ইরানের দক্ষিণপশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ খুজিস্তানে সামরিক কুচকাওয়াজে হামলার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের মদদপুষ্ট একটি বিদেশি সরকারকে দায়ী করেছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভেদ জারিফ। তিনি বলেন, জনগণের সুরক্ষায় ইরান দ্রুত ও চূড়ান্তভাবে হামলার জবাব দেবে।
ইরানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় আহভাজ শহরে সামরিক বাহিনীর কুচকাওয়াজ চলাকালে সন্ত্রাসীদের হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে ১১ জন নিহত ও ৩০ জন আহত হয়েছেন। জাতীয় প্রতিরক্ষা সপ্তাহ উপলক্ষে এ প্যারেডের আয়োজন করা হয়েছিল।
২২ সেপ্টেম্বর, শনিবার ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা ইসলামিক রিপাবলিক নিউজ এজেন্সির (আইআরএনএ) বরাত দিয়ে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম ডন এ তথ্য জানিয়েছে।
হামলায় নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে সংবাদমাধ্যমগুলোতে বলা হয়েছে। আহতদের মধ্যে নারী ও শিশু রয়েছে।
প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, প্যারেড প্রাঙ্গণে ঢুকতে না পেরে সন্ত্রাসীরা দূর থেকে এলোপাতাড়ি গুলি চালায়। এ সময় সামরিক বাহিনীর কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানের জন্য স্থাপিত মঞ্চ লক্ষ্য করেও গুলি চালিয়েছে তারা।
টুইটারে এক পোস্টে জাভেদ জারিফ বলেন, আহভাজে হামলা চালাতে একটি বিদেশি সরকার সন্ত্রাসী সংগ্রহ, প্রশিক্ষণ, অস্ত্র ও অর্থ দিয়েছে।
তিনি বলেন, আঞ্চলিক সন্ত্রাসীদের পৃষ্ঠপোষক ও তাদের মার্কিন প্রভূ এ হামলার জন্য দায়ী।
সংবাদ সংস্থা ইরনা জানায়, দুই অস্ত্রধারী এ হামলা চালিয়েছেন। আহতদের মধ্যে এক নারী ও শিশু রয়েছে।
দেশটির আধা সরকারি ফারস নিউজ জানায়, বিপুল দর্শকদের ভিড়ে দুই ব্যক্তি এলোপাতাড়ি গুলি চালায়। পরে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের দিকে হামলার চেষ্টা চালালে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে তারা নিহত হন।
ইরানের অভিজাত বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর ঘনিষ্ঠ ফারস নিউজ জানায়, মোটরসাইকেলযোগে খাকি পোশাক পরা দুই ব্যক্তি এসে হামলা চালায়।
ইরাক-ইরান যুদ্ধের শুরুর দিনটির স্মরণে দেশটির বিভিন্ন শহরে এ কুচকাওয়াজ হচ্ছিল। ১৯৮০ সালে শুরু হয়ে পরবর্তী আট বছর প্রতিবেশী দেশ দুটির মধ্যে এ যুদ্ধ চলে।
ইরাকের নৃতাত্ত্বিক কুর্দিশ অঞ্চল বরাবর সামরিক টহলে কুরিশ বিদ্রোহীদের হামলা নিয়মিতই ঘটছে। তবে একটি বড় শহরে সামরিক কুচকাওয়াজকে লক্ষ্যবস্তু করে হামলা বিরল ঘটনা বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
ইরাক সীমান্ত বরাবর প্রদেশ খুজিস্থানে নৃতাত্ত্বিক আরব বসবাস করেন, যাদের অধিকাংশই সুন্নি মুসলমান। সাদ্দাম হোসেনের ইরাকের বিরুদ্ধে ইরানের যুদ্ধে এটি ছিল অন্যতম সংঘাতস্থল।
২০১৭ সালের ৭ জুন রাজধানী তেহরানের পার্লামেন্ট ভবনে ও দেশটির বিপ্লবী নেতা আয়াতুল্লাহ রুহুল্লা খোমিনির মাজারে হামলায় অন্তত ১৭জন নিহত ও বহু লোক আহত হয়েছিলেন।
পাশ্চাত্যের উদ্বেগ সত্ত্বেও ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি দেশের দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র সক্ষমতা বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তিনি বলেন, আমরা কখনোই নিজেদের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা হ্রাস করব না। দিনে দিনে তা আরও বৃদ্ধি করা হবে।