যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্টের বিচারক হিসেবে শপথ নিলেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মনোনীত প্রার্থী ব্রেট কাভানাহ। সিনেটের ৯৯ জন ভোটারের মধ্যে তার পক্ষে ভোট দিয়েছেন ৫০ জন ও বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন ৪৮জন। ভোটদানের অনুপস্থিত ছিলেন একজন খবর -বিবিসি ও রয়টার্স।
যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্টের বিচারক হিসেবে মনোনয়ন পাওয়ার পর থেকেই কাভানাহর বিরুদ্ধে তিন নারী তার বিরুদ্ধে একের পর এক যৌন হামলার অভিযোগ তুলেছে। তিনি সকল অভিযোগই অস্বীকার করেছেন। তবে পুরো দেশজুড়ে এ নিয়ে ব্যাপক বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে।
আগামী নভেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যবর্তী নির্বাচন। এর আগ দিয়ে এরকম জয় ট্রাম্পের পক্ষে কাজ করবে। ভোটের আগ দিয়ে হাজার হাজার মানুষ কাভানাহর মনোনয়নের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছে।
স্থানীয় সময় গতকাল শনিবার (বাংলাদেশ সময় রবিবার) একটি ব্যক্তিগত অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে কাভানাহর শপথ গ্রহণ সম্পন্ন হয়। তাকে শপথ পাঠ করান প্রধান বিচারপতি জন রবার্টস ও অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অ্যান্থনি কেনেডি। কেনেডির জায়গায় নতুন বিচারক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন কাভানাহ।
এদিকে, কাভানাহর মনোনয়ন নিশ্চিত করায় সিনেটকে অভিনন্দন জানিয়েছেন ট্রাম্প। এক টুইটে তিনি লিখেন, আমি মার্কিন সিনেটকে যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্টের বিচারক হিসেবে আমাদের অসাধারণ মনোনীত প্রার্থী, ব্রেট কাভানাহর মনোনয়ন নিশ্চিত করায় প্রশংসা ও অভিনন্দন জানাচ্ছি। আমি পরবর্তীতে তার নিয়োগপত্রে স্বাক্ষর করবো। আর তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে শপথ গ্রহণ করবেন। খুবই উত্তেজনাপূর্ণ!
সিনেটে রিপাবলিকানরা ৫১ আসন নিয় সংখ্যাগরিষ্ঠ দল। অন্যদিকে ডেমোক্র্যাটদের দখনে আছে ৪৯ আসন। ভোট মূলত দল-ভিত্তিকই হয়েছে। তবে পার্থক্য ছিল মাত্র দুই ভোটের। প্রত্যেক দল থেকেই একজন করে ভিন্নমতপোষণকারী সিনেটর ছিলেন।
রিপাবলিকানদের মধ্যে থেকে সিনেটর লিসা মুরওকোওস্কি কাভানাহর বিপক্ষে ভোট দেন ও ডেমোক্র্যাট জো মানচিন কাভানাহর পক্ষে ভোট দেন। এছাড়া নিজের মেয়ের বিয়েতে উপস্থিত থাকার কারণে ভোটদানে অনুপস্থিত ছিলেন রিপাবলিকান স্টিভ ডেইনস।
ধারণা করা হচ্ছে, দেশটির সর্বোচ্চ আদালতে কনজারভেটিভদের প্রভাব বৃদ্ধি করবেন কাভানাহ। গর্ভপাত, অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ, অভিবাসন, তৃতীয় লিঙ্গের অধিকার ও ব্যবসা নীতির মতন বিষয়গুলোতে আইন প্রণয়নে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা থাকে সুপ্রিম কোর্টেরই।
এতদিন সুপ্রিম কোর্টে ডেমোক্র্যাটদের আধিপত্য বজায় ছিল। কিন্তু এখন তা রিপাবলিকানদের হাতে চলে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
কাভানাহর বিরুদ্ধে একাধিক যৌন হামলার অভিযোগ রয়েছে। এর মধ্যে ক্যালিফোর্নিয়ার এক বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাপিকা ক্রিস্টিন ব্লেজি ফোর্ড অভিযোগ করেছেন, ১৯৮২ সালে এক পার্টিতে মদপান করে তার ওপর যৌন হামলা চালিয়েছিলেন কাভানাহ। তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করেন কাভানাহ। গত সপ্তাহে এ বিষয়ে সিনেটের জুডিশিয়ারি প্যানেলের সামনে সাক্ষ্য দেন তারা।
সাক্ষ্যদানের পর অভিযোগটি নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয় এফবিআইকে। পাঁচ দিনব্যাপি তদন্ত শেষে নির্দোষ প্রমাণিত হন কাভানাহ। তবে ডেমোক্র্যাটরা অভিযোগ করেছেন, হোয়াইট হাউজ তদন্তের সময়সীমা সীমিত করে দেওয়ায় তদন্তটি অসম্পূর্ণ ছিল।
ফোর্ড ছাড়া ডেবোরাহ রামিরেজ ও জুলি সুয়েটনিকও কাভানাহর বিরুদ্ধে যৌন হামলার অভিযোগ তুলেছেন। তবে কাভানাহ সকল অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।