Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৩ শুক্রবার, মে ২০২৪ | ২০ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

আবারও মিলিত হলো তারা

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৩ অক্টোবর ২০১৮, ১০:২৩ AM
আপডেট: ০৩ অক্টোবর ২০১৮, ১০:২৩ AM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত ছবি


সন্ধ্যা নামছে একটু পরেই পালুর সৈকতে শুরু হবে সঙ্গীত উৎসব উৎসব ঘিরে চলছে নানা আয়োজন অতিথিদের নাম নিবন্ধন করছেন ডিউই (বয়স আনুমানিক ২৫)

কালো হিজাব আর চোখে চশমা তার কোনো দিকে মন নেই একাগ্রচিত্তে নিজের কাজ করছেন এর মধ্যে আচমকাই সেই মহাদুর্যোগের বার্তা দিয়ে গেল প্রকৃতি রিখটার স্কেলে . মাত্রা তুলে ভয়াবহ ভূমিকম্প নাড়িয়ে দিয়ে গেল পালু দ্বীপ

প্রবল ধাক্কা সামলাতে না সামলাতেই কয়েক মিটার উঁচু সুনামির দেয়াল আছড়ে পড়ল ডিউইয়ের ওপর সবকিছুর সঙ্গে মুহূর্তেই ভাসিয়ে নিয়ে গেল তাকে

তখন শহরের আরেক প্রান্তে রয়েছেন স্বামী আজওয়ান (৩৮) তার সঙ্গে তাদের একমাত্র মেয়ে ভূমিকম্পের বড় আঘাত সত্ত্বেও মেয়েসহ কোনো মতে বেঁচে বাড়ি ফিরেছেন তিনি

রাত গভীর হতে শুরু করলেও ফেরেননি স্ত্রী ডিউই তার কোনো হদিস নেই ততক্ষণে চার দিকে শুরু হয়েছে উদ্ধার তৎপরতা হাসপাতালগুলো ভরে গেছে হতাহত মানুষে

ভীতি আর শঙ্কা নিয়ে রাতেই স্ত্রীর খোঁজ শুরু করেন আজওয়ান খুঁজতে খুঁজতে শুক্রবার রাত গেল, শনিবারও গেল রবিবার ঠিক যখন তার আশা একেবারে ছেড়েই দিয়েছেন, তখনই ফের জ্বলে ওঠে আশার প্রদীপ

আবারও বাহুডোরে আবদ্ধ হন দুজন ভূমিকম্প আর সুনামির আঘাতে পালু শহর তখন ধ্বংসস্তূপ আর মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে চার দিকে ধ্বংসের চিহ্ন স্থল থেকে শুরু করে সাগরের জলে শুধু লাশ আর লাশ সেই ধ্বংসস্তূপের মধ্য থেকে প্রিয় স্ত্রীর ফিরে আসার সেই বিরল গল্পই মঙ্গলবার এএফপির সাক্ষাৎকারে বিশ্ববাসীকে জানিয়েছে আজওয়ান ডিউই দম্পতি

কথা বলতে গিয়ে বারবার আবেগাপ্লুত হয়ে পড়ছিলেন সরকারি কর্মকর্তা আজওয়ান চশমার ফাঁকে অশ্রু গোপন করে তিনি বলেন, ‘সে যখন ফিরে এলো, আমি খুব খুশি, আর আবেগাপ্লুত হয়ে পড়ি

আল্লাহর শুকরিয়া, আমি তাকে আবার ফিরে পেয়েছিডিউই বলেন, আল্লাহর শুকরিয়া, তিনি আমাকে আরেকবার বাঁচার সুযোগ দিয়েছেন আমার এখনও বিশ্বাস হচ্ছে না যে, আমি বেঁচে আছি

সেদিনের ভয়াল স্মৃতি স্মরণ করে ডিউই বলেন, ‘হঠাৎই একটা ঢেউ আমাকে জোরে আঘাত করে আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেলি যখন জ্ঞান ফিরে এলো, দেখি, আমি হোটেলের সামনে তখন চিৎকার শুনলাম, সুনামি! সুনামি! তিনি জানান, তার কাপড় ছিঁড়ে যায় আঘাত লেগে শরীরের বিভিন্ন স্থানে ক্ষত-বিক্ষত হয়ে যায় এরপর ময়লা বোঝাই একটি উঁচু রাস্তার ওপর ওঠেন তিনি সারা রাত সেখানেই কাটে তার

তিনি বলেন, কোনো খাবার নেই, পানি নেই মাইকে আমাদের বলা হল, পরিস্থিতি নিরাপদ না পর্যন্ত ওখানেই অবস্থান করতে তখনও থেকে থেকে ভূমিকম্পের পরাঘাত আসছে এদিকে রাত শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে খোঁজ শুরু করেছেন আজওয়ান শহরের চিকিৎসা কেন্দ্রগুলোতে লাশ রাখার ঘরগুলোতে খুঁজতে থাকেন তিনি

Bootstrap Image Preview