গাড়ি করে এলাকায় টহল দিচ্ছিলেন স্থানীয় থানার পুলিশ কর্মকর্তারা। খবর পেলেন থানার অদূরেই রাস্তার ধারে পড়ে আছেন এক নারী। গাড়ি ঘুরিয়ে ওই কর্মকর্তারা সেখানে পৌঁছে দেখলেন, প্রসব যন্ত্রণায় কাতর এক নারী ফুটপাতে শুয়ে আছেন।
ঘটনার গুরুত্ব বুঝে তারা থানায় খবর দিলেন নারী পুলিশকর্মী পাঠানোর জন্য। এর মধ্যে হাজির পুলিশের ভ্যান। নারী পুলিশকর্মী এবং স্থানীয় বাসিন্দারা প্রসব বেদনায় কাতর ওই নারীকে ভ্যানে তুললে সেখানেই পুত্রসন্তান প্রসব করেন তিনি। পরে পুলিশের ওই গাড়িতে করেই মা ও শিশুকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ভর্তি করানো হয়।
ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের ওয়াটগঞ্জ থানা এলাকার ওয়াটগঞ্জ স্ট্রিট বকুলতলায়। ওয়াটগঞ্জ থানার গাড়িতেই সন্তান প্রসব করেন ফরিদা খাতুন নামে ওই নারী। সদ্যোজাত সেই শিশুপুত্র এখন মায়ের সঙ্গেই ভর্তি এসএসকেএম হাসপাতালে। দু’জনেরই শারীরিক অবস্থা ভালো বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
অসহায় এক নারীর সন্তান প্রসবে সহায়তা করতে পারায় খুশির হাওয়া ওয়াটগঞ্জ থানার পুলিশকর্মীদের মধ্যেও। তাদের একজন জানান, চোর-ডাকাত ধরা থেকে পরীক্ষা কেন্দ্রে পরীক্ষার্থীকে পৌঁছে দেওয়ার মতো ঘটনার সাক্ষী আগে থেকেই ছিলাম আমরা। কিন্তু সকলে মিলে ঝাঁপিয়ে পড়ে এক প্রসূতিকে সাহায্য করার এই ঘটনা দীর্ঘদিন মনে থাকবে।
প্রাথমিক ভাবে পুলিশ জানিয়েছে, বুধবার রাতে ওয়াটগঞ্জ থানার কর্মকর্তারা এলাকায় টহল দিচ্ছিলেন। সেই সময় তারা খবর পান, ওই নারী রাস্তায় পড়ে কাতরাচ্ছেন। সেখানে গিয়ে তারা দেখেন, ফুটপাতের ধারে ফরিদা শুয়ে কাতরাচ্ছেন। তাকে ঘিরে রেখেছেন এলাকার বাসিন্দারা।
ওই নারীর স্বামী পেশায় ভ্যানচালক মুহাম্মদ আশরাফ খান পুলিশের কাছে কৃতজ্ঞ। গার্ডেনরিচ রোডের চার নম্বর ঝুপড়ির বাসিন্দা ওই যুবক পুলিশকে জানিয়েছেন, আজ, শনিবার স্ত্রীকে নিয়ে চিকিৎসকদের কাছে যাওয়ার কথা ছিল তার। কিন্তু তার আগে এ রকম ঘটে যেতে পারে, তা ভাবেননি। ওই সময় তার স্ত্রী দোকানে জিনিস কিনতে বেরিয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
কয়েক জন নারী ফরিদাকে একটি কাপড় দিয়ে ঘিরে রেখেছিলেন। এর পরেই নারী পুলিশকর্মীরা এলে তাকে ভ্যানে তোলা হয়। এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য গাড়িতে তুললে ফরিদা সেখানেই সন্তানের জন্ম দেন। এর মধ্যেই অন্য এক কর্মকর্তা এলাকার এক ধাত্রী মাকে নিয়ে সেখানে আসেন। তিনি মায়ের নাড়ি কেটে দেন।