শুরু থেকেই ডোনাল্ড ট্রাম্প বেকায়দায় ছিলেন।ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ সহযোগীরা তাঁকে মুখে কুলুপ এঁটে থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন। কিন্তু তা না মানায় প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর এখনই তিনি সবচেয়ে খারাপ সময় পার করছেন। কোণঠাসা হয়ে পড়ছেন তিনি। বিষয়টি ট্রাম্প নিজের কর্মকাণ্ড দিয়ে সবাইকে দেখিয়েও দিচ্ছেন।
দায়িত্বশীল সাংবাদিকেরা বলছেন, ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ সহযোগীরা তাঁদের কাছে বলেছেন, ট্রাম্প এখন বুঝতে পারছেন তিনি একা হয়ে পড়েছেন; ক্রমাগত নিঃসঙ্গ হয়ে পড়ছেন।
ট্রাম্পের মধ্যে নিঃসঙ্গতার অনুভূতি আসলেও তিনি বন্ধুত্ব চান না। চান নিঃশর্ত আনুগত্য। তাঁর সঙ্গে কাজ করেন, এমন কেউই নিজেকে নিরাপদ মনে করেন না। সম্ভবত ট্রাম্পের মেয়ে ইভাঙ্কা ট্রাম্প বাদে আর কেউই বরখাস্ত হওয়ার ভীতি ছাড়া তাঁর সঙ্গে কাজ করতে পারেন না। কারণ, ইতিমধ্যে ঘনিষ্ঠ অনেককেই তিনি অপমানজনকভাবে বিদায় করেছেন। ট্রাম্পের এই অন্তর্দহন শুরু হয়েছে এমন একটি সময়, যখন বড্ড দেরি হয়ে গেছে।
২০১৬ সালের নির্বাচনে রুশ হস্তক্ষেপের অভিযোগ তদন্তে ট্রাম্প তাঁর অ্যাটর্নি জেনারেল জেফ সেশনসকে বশীভূত করতে পারেননি। এ নিয়ে তাঁর মনোযন্ত্রণা আছে। তবে এর চেয়েও বড় সমস্যা বাধিয়েছেন ট্রাম্পের সাবেক নির্বাচন প্রচার কমিটির চেয়ারম্যান পল ম্যানাফোর্ট। এই ম্যানাফোর্ট জালিয়াতি ও শুল্ক এড়ানোর মামলায় শুধু যে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন, তা-ই নয়, তিনি রুশ হস্তক্ষেপের তদন্তে প্রধান তদন্তকারী রবার্ট ম্যুলারকে সব ধরনের সহায়তা দিতে রাজি হয়েছেন। ম্যানাফোর্ট মুখ খুললে স্বয়ং ট্রাম্প ফেঁসে যেতে পারেন।
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ঘনিষ্ঠজনদের মধ্যে কার কার সঙ্গে ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠজনদের যোগাযোগ ছিল, তা তিনি ম্যুলারের তদন্ত কর্মকর্তাদের জানিয়ে দেবেন বলে মনে করা হচ্ছে। এটি ট্রাম্পের জন্য মহা উদ্বেগের বিষয়। এর চেয়েও দুশ্চিন্তার বিষয় হলো, ট্রাম্পের দীর্ঘদিনের অ্যাটর্নি মাইকেল কোহেনও তদন্ত কর্মকর্তাদের সব ধরনের সহযোগিতা করতে রাজি হয়েছেন। কোহেন ট্রাম্পের আইনজীবী হিসেবে তাঁর ব্যবসা সম্পর্কে অনেক কিছু জানেন।
তিনি ইতিমধ্যেই বলেছেন, ট্রাম্প এমন দুজন নারীর সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করেছিলেন, যাঁরা নির্বাচনের আগে এ নিয়ে মুখ খুলতে চেয়েছিলেন এবং তাঁদের মুখ বন্ধ করতে ট্রাম্প তাঁদের বিপুল পরিমাণ অর্থ দিয়েছেন। কোহেন বলেছেন, এই অর্থ পরিশোধের যাবতীয় আয়োজন তাঁর হাত দিয়েই হয়েছে। অবশ্য এখন পর্যন্ত ট্রাম্প কোহেনের এই দাবি অস্বীকার করে আসছেন। ধারণা করা হচ্ছে, কোহেন তদন্ত দলকে ট্রাম্পের সম্পত্তি ও নারীসংশ্লিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়ে বসতে পারেন।