যুক্তরাষ্ট্রের ওপর ঘূর্ণিঝড় ফ্লোরেন্সের আঘাতের এক মাস না পেরোতেই আছড়ে পড়তে যাচ্ছে ঘূর্ণিঝড় মাইকেল।নিরাপত্তার স্বার্থে ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। তবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বললেন, প্রচণ্ড শক্তিশালী ফ্লোরিডার আঘাতও মোকাবেলায় প্রস্তুত যুক্তরাষ্ট্র।
নর্থ ও সাউথ ক্যারোলাইনায় গত মাসের মাঝামাঝিতে আঘাত করে ঘূর্ণিঝড় ফ্লোরেন্স। মূল ভূখণ্ডে ঝড়টি আছড়ে পড়ার আগে এর তীব্রতা অনেকটা কমে গিয়েছিল। তার পরও দুর্যোগকবলিত এলাকায় ৪০ জন নিহত হয়। এ ছাড়া সেখানে বন্যা হয়েছে, পাশাপাশি ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতিও হয়েছে।
ফ্লোরিডার গভর্নর রিক স্কট ঘূর্ণিঝড় মাইকেলকে ‘দানবীয়’ অ্যাখ্যা দিয়ে লোকজনকে কর্তৃপক্ষের সতর্কবার্তার প্রতি মনোযোগী হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। এ অঙ্গরাজ্যের তিন লাখ ৭০ হাজারের বেশি মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরে যেতে বলেছে কর্তৃপক্ষ। স্কুল ও সরকারি দপ্তরগুলো সপ্তাহজুড়ে বন্ধ রাখার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু অল্পসংখ্যক মানুষ এ সতর্কবার্তায় সাড়া দিয়েছে বলে কর্তৃপক্ষের ধারণা। সাধারণ মানুষের প্রতিক্রিয়া যেমনই হোক, পরিস্থিতি মোকাবেলায় ফ্লোরিডা ন্যাশনাল গার্ডের আড়াই হাজার সদস্যকে সার্বক্ষণিক প্রস্তুত রেখেছেন গভর্নর। এ ছাড়া ফ্লোরিডার পাশাপাশি অ্যালাবামা ও জর্জিয়ায় জারি করা হয়েছে জরুরি অবস্থা।
ঘূর্ণিঝড়ের কারণে সৃষ্ট বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ১৩০ মাইল। ঝড়ের অবস্থান সম্পর্কে মায়ামিভিত্তিক ন্যাশনাল হারিকেন সেন্টার (এনএইচসি) জানায়, ঘূর্ণিঝড়ের মূল কেন্দ্রটি স্থানীয় সময় গত মঙ্গলবার দিবাগত রাত ২টায় উপকূলীয় অ্যাপালাশিকোলা শহর থেকে ১৭০ মাইল দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল। এরই মধ্যে সেটির তীব্রতা ৪ মাত্রায় উঠে গেছে এবং সেটিকে ‘চরম বিপজ্জনক’ ঘোষণা করা হয়েছে। এ মাত্রার ঝড়ে বাতাসের গতি ঘণ্টায় ১৫৬ পর্যন্ত হতে পারে বলে সংস্থাটি জানায়। এ ঝড়ের বর্তমান তীব্রতা বজায় থাকলে ৯ থেকে ১৩ ফুট পর্যন্ত উঁচু জলোচ্ছ্বাস হতে পারে, অত্যন্ত দৃঢ়ভাবে নির্মিত বাড়িঘরেও এ ঝড় ক্ষতি করতে পারে, গাছপালা উপড়ে পড়তে পারে এমন আশঙ্কা করা হচ্ছে। তবে আশার কথা হচ্ছে, মূল ভূখণ্ডে আছড়ে পড়ার পরই সেটা দুর্বল হয়ে যেতে পারে।
আসন্ন দুর্যোগ মোকাবেলায় সব ধরনের প্রস্তুতি আছে, গত মঙ্গলবার সাংবাদিকদের এমন বার্তা দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
নর্থ ও সাউথ ক্যারোলাইনার পর এবার ফ্লোরিডা ঘূর্ণিঝড়ে আক্রান্ত হতে যাচ্ছে। তবে এখানেই শেষ নয়। আবহাওয়াবিদরা পূর্বাভাস দিয়েছেন, উপকূলের ৩০০ মাইল এলাকা বর্তমানে ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।