Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৯ সোমবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১৫ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

ওড়িশার রাজার করুণ পরিনতি, শেষ জীবনে বেঁচে ছিলেন গ্রামবাসীর দয়ায়

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৯ অক্টোবর ২০১৮, ০৮:০৯ PM
আপডেট: ০৯ অক্টোবর ২০১৮, ০৮:০৯ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত ছবি


রাজার সেবায় এক সময়ে ২৫টি গাড়ি, ৩০ জন দাসী সর্বদা নিয়োজিত ছিল। শেষ জীবনে এসে তিনিই বেঁচে ছিলেন গ্রামবাসীর দয়া দাক্ষিণ্যে। বছর দেড়েক আগে মৃত্যু হয় ওড়িশার ওই রাজার। যাঁর প্রথম জীবন কেটেছিল অতল আমোদ প্রমোদ বিলাসব্যসনে। তবে শেষ জীবনে ভরসা ছিল গ্রামবাসীদের দেওয়া চাল ডাল।

ওই রাজার নাম ব্রজরাজ ক্ষত্রিয় বীরবর চমুপতি সিং মহাপাত্র। ব্রিটিশ ভারতের ওড়িশার রাজ্য স্টেট তিগিরিয়ায় ১৯২১ সালে জন্মগ্রহণ করেন। কলিঙ্গ থেকে ওড়িশায় পরিবর্তিত পর্বে টিকে ছিল ২৬ টি প্রিন্সলি স্টেট। এর মধ্যে সব থেকে ছোট তিগিরিয়া।

১২৪৫ খ্রিস্টাব্দে রাজস্থানের সোম বংশীয় শাসকদের একটি শাখা এসেছিল ওড়িশায়। প্রতিষ্ঠা করেছিল টুং রাজবংশ। প্রথমে পুরীর রাজার অমাত্য‚ পরে তিগিরিয়া স্টেটের শাসক হয়ে ওঠেন তাঁরা। সেই বংশেই জন্ম রাজা ব্রজরাজের। ভারতবর্ষে রাজতন্ত্র লোপ পাওয়ার আগে তিগিরিয়ার শেষ নৃপতি। তাঁর সেবায় অপেক্ষা করত ৩০ জন দাসী। দাঁড়িয়ে থাকত ২৫ টি বিলাসবহুল গাড়ি।

শোনপুরের রাজকন্যা রসমঞ্জরী দেবীর সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়েছিল। কিন্তু একসময় স্ত্রী‚ ছয় সন্তান সবাই একে একে নিজেদের জীবন থেকে বিছিন্ন করে তাঁকে। বিয়ে ভাঙার পরে রসমঞ্জরী রাজনীতিতে এসে হয়ে যান বিধায়ক। ব্রজরাজ ডুবে যান নিদারুণ দারিদ্র্যে।

স্বাধীনতার পরে ভরসা ছিল বার্ষিক ভাতা। যিনি একসময় অনায়াসে মেরেছেন ১৩ টা বাঘ ও ২৮ টা লেপার্ড‚ সেই বারুদের গন্ধমাখা হাত পাততে হতো সরকারি দরবারে। সামান্য কিছু টাকার জন্য। মাসে এক হাজারেরও কম টাকা।

অভাবে জেরবার হয়ে ১৯৬০ সালে বিক্রি করে দিলেন প্রাসাদ। তারপর সন্তানদের নিয়ে চলে গেলেন স্ত্রীও। ১৯৭৫ সালে বন্ধ হয়ে গেল সরকারি ভাতা। এরপর থেকে বেঁচে ছিলেন গ্রামবাসীদের দয়া-দাক্ষিণ্যে। মাটির বাড়িতে অ্যাসবেস্টাস। অতীতের প্রজাদের দেওয়া ভাত ডাল সামনের থালায়। মিটত রাজার ক্ষুণ্ণিবৃত্তি।

চরম অর্থকষ্টে রোগশয্যায় কেটেছিল শেষ কটা দিন। ২০১৫ সালের নভেম্বর মাসে প্রয়াত হন রাজা থেকে ফকির হওয়া ব্রজরাজ। তারপরে অভিষেক হয় তাঁর বড় ছেলে বীরপ্রতাপ মহাপাত্রর। শতাব্দী প্রাচীন রীতি মেনে হয় অভিষেক। কিন্তু কোথায় সিংহাসন‚ কোথায় মুকুট ? কেউ জানে না।

Bootstrap Image Preview