Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৯ সোমবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১৬ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

নির্বাচনে হেরেও ক্ষমতা ছাড়তে নারাজ ইয়ামিন

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৫ অক্টোবর ২০১৮, ০২:১৮ PM
আপডেট: ০৫ অক্টোবর ২০১৮, ০২:১৮ PM

bdmorning Image Preview


নির্বাচনে হেরেও ক্ষমতা ছাড়তে নারাজ মালদ্বীপের সাবেক প্রেসিডেন্ট আবদুল্লাহ ইয়ামিন। নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম মোহাম্মদ সোলিহকে অযোগ্য ঘোষণা করতে সব ধরনের কৌশল কাজে লাগাচ্ছেন তিনি। ইতোমধ্যে সোলিহকে প্রেসিডেন্ট না মানতে একটি আইনি জোটও গঠন করেছেন।

তাদের দিয়েই সোলিহবিরোধী বার্তা রাটাচ্ছেন ইয়ামিন। ইতিমধ্যে ক্ষমতাসীন প্রোগ্রেসিভ পার্টি অব মালদ্বীপের (পিপিএম) এমপিরা অভিযোগ তুলেছেন, দিল্লিঘেঁষা সোলিহকে জেতাতে নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করেছে ভারত।

২৩ সেপ্টেম্বরের নির্বাচনে হার মেনেও ক্ষমতার গদি ছাড়তে চাইছেন না চীনপন্থী ইয়ামিন। এদিকে আগামী ১ নভেম্বর দেশে ফিরছেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন নির্বাসিত সাবেক প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ নাশিদ।

গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ক্ষমতায় এলেও গত পাঁচ বছরে গণতন্ত্রের নামে একনায়কতন্ত্রের গোঁয়ার্তুমি দেখিয়েছেন ইয়ামিন। ধ্বংস করেছেন গণতান্ত্রিক সব প্রতিষ্ঠান। গণমাধ্যম ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা হরণ করেছেন। বিরোধী ও প্রতিদ্বন্দ্বীদের ওপর চালিয়েছেন অচিন্তনীয় দমন-পীড়ন।

নির্বাচনে ৫৮ শতাংশ ভোট পেয়ে জয়ী হন সোলিহ। ৪২ শতাংশ ভোট পান ইয়ামিন। হেরেও আগের সেই গোঁয়ার্তুমি এক রতিও কমেনি। নতুন প্রেসিডেন্ট সোলিহের বারবার আবেদন সত্ত্বেও নামিদামি রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তি দিতে অযথা ঢিলেমি করছেন তিনি। চাপে পড়ে ইতিমধ্যে নিজের সৎভাই সাবেক প্রেসিডেন্ট মামুন আবদুল গাইয়ুমকে গত সপ্তাহে মুক্তি দিয়েছেন। তবে এবার নতুন কৌশল হাতে নিয়েছেন ইয়ামিন।

আইনি প্রক্রিয়ায় সোলিহকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে অযোগ্য ঘোষণা করতে নতুন একটি বিধি পাস করেছে ইয়ামিন সরকার। ইয়ামিনের মুখপাত্র ইব্রাহিম মুয়াজ আলী এ বিল পাস করার প্রস্তাব তোলেন। মঙ্গলবার রাতে এটি তড়িঘড়ি করে পাসও হয়ে গেছে।

কেন এমন আইন পাস করেছে সরকার এমন প্রশ্নের জবাবে মুয়াজ বলেন, ‘মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট হিসেবে আমরা সোলিহকে যোগ্য মনে করছি না। এজন্য আমরা আমাদের নিজেদের অধিকার রক্ষায় সোচ্চার হয়েছি।’

এ আইনের ব্যাপারে জ্ঞাত আছেন ক্ষমতাসীন দলের এমপি ড. আবদুল্লাহ খলিল। বুধবার রাতে তিনি বলেন, বিরোধী দলে মালদ্বীভিয়ান ডেমোক্রেটিক পার্টিকে (এমডিপি) ক্ষমতায় আনতে নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করেছে ভারত। ২০০৮ সালেও কারচুপির মাধ্যমে ক্ষমতায় বসেছিল দলটি। তিনি বলেন, ‘যদি এ কারচুপি প্রকাশ পায়, তবে হ্যাশট্যাগ ভোটথিভস (ভোট চুরি) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক জনপ্রিয় হবে। প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে হাত মিলিয়ে ভোট চুরিকে বৈধ করে জনগণের অধিকারের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে এমডিপি।’

ভোট কারচুপির বিষয়ে নির্বাচন কমিশন প্রধান আহমেদ শরিফকে তদন্তের জন্য চাপ দিচ্ছে ইয়ামিন সরকার। আগামী ১৭ নভেম্বর ক্ষমতার মেয়াদ শেষ হচ্ছে ইয়ামিনের। এ সময়ের মধ্যে ক্ষমতা ধরে রাখতে সব ধরনের চেষ্টাই করে যাচ্ছেন তিনি।

এদিকে হঠাৎই দেশে ফেরার ঘোষণা দিয়েছেন নির্বাসিত সাবেক প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ নাশিদ। বুধবার এক টুইট বার্তায় এ কথা জানিয়েছেন তিনি। নাশিদ লেখেন, ‘যদি আমরা এই মুহূর্তে মালদ্বীপের সুপ্রিমকোর্টের সঙ্গে আমার মুক্তির জন্য একটি চমৎকার ব্যবস্থা খুঁজে বের করার চেষ্টা করি, তাহলে মালদ্বীপের বিচার বিভাগীয় সংস্কারের জন্য আমাদের উচ্চাকাঙ্ক্ষা আর অগ্রসর হবে না। ১ নভেম্বর দেশে ফিরছি।’

গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত মালদ্বীপের প্রথম প্রেসিডেন্ট নাশিদকে ২০১৫ সালে দেশটির আদালত ১৩ বছরের কারাদণ্ড দেন। ২০১২ সালে তখনকার ফৌজদারি আদালতের প্রধান বিচারক আবদুল্লাহ মোহাম্মদকে ক্ষমতার অপব্যবহার করে গ্রেফতারের নির্দেশ দেয়ার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন নাশিদ। কারাদণ্ড মাথায় নিয়ে ২০১৬ সালে চিকিৎসার জন্য তিনি যুক্তরাজ্যে যাওয়ার অনুমতি পেয়েছিলেন। সেখানে গিয়ে নাশিদ যুক্তরাজ্যে রাজনৈতিক আশ্রয় নেন। বর্তমানে তিনি শ্রীলংকায় আছেন।

Bootstrap Image Preview