ব্রিটিশ শাসন অবসানের পর থেকেই কাশ্মীর ইস্যুতে উত্তপ্ত ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক। ১৯৪৭ সালের পর এ পর্যন্ত কাশ্মীরকে কেন্দ্র করে কয়েকবার যুদ্ধে জড়িয়েছে দেশ দু'টি। এবার জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পরেছে ভারত-পাকিস্তান।পাল্টাপাল্টি বক্তব্যে শনিবার উত্তপ্ত হয়ে ওঠে জাতিসংঘের ৭৩ তম সাধারণ অধিবেশন। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ বলেন, নিরীহ মানুষের রক্ত অস্বীকার করে সন্ত্রাসীদের গুণকীর্তন করছে পাকিস্তান। জবাবে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশি বলেন, পাকিস্তানে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় পৃষ্ঠপোষকতা করছে ভারত।
শনিবার জাতিসংঘ ৭৩তম সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে দেয়া ভাষণে সন্ত্রাসীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয়ার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। বলেন, ওসামা বিন লাদেনকে পাকিস্তানে পাওয়া গেছে। ২০০৮ সালে মুম্বাই হামলার মূলহোতারাও পাকিস্তানে মুক্তভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক বাতিলের জন্য ইসলামাবাদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডকেই দায়ী করেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘যুক্তিসঙ্গত উপায়ে আলোচনার মাধ্যমে জটিল ও বিতর্কিত বিষয়গুলোর সমাধান সম্ভব বলে আমরা বিশ্বাস করি। এ কারণে পাকিস্তানের সঙ্গে বহুবার আলোচনার উদ্যোগ নিয়েছি আমরা। পাকিস্তানের আচরণের কারণেই আলোচনা থেমে যায়। ভারতে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন দল সরকার গঠন করেছে। প্রত্যেকেই শান্তি প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করেছে। এখন শান্তি আলোচনা ভেস্তে যাওয়ার জন্য আমাদের দায়ী করা হচ্ছে! এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা অপবাদ।’
এর কয়েক ঘণ্টা পরই সাধারণ পরিষদে ভাষণ দেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশি। নয়াদিল্লির বিরুদ্ধে পাল্টা মিথ্যাচারের অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, প্রতিবারই ভিত্তিহীন অভিযোগে আলোচনা বাতিল করেছে ভারত। তারা শান্তির চেয়ে রাজনীতিকে বেশি প্রাধান্য দিচ্ছে বলেও দাবি করেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘পাকিস্তান ও ভারতের মধ্য স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য বাস্তবায়নে অন্যতম বাধা বিতর্কিত কাশ্মীর ইস্যু। ভারত ধারাবাহিকভাবে কাশ্মীর সীমান্তে যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে যাচ্ছে। তারা যদি সীমান্ত অতিক্রম করে বা যুদ্ধ চাপিয়ে দেয়, তাহলে কঠোর এবং সমুচিত জবাব দেয়া হবে।’
ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে ৫ লাখ সেনা মোতায়েন রেখেছে নয়াদিল্লি। স্বাধীন কাশ্মীর অথবা পাকিস্তানের সঙ্গে একীভূত হওয়ার দাবিতে সেখানে ভারত শাসনবিরোধী সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে স্থানীয় গোষ্ঠীগুলো।
নয়াদিল্লির অভিযোগ, সশস্ত্রগোষ্ঠীগুলোকে সহায়তা দিয়ে শান্তি ব্যাহত করছে পাকিস্তান। ইসলামাবাদ বলছে, বৈষম্যমূলক আচরণ, অত্যাধুনিক মরণাস্ত্রে সজ্জিত সামরিক বাহিনী দিয়ে অব্যাহতভাবে আঞ্চলিক অস্থিতিশীলতা বাড়িয়ে যাচ্ছে ভারত।