ভারতের কুলটি নামের আদিবাসী সমাজের স্ত্রীরা স্বামীদের ধরে ধরে পেটান। তবে প্রতিদিন নয়, কেবল দুর্গা পূজার নবমীর দিন।
এদিন স্ত্রীদের সঙ্গে লড়াই বাঁধে স্বামীদের। তখন মা দুর্গার রূপ নিয়ে স্ত্রীরা অসুররূপী স্বামীকে যুদ্ধে পরাজিত করেন। তাদের ধরে আচ্ছামত পেটান।
পূজার নবমীর দিন এই অদ্ভুত কাণ্ড দেখতে পাওয়া যায় নিয়ামত পুরের সিংরাই মারাণ্ডির মন্দিরে। কুলটির আদিবাসী সমাজের ধর্মীয় বাবা সিংরাই মারাণ্ডির নির্দেশেই দুর্গা পূজায় এই রীতি রেওয়াজ চলে আসছে বহু বছর ধরে।
মা দুর্গার মূর্তির সামনে প্রথমে সিংরাই বাবা ও তার স্ত্রী দুলালী অস্ত্র নিয়ে লড়াই শুরু করেন। দুলালীর কাছে পরাস্ত হন সিংরাই। তারপরে আদিবাসী ভক্তরা এক এক করে নেমে পড়েন যুদ্ধে। সিংরাই মারাণ্ডির নির্দেশেই নারী ভক্তদের হাতে এদিন প্রহৃত হন পুরুষ ভক্তরা।
সিংরাই মারাণ্ডির নিজের মূর্তি রয়েছে কুলটির নিয়ামতপুরের ওই আশ্রমে। সারা বছর সিংরাইকে শিবের অবতার রূপে পূজা করেন ভক্তরা। অথচ সেই জীবন্ত দেবতা অসুরের রূপ নেয় নবমীর দিন৷
এই আদিবাসী সমাজেও দেখা মেলে কুলটির নিয়ামতপুরে দুর্গা পূজা। কুলটির আদিবাসী সমাজের গুরু সিংরাই বাবা নিজে আশ্রম গড়ে হিন্দু দেবদেবীদের পুজোআর্চা করে আসছেন ৩০ বছর ধরে।
আদিবাসী ভক্তরা নিজেরাই নিজেদের মত করে দুর্গা পূজা করেন। পূজার প্রতিষ্ঠাতা আদিবাসী গুরু সিংরাই বাবা আদিবাসী ভাষায় রূপান্তরিত করেছেন চণ্ডীপাঠ। আদিবাসী দেবতা মারাংবুরুর পূজা হয় ঠিক যে নিয়মে সেই নিয়মেই দুর্গা পূজা হয় কুলটির আদিবাসী পাড়ায়। সপ্তমী, অষ্টমী, নবমী ও দশমীর চার দিনে জমজমাট থাকে নিয়ামতপুরে আদিবাসীদের আশ্রম। মজার ব্যাপার হচ্ছে দুর্গা পূজার জন্য কোনো ব্রাহ্মণ বা পুরোহিতকে ডাকা হয় না।