) অর্থ বিমান নির্মাণে বিনিয়োগ করেন। ওই অর্থ দিয়ে এয়ারবাস ৩২০ মডেলের বিমানের মূল সাইজের চেয়ে এক-অষ্টমাংশ ছোট একটি খেলনা মডেলের বিমান তৈরি শুরু করেন ঝু।
এরপর তিনি এয়ারবাসের ডাইমেনশন পরিমাপ করেন এবং অনলাইনে ছবি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ডেটা স্ট্রাকচার, পাখা, ককপিট, ইঞ্জিন ও লেজ তৈরি করেন। এ বিমানটি তৈরি করতে তিনি ৬০ টন স্টিল (ইস্পাত) ব্যবহার করেন। আর ঝু’র এ পুরো কর্মযজ্ঞে তার মতোই ৫ জন বিমানপাগল ও একাধারে শ্রমিক তাকে সাহায্য করেছে। ঝু বলেন, এর মধ্য দিয়ে তারা যেমন আয় করছেন তেমনি তাদের স্বপ্নও পূরণ হচ্ছে।
তবে অদূর ভবিষ্যতে তাদের হাতে নির্মিত এ এয়ারবাসটি ওড়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। আপাতত এটিকে একটি রেস্তোরাঁ বানানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
ঝু তার বিমানে সবশেষ একটি স্বনির্মিত ককপিট সংযোজন করেছেন যেটির সঙ্গে রয়েছে রেপ্লিকা ফ্লাইটের যন্ত্রপাতি ও বিমানে ওঠার সিঁড়ি।
ঝু বলেন, আমরা একটি লাল গালিচা বিছিয়ে দেব, যাতে এখানে খেতে আসা সবাই নিজেদের একটি রাষ্ট্রের প্রধান মনে করতে পারেন। চীনা এ কৃষক বলেন, তার বিমানে ভোজনরসিকদের জন্য ৩৬টি প্রথম শ্রেণীর চেয়ার রয়েছে। তবে তার রেস্তোরাঁয় হ্যামবার্গার ও ফ্রেঞ্চ ফ্রাই নাকি রেগুলার চাইনিজ ফুড পরিবেশন করা হবে সেটি নিয়ে এখনও দ্বিধার মধ্যে আছেন ঝু। যদিও ঝু’র আশা এ রেস্তোরাঁ ভোজনরসিকদের চাহিদা পূরণ করবে।