নিজের কিডনি বিক্রি করে টাকা দিয়ে বন্ধুর স্ত্রীর চিকিৎসা করালেন যাবজ্জীবন সাজা ভোগ করা কয়েদি সুকুমারন। হত্যাকাণ্ডের মতো পাপের প্রায়শ্চিত্ত করতেই নাকি এ কাজটি করেছেন ভারতের কেরালার এ বাসিন্দা।
ভারতীয় গণমাধ্যমসূত্রে জানা যায়, ২০০৭ সালের দিকে মোবাইলের টাওয়ার বসানোকে কেন্দ্র করে রাগের মাথায় নিজের চাচাকে খুন করেন সুকুমারন। এ ঘটনায় অনুতপ্ত হয়ে নিজেই থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করেন। যাবজ্জীবন সাজা হয় তার। এরপর থেকেই কৃতকর্মের প্রায়শ্চিত্ত করার চিন্তা করতেন।
এ ব্যাপারে সুকুমার বলেন, প্রতিনিয়ত ভাবতাম কি করলে কৃতকর্মের প্রায়শ্চিত্ত করা যাবে। হঠাৎ একদিন খবরের কাগজে এক দম্পতির কিডনি দানের কথা পড়ে নিজের একটি কিডনি দান করে পাপের প্রায়শ্চিত্ত করার জন্য মন স্থির করি। সে ইচ্ছার কথা জানিয়ে জেল কর্তৃপক্ষতে চিঠিও লিখি। কিন্তু আইনগত কারণে কোনো বন্দি এভাবে কিডনী দান করতে পারে না জানিয়ে প্রত্যুত্তর পাঠান জেল কর্তৃপক্ষ। পরে তৎকালীন কেরালার মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখি।
এদিকে সুকুমারণের এমন ইচ্ছাকে সম্মান জানিয়ে ২০১৭ সালে জেল থেকে মুক্তি দেয়া হয় তাকে। ছাড়া পেয়েই সুকুমারন স্থানীয় ওই মেডিক্যাল ইনফরমেশন সেন্টারের সঙ্গে যোগাযোগ করে কিডনির সমস্যায় ভোগা ২১ বছরের এক যুবককে নিজের কিডনি দেন। তবে এজন্যে তাকে মূল্য পরিশোধ করে ওই যুবক।
সুকুমারণ জানান, জেলে থাকাকালীন এক বন্দির সঙ্গে বন্ধুত্ব হয়েছিল তার। সে বন্ধুর খোঁজে গেলে তিনি জানতে পারেন বন্ধুটি মারা গেছেন এবং বন্ধুর স্ত্রী হাসপাতালে মুমূর্ষু অবস্থায় আছেন। অর্থাভাবে চিকিৎসা করাতে পারছেন না এ নারী। এসব জেনে সঙ্গে সঙ্গে নিজের কিডনি বিক্রির টাকায় সুকুমারণ বন্ধুর স্ত্রীর চিকিৎসা করান।
ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছে, এক সন্তানের জননী বন্ধুর সেই স্ত্রীকেই বিয়ে করতে যাচ্ছেন সুকুমারণ।