৩২ বছরের সাধনায় পবিত্র কোরআন লিপিবদ্ধ করে মহান এক দৃষ্টান্ত উপস্থাপন করেছেন পাকিস্তানের পাঞ্জাবপ্রদেশের গুজরাট অঞ্চলের অধিবাসী নাসিমা আখতার (৩০) নামে এক নারী।
তার নিজ হাতে লিপিবদ্ধ এ পবিত্র কোরআন শরিফ প্রথমে পাকিস্তানের শীর্ষস্থানীয় ওলামা-মাশায়েখ ও আরবি ভাষাবিদদের দিয়ে যাচাই-বাছাই করানো হয়েছে। নির্ভুল এ ঐশি গ্রন্থটি গত ২১ সেপ্টেম্বর মসজিদে নববীর প্রাঙ্গণে অবস্থিত আল কোরআন মিউজিয়ামে উপহার দিয়েছেন নাসিমা আখতার।
১৯৮৭ সালের আগস্ট মাসে ৩০ বছর বয়সে প্রথম এ পুণ্যের কাজে হাত দেন বলে জানিয়েছেন নাসিমা।
পাকিস্তানি সংবাদ মাধ্যমকে দেয়া সাক্ষাৎকারে নাসিমা বলেন, প্রতি রাতের শেষ তৃতীয়াংশে তাহাজ্জুত নামাজ পড়তে উঠে কোরআনের আয়াত লিখতে বসতাম।
এ ছাড়া দৈনন্দিন কাজ শেষ করে জোহর ও আছরের মধ্যবর্তী অবসর সময়ে পূর্ণাঙ্গ পবিত্রতা ও মনোযোগ দিয়ে প্রতিটি আয়াত লিখতাম। এভাবেই ৩২ বছরের দীর্ঘ শ্রম এ সাধনার পর গত জানুয়ারিতে তার আল কোরআন লিপিবদ্ধের যাবতীয় কাজ সম্পন্ন হয়।
টানা ১৫ বছরের প্রায় প্রতিটি দিনই কলম দিয়ে মখমলের কাপড়ের ওপর কোরআনের আয়াত লিখে গেছেন নাসিমা। এর পর ১৭ বছর কোরআনের আয়াত লিখিত কাপড়গুলো সযত্নে সেলাই করেছেন।
আল কোরআন মিউজিয়ামের মুখপাত্র ও জনসংযোগ ব্যবস্থাপক আবদুর রহমান আল বান্না বলেন, বৃহৎ এ কোরআনটি দেখলেই বোঝা যায়, তিনি এর পেছনে কী পরিমাণ শ্রম-সাধনা ও সময় ব্যয় করেছেন।
নাসিমা আখতারের লিখিত আল কোরআনের বর্ণনা দিয়েছেন আবদুর রহমান আল বান্না বলেন, কোরআনটির দৈর্ঘ্য ৫৬ সেন্টিমিটার, প্রস্থ ৩৮ সেন্টিমিটার। এর ওজন ৫৫ কেজি।
মখমলের কাপড়ে লিখিত কোরআন শরিফটির দৈর্ঘ্য ৩০০ মিটার। ২৫ হাজার মিটার কাপড় ব্যবহার করা হয়েছে এতে।
এ কোরআনকে ১০ খণ্ডে এবং প্রতি খণ্ডে তিন পারা করে বিন্যাস করা হয়েছে। ২৪ পৃষ্ঠা করে একটি পারা শেষ করেছেন নাসিমা। তবে শেষ পারাটি লিখতে ব্যয় হয়েছে ২৮ পৃষ্ঠা। প্রতি পৃষ্ঠায় ১৫ লাইন করে কোরআনের আয়াত রয়েছে।